এক গুচ্ছ কবিতা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন, ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩


এক গুচ্ছ কবিতা
ছবি: জনবাণী

চেনা বলবো কাকে?

-ইসমত আরা খাতুন


চেনা বলবো কাকে? 

যে পৃথিবীর জন্ম হয়েছিলো,কালের পরিক্রমায়  

তাকে দেখলে চমকে ওঠে দেহ!

থমকে দাঁড়ায় পথ!

সেতো এক গোলকধাঁধা। 


চেনা বলবো কাকে? 

যে প্রকৃতির বুকে মাথা ঠুকে ঠুকে 

বংশ পরম্পরায় জীবাত্মার বাস।

হিংসুটে হয়ে ওঠে, সমস্ত মায়া-মমতার 

বলিদান দেয় সেই প্রকৃতিও!


চেনা বলবো কাকে? 

শক্তির আধার জ্বলজ্বল সূর্যটা!

সেও ফাঁকিতে নয় বাকি। 

কখনো কখনো ফিকে হয়

আঁধারিতে রাখে ভুবনটা ঢাকি।


চেনা বলবো কাকে? 

আমার বাম অলিন্দে যার বাস!

তার ভেতরটা তো দেখা হবে না কোনো কালেই।

কোন সমুদ্রে কখন তার ডুব, 

জানার ইচ্ছেটাই থেকে যাবে নিরন্তর খুব। 


চেনা বলবো কাকে? 

তবে এই আমি,আমাকে!

কখখনো নয়,সেতো আরও অচেনার ঘোরে, 

ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ উড়ে প্রহরে প্রহরে, 

কল্পনাতীত সেই সুদূরে!!


কাব্য কথন

-সেগুফতা আনসারী


আমার কাব্য কথনের শব্দরা

আজ বড্ড এলোমেলো,

নিঝুম রাতের জোনাক পোকা

ইশারায় কি যেন বলে গেল!


নিভু নিভু আলোর স্নিগ্ধতাকে

লেখা হল না শব্দ জটে,

আঁকা হল না কল্পলোকের ছবি 

এই নির্বাক হৃদয়  তটে।


আলোর বানে জোৎস্না আবাহনে

শব্দ কাননে হল না যাওয়া, 

হৃদয় প্রকম্পিত শব্দ মঞ্জুরী

গুলোকে হলা না খুঁজে পাওয়া। 


ছন্দের টানে মমতার ধ্যানে

ফুটানো হল না শব্দ ফুল, 

উদাসী নয়নে চাঁদের আলোয় 

দেখা হল না ভরা নদী কূল। 


মনের মাধুরী মিশিয়ে আজ

গাঁথা হল না কথারমালা,

শব্দ ফুলের পাপড়ি বিছিয়ে 

সাজানো হল না কাব্য ডালা।


ছন্দ সুতায় শব্দ সাজাবে  বলে 

লেখনী নির্বাক চেয়ে আছে,

ছুটে চলছে দিগ্বিদিক 

পাখির কাছে ফুলের কাছে।


সারাদিনের ক্লান্তির অবসাদে

চরিদিক খুবই নিরানন্দ,

তাদের বিষন্নতার কাছে 

হার মানছে  কবিতা ছন্দ।


নিঝুম রাতের আলো আঁধারি

বুনছে একাকিত্ব মায়াজাল,

বিনিদ্র রজনীর কাছে যেন 

থমকে আছে মহাকাল।


নিরন্তর ভালোবাসা

-জান্নাতুল ফেরদৌস


আমি এক ভালোবাসার জগতে বন্দিনী।

ভালোবাসার রাজ্যে তুমিই আমার সঙ্গিনী। 


ভালোবেসে জীবনমাঝে সাজিয়েছ এই ভুবন।

অন্তর গহীনে একমাত্র তুমিই আমার আপন।


যাঁকে ভালোবাসলেই শান্তি মিলে মন ও  প্রাণ ।

সকল দুঃখ- ব্যাথায় ঠাঁই যেন পাই হে রহমান। 


সাথী হয়ে সাথ দাও তুমি অন্তর আত্মার মাঝে।

তোমায় ভালোবেসে ডাকি সকাল,দুপুর, সাঁঝে।


স্বার্থহীন ভাবে দিচ্ছ তুমি, আমায় পাহারা।

মায়াময় জগত দিয়াছ আমায় শ্রান্তির সেরা।


তোমায় ভুলে যখন আমি, বিপথে চলি।

তবু তুমি, আমায় যাও না কখনোও ভুলি।


গভীরতম ভালোবাসায়, আমায় কাছে টানো।

ভালোবাসা থেকে কভু বিমুখ করোনা যেনো।


ভালোবেসে আপন করে নিবে, তোমার কাছে।

পাপের রাজ্যে বিচরণ আমার জবাব দিব কিসে?


তোমায় ভুলে যাঁদের, আমি বন্ধু ভেবেছিলাম।

তাঁরাই তো আজ একা ফেলে করে দিল নিলাম।


একা ঘরে, তুমি ছাড়া নেই যেনো কেউ আমার।

তোমার ভালোবাসা হোক আমার, নিধান উপহার। 


রূপ

-কামরুন্নাহার বর্ষা 


চোখগুলো সব ঝাঁপসা দেখে

আচ্ছা আলোয় আস্থা মাখে

আমার চোখের ঘুম,

অতীত ভাসে ছবির ঘরে

নেশার ঘরে মনটা ভরে

হঠাৎ অতীত ধুম।


এই ছিলাম এক আমি

আচ্ছা তার ঐ হামি

সব হারিয়ে গেল,

মন খারাপে সাজতে জাগে

নানান রূপে আসতে আগে

তাই তো এ রূপ এলো।


দাঁত দেখানো হাঁসি

হয় না তার ঐ ফাঁসি

সব খানে নেয় ঠাঁই,

অতীত আমার রং মাখানো

ছবির ঘরে হাজার ভানও

তাই তো ফিরে পাই।