পরকীয়ায় এগিয়ে কোন দেশ? জানালো সমীক্ষা
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
লাইফস্টাইল ডেস্ক: প্রেমে মানুষ যখন খুশি যেখানে খুশিই পড়তে পারেন। প্রেমের কোনও নির্দিষ্ট সময় ক্ষণ কিছুই নেই। আর পরকীয়া? বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন পরকীয়া শরীর এবং মনের দিক থেকে খুবই ভালো।
বিবাহিত সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক বা মানসিক সুখ না পেলে বাইরে মানুষ বারমুখো হয়। মানে অনেকটি ঠিক বাড়িতে রোজকার ডাল ভাত মাছের ঝোল খেতে খেতে বোর হয়ে গিয়ে নামীদামি রেস্তোরাঁর খাবারের প্রতি আকর্ষণ বিবাহ নামক বন্ধনে তুমি জড়িয়ে পড়েছো যে। তাই একজন মানুষকে নিয়েই সারাজীবন কাটাতে হবে। সমাজ দিব্যি দিয়ে রেখেছে। সমাজের দিব্যি তো আর খণ্ডানো যায় না। তাই বছরের পর বছর ইচ্ছে বা অনিচ্ছেতে একজন মানুষের সঙ্গেই সারাটা জীবন কাটাতে বাধ্য সকলে। তা সে মানুষটা পছন্দের হোক বা না হোক। আর এই নিয়ম না মানলেই তুমি পাপী। আগেকার দিনে ধোপা নাপিত বন্ধ হত, গোঁসা ঘরে খিল পড়ত কিংবা প্রাণ পাখিটা কেউ উড়িয়ে দেওয়া হত।
এখনও তাই হয়। তবে বিশেষ কায়দায়। কিন্তু তা বলে মানুষের আদিম এই স্পৃহাকে দমন করে রাখা যায়নি। পরকীয়া আগেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও হয়তো থাকবে। অন্তত মনোবিদরা এমনই দাবি করে থাকেন।
বিবাহিত সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক বা মানসিক সুখ না পেলে বাইরে মানুষ বারমুখো হয়। মানে অনেকটি ঠিক বাড়িতে রোজকার ডাল ভাত মাছের ঝোল খেতে খেতে বোর হয়ে গিয়ে নামীদামি রেস্তোরাঁর খাবারের প্রতি আকর্ষণ।
ওয়েব সিরিজ, ডেটিং সাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে পরকীয়ার পাল্লা ভারি হচ্ছে। ভাবটা এমন, চারদিকে বিশ্বায়নের যখন উদারণের ছড়াছড়ি, তখন ওপেন রিলেশনশিপ কি দোষ করল?
কিন্তু পরকীয়া তো বিশ্বায়নের ফল নয়। বিবাহিত রাধার সঙ্গে কৃষ্ণের প্রেমটা তো পরকীয়ার জলজ্যান্ত উদাহরণ। প্রাচীনকালের রাজা, মহারাজা, সম্রাট, সুলতান, নবাবরা পরকীয়ায় ছিলেন সিদ্ধহস্ত। রানি কিংবা বেগমরাও পিছিয়ে ছিলেন না। সেই রাজকীয় পরকীয়া আজকে মধ্যবিত্তের ঘরে এসে পৌঁছেছে। ঘরে ফিক্সড ডিপোজিটকে রেখে দিয়ে বাইরে সাময়িক সুখের সন্ধানের চাহিদা আজকাল তুঙ্গে। আর সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই ডেটিং অ্যাপ খুলে জোরদার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে একদল মানুষ।
সেই ডেটিং অ্যাপেরই এক সাম্প্রতি সমীক্ষা খোলসা করল পরীকায় প্রথম হওয়া দেশটির নাম। আজ্ঞে না, আপনাদের এতটাও চিন্তা করতে হবে না। দেশটির নাম ভারতবর্ষ নয়। কারণ এদেশে পরকীয়া এখনও রাখঢাক ভাবেই চলে। খুল্লম খুল্লা পরকীয়ার সাহস লোকজনের খুব কমই আছে।
পরকীয়ায় ফার্স্ট প্রাইজ জেতা দেশটির নাম আয়ারল্যান্ড। আজ্ঞে হ্যাঁ, কনকনে শীতে বরফে ঢাকা এই দেশের লোকেরাই সবচেয়ে বেশি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত। প্রতি পাঁচজন আয়ারল্যান্ডবাসীর মধ্যে একজন পরকীয়া করেন। স্বামী কিংবা স্ত্রীকে প্রতিদিন প্রতারণ করেন ২০ শতাংশ মানুষ। সম্প্রতি এমনই দাবি করছে একটি ডেটিং সাইট।
দ্বিতীয় স্থানে আছে জার্মানি (১৩ শতাংশ), ৮ শতাংশ প্রতারণা করে তৃতীয় স্থানে আছে কলোম্বিয়া। ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য দৈনিক প্রতারকের হার যথাক্রমে ৬ এবং ৫ শতাংশ।
বলাবাহুল্য প্রতারকদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। তবে মহিলাদের সংখ্যাটাও পুরুষদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে পুরুষরা সাধারণত শারীরিক চাহিদার আকর্ষণে পরকীয়ায় লিপ্ত হন। মহিলারা আবার মনের শান্তি খুঁজতে মনের সঙ্গী খোঁজেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্ক তৈরিটা প্রধান। মেয়েরা গল্প করে, বেড়াতে গিয়ে বা একসঙ্গে সময় কাটিয়েই সুখী।
স্বামী প্রতারণা করছেন জেনে ৮৬ শতাংশ মহিলা ক্ষুব্ধ। সেখানে পুরুশের হার ৮৯ শতাংশ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষরা স্ত্রীকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা শিকার করছেন। কিন্তু স্ত্রীদের মধ্যে ক্ষমা করার প্রবণতা অনেক কম।
পরকীয়া করতে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন প্রায় প্রত্যেক পুরুষ। কিন্তু মহিলাদের একটা বড় অংশ যৌনতার কথা স্বীকার করেননি। স্ত্রী নতুন পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিকভাবে সম্পর্ক তৈরি করেছে কিনা তা নিয়েই পুরুষদের আগ্রহ মাত্রাতিরিক্ত। মানসিক সম্পর্ক নিয়ে তাঁরা মাথা ঘামাচ্ছেন না। উলটো দিকে স্বামীর শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে স্ত্রীদের বিশেষ মাথাব্যাথা নেই। বরং স্বামী মানসিকভাবে তাঁর নতুন সঙ্গিনীর সঙ্গে কতটা জড়িত সেদিকেই তাঁদের আগ্রহ বেশি।
সমীক্ষা বলছে লকডাউনে নাকি এই পরকীয়ার হার অত্যাধিক বেড়েছে। ভাগ্য ভালো ভারতে এখনও এরকম কোনও সমীক্ষা হয়নি তা না হলে নাকি ঠগ বাছতে গাঁ উজার হয়ে যেত। না না, এ কথা আমরা বলছি না। বলছেন মনোবিদ আর আশপাশের লোকজন। আসলে ওয়েব সিরিজগুলোর চাহিদা যে বড্ড বেড়ে গেছে।