নান্দাইলে ফেসবুকে প্রেম,

মায়ের সাথে দেখা করানোর কথা বলে বন্ধুদের নিয়ে ধর্ষণ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:২১ পূর্বাহ্ন, ১৫ই জানুয়ারী ২০২৩


মায়ের সাথে দেখা করানোর কথা বলে বন্ধুদের নিয়ে ধর্ষণ
মো. আলীউর-হারেস উদ্দিন

ময়মনসিংহের নান্দাইলে বিয়ের প্রলোভনে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা গ্রেফতার প্রেমিকসহ দুই জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গ্রেফতারকৃরা হলেন, উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের চামারুল্লাহ গ্রামের শাহেদ আলীর ছেলে মো. আলীউর (৩০), একই এলাকার নুরুল হুদার ছেলে হারেস উদ্দিন (২০) এদের মাঝে আলীউরের সাথে ভিক্টিম তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল।


শুক্রবার (১৩ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক তাইজুল ইসলাম সোহাগ তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।


চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক ঝুঁটন কুমার বর্মণ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় দুই আসামীকে নান্দাইল থানার পুলিশ আদালতে পাঠালে বিচারক আগামী ১৫ জানুয়ারী রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 


পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই তরুণী ২০২২ সালে এইচএসসি পাস করেন। তরুণীর বাবা মারা যাওয়ায় মায়ের সাথে বসবাস করতেন তিনি। এমতাবস্থায় বেশ কয়েক মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) আলীউরের সাথে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কপর্যায়ে অলিউল তাঁকে বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। 


আলীউর তার মায়ের সাথে দেখা করানোর কথা বলে তরুণীকে নান্দাইল পৌর শহরে ডেকে আনেন আলীউর। সেখানে চন্ডীপাশা এলাকায় নির্মাণাধীণ বাসার একটি কক্ষে নিয়ে যায় আলীউর। আলীউর তার মা আসবে বলে অপেক্ষা করতে বলে ওই তরুণীকে। 


কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর অলিউল ওই কক্ষে তাঁকে জোড়পুর্বক ধর্ষণ করে। পরে তাঁকে কক্ষের ভেতরে রেখে দরজা বাইরে থেকে দরজা আটকে দেন। এর কিছুক্ষণ পর আলিউলের তিন বন্ধু দরজা খুলে কক্ষে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে দুজন পালাক্রমে তাঁকে ধর্ষণ করে। অপরজন দরজায় দাঁড়িয়ে পাহারা দেয়। ধর্ষণ শেষে এই ঘটনা প্রকাশ করলে তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে ওই বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। 


এই ঘটনার পর ওই তরুণী গত ১৭ আগষ্ট বিয়ের দাবীতে আলীউরের বাড়িতে উঠেন। খবর পেয়ে আলীউর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তখন আলীউরের পরিবার ও স্থানীয়রা তাকে শান্তনা দেয় এবং বলে আলীউর আসলে তার সাথে যোগাযোগ করবে বলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। তবে, বেশ কিছুদিন চলে গেলেও আলীউর বা তার পরিবার ওই তরুণীর সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। পরে আবারও গত ৩০ আগস্ট বিয়ের দাবিতে ওই তরুণী বিয়ের দাবিতে আলীউরের বাড়িতে অবস্থান নেয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা সালিশ ওই তরুণীকে বিয়ে করার কথা বলে আলীউরকে। তবে এভাবে বেশ কিছুদিন চলে গেলেও আলীউর তাকে বিয়ে না করে পালিয়ে থাকে। 


এবিষয়ে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে অভিযান চালিয়ে গত বুধবার দ্বিবাগত রাতে প্রেমিক আলীউর ও হারেস উদ্দিনকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারী) রাতে আলীউর, হারেসসহ মোট চারজনকে আসামী করে ওই তরুণী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর দুই আসামী গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।


আরএক্স/