দখল দূষণে অস্থিত্ব সংকটে খোয়াই নদী
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:২৯ অপরাহ্ন, ৪ঠা জুন ২০২৩
অবৈধ দখল আর দূষণের কবলে নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌরশহর দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরাতন (মরা) খোয়াই নদী।
অস্তিত্ব সংকটে থাকা নদীটি উদ্ধারে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী ও স্থানীয় সচেতন মহল। দীর্ঘদিন ধরে তারা নদীটিকে দখলমুক্ত করে প্রাণ ফেরানোর দাবি জানিয়ে এলেও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না প্রশাসন।
জানা গেছে, ১৯৭৮-৭৯ সালে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে খনন করে উপজেলার খোয়াই নদীকে শহরের বাইরে স্থানান্তর করা হয়। এর পর নদীটির প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশ মরা খোয়াই নদী হিসাবে পরিচিতি পায়। তিলে তিলে দখল ও দূষণের কবলে ক্রমেই মৃত নদীতে পরিণত হয়েছে খোয়াই। নদীতে এখন আর নেই পানি প্রবাহ। নদীর জায়গা দখল করে প্রতিনিয়ত স্থাপনা গড়ে ওঠায় কমছে প্রশস্ততা।
আরও পড়ুন: প্রসেস মিলের বর্জ্যে দূষিত আত্রাই নদী
সরেজমিন দেখা যায়, খোয়াই নদী দখল করে ঘরবাড়ি ও দোকান তৈরি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অবৈধ দখলদারদের তালিকায় আছেন রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবীসহ জনপ্রতিনিধিরাও। যে কারণে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। এ ছাড়া নদী ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সও।
স্থানীয় বাসিন্দা সামছুল মিয়া জানান, এক সময় নদীতে মাছ ধরাসহ নানা আয়োজন হতো, কিন্তু এখন তা নেই। ক্রমাগত দখল-দূষণের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে চারপাশের জীববৈচিত্র্য।
ফিরোজ মিয়া জানান, এমনিতেই নদীর চারপাশ দখল হয়ে গেছে। নদীতে নেই পানি প্রবাহ। পুরোনো খোয়াই নদীটি পুরোপুরি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
মো. আব্দুল হক জানান, নদী দখল করে শুধু ছোটখাটো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়নি, গড়ে তোলা হয়েছে বড় বড় দালানও। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো আর কিছু দিনের ভেতরেই নদীটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
চুনারুঘাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ জানান, নদীর বুকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়েছে এটা ঠিক। উপজেলা প্রশাসন নিজেরাই নদীর শ্রেণী পরিবর্তন করে এ স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
আরও পড়ুন: মৃতপ্রায় কমলগঞ্জের ধলাই নদী
বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আর নদী - নালা, খাল-বিল না থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে না। দখলদারদের কবল থেকে পুরোনো খোয়াই নদীকে রক্ষা করার দাবি জানান তিনি।
চুনারুঘাট পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম রুবেল জানান, শীঘ্রই নদীটি উদ্ধার করে দু’পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা চলছে।
জানতে চাইলে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক জানান, অবৈধ দখলদারদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই দখলকৃত জমি উদ্ধার করা হবে।
জেবি/ আরএইচ/