কর্ণাটকে হিজাব না খুলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে ঢুকতে পারছে না (ভিডিও)
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ নিয়ে বিতর্ক চলছে ভারতে। এর মধ্যে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কর্ণাটক রাজ্যের মান্ডিয়া জেলায় সরকারি সহায়তায় পরিচালিত একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের হিজাব খুলে স্কুল প্রাঙ্গণে ঢোকার নির্দেশ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক অনলাইন প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
হিজাব
নিষিদ্ধের ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা শুরুর পর কর্ণাটকে সাময়িক সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বন্ধ করে দেওয়া হয়। আদালতের দ্বারস্থ হন ভুক্তভোগী মুসলিম শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে
গত সপ্তাহে কর্ণাটক হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন এক আদেশে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে
পারবে, তবে ধর্মীয় পোশাক পরা যাবে না।এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সোমবার শিক্ষার্থীরা
হিজাব পরে স্কুলে প্রবেশ করতে চাইলে আদালতের আদেশ মেনেই হিজাব খুলতে বলেন এক শিক্ষক।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়,
একজন নারী (সম্ভবত একজন শিক্ষক) স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে হিজাব পরে ভেতরে প্রবেশ
করতে চাওয়া শিক্ষার্থীদের বাধা দিচ্ছেন। এ সময় একজন শিক্ষার্থীকে হিজাব খুলে ফেলার
নির্দেশও দিতে দেখা যায় তাকে।
ওই
ভিডিও ফুটেজে আরও দেখা যায়, কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানদের কেন স্কুলে প্রবেশ করতে বাধা
দেওয়া হচ্ছে, এ নিয়ে ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথাও বলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বাগ্বিতণ্ডার
পর শিক্ষার্থীরা হিজাব খুলে কোভিড বিধি মেনে শুধু মাস্ক পরেন এবং এরপরই তাদের স্কুল
প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেওয়া হয়।
দুই
মেয়েকে নিয়ে স্কুলে আসা এক ব্যক্তিকে কিছুক্ষণের জন্য আটকে রাখা হয়। এই সময়ের মধ্যে
ওই নারী শিক্ষক তার সঙ্গে কথা বলেন। যদিও তাদের দুজনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা স্পষ্ট
নয়। শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তিনি কিছুটা শান্ত হন। এরপর তার দুই সন্তানকে হিজাব খুলতে
বলেন। পরে তারা স্কুলে প্রবেশ করে।
সেখানে
উদুপি জেলার একটি সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী এনডিটিভিকে বলেন, ক্লাসে
যেতেও তার এক সহপাঠীকে হিজাব খুলতে হয়েছে। হিজাব নিয়ে শুরু বিতর্কের মধ্যে পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাজ্য সরকারের আদেশে কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার কর্ণাটকের
স্কুলগুলো দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে একাদশ ও দ্বাদশ
শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছেন না। আগামী বুধবার তাদের ক্লাস শুরু হবে।
হিজাব
পরার জন্য শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না—গত বছরের ডিসেম্বরে কর্ণাটক রাজ্যের উদুপি
জেলায় সরকারি গার্লস পিইউ কলেজের ছয় শিক্ষার্থী এমন অভিযোগ করার পর মুসলিম ছাত্রীরা
এর প্রতিবাদ শুরু করেন। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই রাজ্যটিতে হিজাব নিয়ে বিতর্ক
শুরু হয়। এরপর তাঁরা কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এই মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত
গড়ায়। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা বলেন, ‘হস্তক্ষেপ করতে হলে আমরা উপযুক্ত সময়ে
করব।’
ওআ/