আড্ডা, সেলফি আর খুঁনসুটিতে ইবির বাংলা বিভাগে প্রাণের উচ্ছ্বাস
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, ১২ই মার্চ ২০২৩
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, বহুমাত্রিক কারণে একজন মানুষের জীবনে সবচেয়ে স্মরণীয় সোনালি অধ্যায়। এই অধ্যায়ে মানুষ তার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময় পার করে। এসব স্মৃতি কি চাইলেই ভোলা যায়! এই ক্যাম্পাসের চিরপরিচিত আঙিনায় মানুষ পায় বন্ধু, সহপাঠী কিংবা প্রিয়জন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পর চাইলেই কি দেখা হয় সবার সঙ্গে? কদাচিৎ এসব প্রিয় মানুষের দেখা মেলে। কাজের ফাঁকে ক্যাম্পাসে কাটানো স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসলে যেনবা মনের অজান্তেই মুখের কোণে ফুটে ওঠে এক চিলতে হাসির রেখা। জীবনের চলার পথে এসব প্রিয় মানুষের সঙ্গ অতি কাঙ্ক্ষিত। বহুকাল পরে দেখা হলে তো আর কথাই নেই, স্মৃতিচারণে, আড্ডায় যেন কথার ফুলঝুরি ফোটে।
শনিবার (১১ মার্চ) সারাদিন এমনই দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মঞ্চ ও রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবন ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন এলাকায়। পুরোনো সতীর্থদের পেয়ে অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়েছেন। কেউ কেউবা জড়িয়ে ধরছেন একে অপরকে। কেউ কেউবা আড্ডায়, উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুদের পেয়ে শিশুদের মতোই খুনসুটিতে মেতেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। আড্ডার আসরে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তারা ফিরে গিয়েছিলেন সেই তরুণ কাঁচা বয়সে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সবুজ ক্যাম্পাসে। আড্ডার সঙ্গে সঙ্গে চলছিল বিভিন্ন স্টাইলে তোলা সেলফির ঘনঘটা। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মুখর প্রাণের স্পন্দন জেগেছিল পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে।
শনিবার (১১ মার্চ) ‘যুক্ত হই মুক্ত আনন্দে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রথমবারের পুনর্মিলনী উৎসবে বাধভাঙা উল্লাসে মেতেছে বাংলা বিভাগের সাবেক-বর্তমান মিলিয়ে ৩৩টি ব্যাচের প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী।
এ সময় বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গাজী মো. মাহবুব মুর্শিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী এবং অধ্যাপক ড. মো. সরওয়ার মুর্শেদ প্রমুখ।
এর আগে, পুনর্মিলনী উপলক্ষে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে বিভাগটি। এদিকে পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে টি-শার্ট, ব্যাগ ও উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, 'একটি মাতৃভাষা সমাজকে বিনির্মাণ করতে পারে, যা অস্ত্রের মাধ্যমে সম্ভব নয়। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী যারা দেশ ও দেশের বাইরে কাজ করে যাচ্ছে তাঁরা আজ নিজ পরিবারে এসেছে নিজেদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতা বাড়ানোর জন্য। তিনি তৎকালীন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলায় ভাষণ দেবার বিষয়টি তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হিসাবে আপনাদের কর্মের মধ্যে দিয়ে দেশ ও জাতি সমৃদ্ধ হবে।'