আফগানিস্তানে এক টুকরো রুটির জন্য হাহাকার
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
বন্ধ উপার্জন৷ গরিব হয়েছেন আরও গরিব ৷ দুই বেলা দুই মুঠো খাবারই জুটছে না বেশিরভাগ মানুষের৷ তালেবান আমলে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ ৷ মানবিকতার খাতিরে ক্ষুধার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসছেন অনেকেই । তেমনই একজন বেকারি মালিক মেহর দাল রহমতি। কিন্তু তার সামান্য সাহায্যে কি সমস্যা সমাধান হবে !
বাচ্চা থেকে বুড়ো সবাই হাত বাড়িয়েছে একটা পাউরুটির জন্য ৷ ভিড়ের মধ্যেও লাল জামা পরা একটি শিশুর দিকে বারবার চোখ চলে যেতে বাধ্য৷ অসহায় সেই মুখে করুণ আর্তি ধরা পড়েছে৷ পাউরুটি নিতে সেও ছোট হাতটি বাড়িয়ে দিয়েছে ৷ পাউরুটি নিতে এসেছেন অসংখ্য নারী৷ তারাও দাঁড়িয়ে রয়েছেন খাবারের অপেক্ষায় ৷
তালেবান আমলে নারীরা কাজের অধিকার হারিয়েছেন ৷ দ্রব্যমূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ তাই বেকারির সামনে নারীদেরও ভিড়৷ তবে এজন্যও রয়েছে নির্দেশনা। বেকারির কাচে তালেবান একটি পোস্টার রয়েছে ৷ তাতে লেখা নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক৷এই পরিস্থিতিতে হাত ভর্তি পাউরুটি নিয়ে বেকারির ব্যবসায়ী রহমতি ভাবছেন, কার হাতে তুলে দেবেন বেঁচে থাকার সামান্য এই রসদটুকু ?
সীমান্ত পেরিয়ে যে সব বাণিজ্য নিয়মিত চলত, তা তালিবান শাসনে বন্ধ হয়েছে৷ ঝাঁপ পড়েছে একাধিক স্থানীয় ব্যবসাতেও ৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, ২.৩ কোটি আফগান চরম খাদ্যসংকটে ভুগছে৷ ৯০ লাখ আফগান দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে৷ আফগানিস্তানে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের অর্ধেকেই এখন তীব্র অপুষ্টির শিকার৷
জাতিসংঘের ফুড প্রোগ্রাম জানাচ্ছে, দেশটিতে ১.৪ কোটি মানুষের কাছে কোনও খাবার নেই৷
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন জানাচ্ছে, তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়েছেন৷ এই সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷
বিজ্ঞাপন এবং টেলিভিশন-সহ সমস্ত মাধ্যমে নারীদের মুখ দেখানো নিষিদ্ধ করেছে তালেবান৷ মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ পরিবারের কোনও পুরুষ ছাড়া কোনও নারীর বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই৷
৫ বছরের কম বয়সি ১০ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগে মারা যেতে পারে, জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনই এখন দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে৷
এসএ/