বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: শেখ পরশ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
আমি আশা করেছিলাম বিএনপি রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে পার্থক্য বোঝে। কিন্তু না, তারা তা বোঝেনা। তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে, দেশের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশের উন্নয়নকে রুখে দিতেই দেশবিরোধী লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এর আগে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়াও বিদেশিদের কাছে দেশের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছিলেন। আমি মনে করি, বিএনপির এসব ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ইসলামবাগ ঈদগাহ মাঠ, লালবাগে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ উপস্থিত সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সামগ্রী ও শীতবস্ত্র উপহার নিয়ে এসেছি। শেখ হাসিনার আওয়ামী যুবলীগ গণমানুষের সংগঠন। আপনারা যদি আজ থেকে ১৫ বছর আগের শহরের চিত্রে ফিরে যান তাহলে নিশ্চয় মনে পড়বে, কত সমস্যার মধ্যে আপনারা ছিলেন। খাদ্য, বস্ত্র, গ্যাস, চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। এমনকি বিদ্যুতের জন্য মানুষের উপর গুলি চালিয়েছিলো বিএনপি-জামাত। মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা ছিল না, কোন অধিকার ছিলনা।
তিনি বলেন, আসলে বিএনপি-জামাত সরকার সমাজের উচ্চ শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করার সরকার আর আমরা রাজনীতি করি, আপনাদের মঙ্গল ও উন্নয়নের জন্য। আমরা আজকে যে যেই রাজনৈতিক পদ-পদবীতে থাকি না কেন, সব আপনাদের জন্য। আপনাদের সেবা করার জন্য আমরা আজকে এখানে দাঁড়িয়ে। আপনারা না থাকলে আমরা নাই। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ শুধু ভোটের সময় আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের সকল রাজনৈতিক কর্মসূচি আপনাদেরকে কেন্দ্র করে। আপনাদের মৌলিক চাহিদা: খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা আমাদের রাজনীতি করার প্রধান লক্ষ্য। এটা বঙ্গবন্ধুকন্যার শপথ-আপনাদেরকে আর কোনদিন ভাত-কাপড়ের জন্য কষ্ট করতে হবে না। বঙ্গবন্ধু সারাটা জীবন বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য প্রথমে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে, পরে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম সংগ্রাম করেছেন, জেল ও জুলুম খেটেছেন।
পরশ বলেন, ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করাতে তাঁর সেই স্বপ্ন অপূরণ থেকে যায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা আজীবন সংগ্রাম-আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশের মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে, কারণ আপনারা তাঁকে পর পর গত ৩টি নির্বাচনে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। সেই কারণেই তিনি আপনাদের জীবনে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হচ্ছেন। ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নেয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের ভাগ্যন্নোয়নের জন্য অবিরাম পরিশ্রম করে এদেশটিকে উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছেন। আজকে বিএনপির রেখে যাওয়া অতি দরিদ্র দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের মাথ্য পিছু আয় এখন ২৫৫৪ ডলার। নারীর ক্ষমতায়নে এবং শিশু মৃত্যু হার সূচক বিবেচনা করলে বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে অন্যতম প্রধান দেশ। তাই বাংলাদেশকে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ হিসাবে, উন্নত দেশ হিসাবে দেখতে হলে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার আবারো দরকার।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের লক্ষ্য একটা মানবিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধুকন্যা, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্যে চার দশকের বেশি সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর শোষিতের, অর্থাৎ মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশপাশি জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিয়ে মানবিক বাংলাদেশের চেতনাকে জাগ্রত করে ছিলেন। বিশ্বের অন্যতম সৎ, দক্ষ ও সেরা প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতিসহ তিনি অর্জন করেছেন ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’, ‘বিশ্বমানবতার নেতৃত্ব, ‘সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক নেতা’, মানবতার চ্যাম্পিয়ন’ ইত্যাদি মর্যাদাপূর্ণ বিশেষণ। তাঁর উন্নয়নমূখী প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রিয় বাংলাদেশও আজ অর্জন করেছে সমৃদ্ধ ও মানবিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি।
বর্তমান যুবলীগের অন্যতম লক্ষ্য রাষ্ট্রের মানবিক ধারাকে গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূুমিকা রাখা এবং গণমানুষের সুখে-দুঃখে সাথে থাকা। এ লক্ষ্যে যুবলীগ ইতোমধ্যে বেশ কিছু মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে যার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আজকের এই শীতবস্ত্র ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। তা দেখে বিএনপি-জামাত আজ নানা ধরণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আপনারা জানেন বিএনপি-জামাতের রাজনীতি মানেই আগুন সন্ত্রাস, খুন, গুম, হত্যার রাজনীতি। আপনারা দেখেন বিগত দিনে কিভাবে গাড়িতে আগুন দিয়ে শত শত মানুষ পুড়িয়ে কত মায়ের কোল খালি করেছে বিএনপি-জামাত। আজ তারাই আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বাংলাদেশকে নিয়ে, বাংলাদেশের উন্নয়নকে ব্যহত করতে, বাংলাদেশের মানুষের শান্তি নষ্ট করতে বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে, দেশের টাকা পাচার করে লবিস্ট নিয়োগ করছে। এদেশের যুবসমাজ ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে জামাত-বিএনপির সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিবে।
ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা’র সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করি রেজা’র সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি জোদ্দার, তাজ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মোঃ হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, ২৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বাবুলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ মুজিবুর রহমান মুজিব, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন স্বপন, আনোয়ার ইকবাল সান্টু, কামাল উদ্দিন খান, মাহাবুবুর রহমান পলাশ, মুরসালিন আহম্মেদ, যুগ্ম-সম্পাদক জাফর আহম্মেদ রানা, ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার বাবু, মাকসুদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক এরমান হক বাবু, দপ্তর সম্পাদক মোঃ এমদাদুল হক এমদাদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ-উজ-জামানসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
এসএ/