আবেদন দিয়েও তথ্য না পাওয়ায় জামালপুরে সাংবাদিক মাসুদের আপিল


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, ১০ই জানুয়ারী ২০২৩


আবেদন দিয়েও তথ্য না পাওয়ায় জামালপুরে সাংবাদিক মাসুদের আপিল
মাসুদুর রহমান

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে টিআর, কাবিটা, কাবিখা ও বিশেষ বরাদ্ধ প্রকল্পের তালিকা ও তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন দিয়েও তথ্য না পাওয়ায় জামালপুর জেলা প্রশাসক বরাবর আপীল আবেদন করেছেন দৈনিক জনবাণী পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও দৈনিক আলোচিত জামালপুর পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মাসুদুর রহমান।  


সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে জামালপুর জেলা প্রশাসক ও  জেলার ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার নিকট তিনি এ আপীল আবেদন করেন। 


জানা যায়, ২০১৮-১৯,১৯-২০,২০-২১,২১-২২ অর্থ বছরের ১ম ও ২য় পর্যায়ে এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ১ম পর্যায়ে ইউপি ও স্থানীয়  এমপির সাধারণ ও বিশেষ  টিআর, কাবিটা,কাবিখা,জিআর বরাদ্ধের তালিকা ও প্রকল্প কমিটির তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে ৯ নভেম্বর সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা বরাবর আবেদন করেন সাংবাদিক মাসুদুর রহমান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিকট আবেদনটির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু দীর্ঘ ২ মাস পেরিয়ে গেলেও তথ্য না দিয়ে আজ না কাল বলে দিন পার করছেন সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর । আইনে তথ্যপ্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় বলা হয়েছে; তথ্য প্রদান পদ্ধতি- ১. দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ধারা ৮-এর উপধারা (১)-এর অধীনে অনুরোধপ্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ২০ (বিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করিবেন; ২. উপধারা (১)-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অনুরোধকৃত তথ্যের সহিত একাধিক তথ্য প্রদান ইউনিট বা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকিলে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করিতে হইবে এবং ৩. উপধারা (১) ও (২)-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোনো কারণে তথ্য প্রদানে অপারগ হইলে অপারগতার কারণ উল্লেখ করিয়া আবেদনপ্রাপ্তির ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে তিনি উহা আবেদনকারীকে অবহিত করিবেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য সরবরাহের কথা বলা হয়েছে কেবল 'কোনো ব্যক্তির জীবন-মৃত্যু, গ্রেপ্তার ও কারাগার হইতে মুক্তি সম্পর্কিত হইলে।'


কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর কোন তথ্য মাসুদূর রহমানকে প্রদান করেনি। কেন তারা তথ্য দিবে না চিঠি দিয়েও তাকে জানায়নি। শুধু তাই নয় সরিষাবাড়ী উপজেলায় কিছু সাংবাদিক তথ্য অধিকার আইনে আবেদন দিলেও তথ্য কোন সাংবাদিককে দেওয়া হয় না। তথ্য পাওয়ার অধিকারই নিশ্চিত হয়নি এখনো। সরকারি কর্মকর্তাদের কেউ কেউ তথ্য না দেওয়ার ফাঁকফোকর খোঁজেন অনেক সময়। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ তো আছেই, সাংবাদিকদেরও কাঠখড় পোড়াতে হয় আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য পাওয়ার জন্য। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেও মিলছে না সরকারি দপ্তরের তথ্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে এমন বেশকিছু আবেদন ফাইলবন্দি পড়ে আছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। 


সাংবাদিক মাসুদুর রহমান জানান, তথ্য অধিকার আইনে আবেদন দেওয়া হলেও তথ্য মিলছে না।  সোমবার দুপুরে জামালপুর জেলা প্রশাসক বরাবর আপীল আবেদন করেছি। এরপরও তথ্য না পেলে প্রধান তথ্য কমিশনার বরাবর অভিযোগ দায়ের করব। তথ্য আইন মেনেই যা করার করব।   


সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক জাকারিয়া জাহাঙ্গীর বলেন, সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইন করেছে। অথচ তথ্য নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকরাই সরকারি তথ্য পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সেখানে সাধারণ মানুষের তথ্যপ্রাপ্তি তো কল্পনারও বাইরে।তিনি আরও বলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের কাছে আমারও একাধিক আবেদন জমা থাকলেও তথ্য মেলেনি। অনেকেরই এমন অসংখ্য আবেদন ফাইলবন্দি পড়ে আছে।


এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপমা ফারিসা বলেন, সব তথ্য আমার কাছে থাকে না, কেউ তথ্য চাইলে আবেদনপত্রটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়। কেউ তথ্য না পেলে কিংবা প্রদানকৃত তথ্যে সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করতে পারেন।


এ বিষয়ে জামালপুর জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় জানান, একটি আপীল আবেদন পেয়েছি। তথ্য অধিকার আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।