‘গঙ্গা বিলাস’ ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করবে: নৌপরিবহন সচিব
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, ১৬ই জানুয়ারী ২০২৩
ভারতের পর্যটকবাহী নৌযান 'এমভি গঙ্গা বিলাস' শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করবে এবং শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করবে। 'গঙ্গা বিলাস'র পর্যটকদের বাংলাদেশের খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার আংটিহারায় অনবোর্ড ইমিগ্রেশন শেষে মোংলা বন্দরে স্বাগত জানানো হবে। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ৩ ফেব্রুয়ারি মোংলা বন্দরে তাদেরকে স্বাগত জানাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
বরিবার (১৫ জানুয়ারি) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ভারতের প্রস্তাবিত পরিকল্পিত ক্রুজ পরিসেবা এবং ঐতিহ্যবাহী নৌ-ভ্রমণে সহযোগিতা প্রদান সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মোস্তফা কামাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
সচিব বলেন, এটা শুধু ট্যুর নয়; এটা প্রটোকলের অংশ। এ ট্যুর আমাদের পর্যটনকে আরো বেশি ফেসিলিটেড করবে। আমাদের আন্তরিকতার কমতি থাকবেনা। ব্যবসা, বাণিজ্য ও পারস্পারিক সম্পর্ক আরো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
‘এমভি গঙ্গা বিলাস‘ বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বাংলাদেশের জলসীমায় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। এসওপি অনুযায়ি প্রটোকল রুটের নাব্যতা রক্ষা, বার্দিং সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও নৌ-পথ ব্যবহারের জন্য ভয়েজ পারমিশন প্রদান এবং ভয়েজ পারমিশনের সার্বিক মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কতৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
আংটিহারা ও চিলমারীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনবোর্ড কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর)।
বাংলাদেশের নৌ-পথ অতিক্রমকালে জাহাজটিকে যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করার পদক্ষেপ নিবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এন্ট্রি পয়েন্ট আংটিহারাতে সকল যাত্রি এবং নাবিকদের কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।
নৌযানটির ভয়েজ পরিচালনাকালে সার্বক্ষণিক মনিটর করবে জাহাজ অপারেটিং কোম্পানি 'মেসার্স গালফ ওরিয়েন্ট সীওয়েজ'; দর্শনীয় স্থানসমূহ পরিদর্শনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন করবে ট্যুর অপারেটর কোম্পানি 'জার্নিপ্লাস'।
বৈঠকে নৌপরিবহন, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ-পরিবহন অধিদফতর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, কোস্টগার্ড, বিজিবি, বনবিভাগ, ট্যুর অপারেটর কোম্পানি 'জার্নিপ্লাস' এবং জাহাজ অপারেটিং কোম্পানি 'গালফ ওরিয়েন্ট সীওয়েজ' এর প্রতিনিধিগণ সরাসরি এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণ ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, 'গঙ্গা বিলাস' ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসি থেকে শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) যাত্রা শুরু করেছে। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি 'গঙ্গা বিলাস' এর যাত্রা উদ্বোধন করেন।
১৯৭২ সালে প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড এর অধীনে বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছিল; যা এখনো কার্যকর আছে। প্রটোকলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রি ও পর্যটকবাহী নৌ-যান চলাচলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রি ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সমঝোতা স্মারকের আলোকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর স্বাক্ষরিত হয়। এসওপি'র আওতায় ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে যাত্রি ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর পর হতে তিনটি ভারতীয় এবং একটি বাংলাদেশী নৌযান চলাচল করেছে।