গণধর্ষণের শিকার তরুণীর মাথা মুড়িয়ে কালি মেখে উল্লাস


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


গণধর্ষণের শিকার তরুণীর মাথা মুড়িয়ে কালি মেখে উল্লাস

সম্প্রতি ভারতের পূর্ব দিল্লির কস্তুরবা নগরে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে অপহরণের পর গণধর্ষণের শিকার তরুণীর মাথা মুড়িয়ে কালি মেখে উল্লাস করার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও গণধর্ষণের পর ওই তরুণীকে মাথা মুড়িয়ে, মুখে কালি মাখিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁটানো হয়। 

দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন স্বাতী মালিওয়ালের টুইট করা ভিডিওতে এই ঘটনার কথা জানাজানি হয়।

স্বাতী দিল্লি পুলিশকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছিলেন। তার পরই এই গ্রেফতার। ধর্ষণে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বেআইনি মদ ও মাদকের কারবার সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ ছিল কিনা, তাও দিল্লি পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছে মহিলা কমিশন।

ওই ঘটনার ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জনের মধ্যে আট জন নারী এবং চার জন পুরুষ। বাকিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে দিল্লি পুলিশ। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন পূর্ব দিল্লির কস্তুরবা নগরে ওই তরুণীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ ও বেধড়ক মারধর করা হয়। তারপর তাকে জুতোর মালা পরিয়ে রাস্তায় জোর-জবরদস্তি হাঁটানোর অভিযোগ রয়েছে কয়েকজন নারীর বিরুদ্ধে। শুধু হাঁটানোই নয়, ওই সময় তরুণীর আশেপাশে থাকা নারীরা উল্লাসে চিৎকার করছিলেন, এমন ছবিও দেখা গেছে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে।

তবে গ্রেফতার হওয়া নারী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, ২০ বছর বয়সী ওই তরুণীর সঙ্গে এক যুবকের পারস্পরিক দ্বন্দ্বের মধ্যেই আত্মহত্যা করেন ওই যুবক। এরপর মৃত যুবকের কাকা তরুণীকে বাড়ি থেকে অপহরণ করেন। পরবর্তীতে ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়।

এদিকে যুবকের মৃত্যুর জন্য ওই তরুণীকেই দায়ী করে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন তার ওপর চড়াও হন মৃত যুবকের প্রতিবেশীরা। গণধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর মাথা মুড়িয়ে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে, মুখে কালি মাখিয়ে রাস্তায় ঘোরানোর অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী ওই নারীদের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা বলেন, কোনও নারীকে যেন এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে কখনও যেতে না হয়। তিনি সুবিচার পাওয়ার আশা করেন না।

ঘটনার পরই বাড়িতে এসেছিলেন বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর। দেখা করেছেন কংগ্রেসের অনিল চৌধুরীও। কিন্তু এতে বিরক্তই হচ্ছে তরুণীর পরিবার।

তরুণীর বাবা বলেন, ‘না চাইতেই আমাদের দু’মাসের রেশন দিয়ে গিয়েছেন ওরা। আরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কোনও কারণ ছাড়া কি কেউ এভাবে সাহায্য করে? চাইতে চাইতে মাথা কুটে মরে গেলেও অনেকের সাহায্য মেলে না।’

আর তরুণীর বোন বলেন, ‘সে দিন যদি মানুষ একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন, তাহলে আজ সাহায্যের দরকার হতো না।’’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখন আপনারা চান আমরা কী বলি? যা হওয়ার হয়ে গেছে, সব ভুলে চলো আবার নতুন শুরু করি!’

এসএ/