শ্রীনগরে নৌকা তৈরিতে কাঠমিস্ত্রিদের ব্যস্ততা


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:০৩ অপরাহ্ন, ২২শে জুন ২০২৩


শ্রীনগরে নৌকা তৈরিতে কাঠমিস্ত্রিদের ব্যস্ততা
ছবি: জনবাণী

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বর্ষাকে সামনে রেখে কোষা নৌকা তৈরির কাজে  ব্যস্ত সময় পাড় করছেন স্থানীয় কাঠমিস্ত্রিরা। শ্রমজীবি মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বিভিন্ন সাইজের রেডিমেট নৌকা তৈরি করছেন। 


স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রির পাশাপাশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নৌকা তৈরীর অর্ডারও নিচ্ছেন কাঠমিস্ত্রিরা। এক সময় মুন্সীগঞ্জ তথা ঐতিহ্যবাহী বিক্রমপুরের ভরাবর্ষায় শতভাগ মানুষের যাতায়াতে অন্যতম বাহন ছিল নৌকা। কালের বিবর্তণে নদী-নালা, খাল-বিল, কালভার্টের মুখ ভরাটসহ নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণের ফলে নৌকার ব্যবহার এখন বিলুপ্তির পথে। তার পরেও ভরাবর্ষায় এই অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষি, গৃহস্থালী এবং বিলপাড়বাসীর যাতায়াতে নৌকার গুরুত্ব রয়েছে। 


এবছর বিড়ম্বনা হলেও এরই মধ্যে খাল-বিলে জোয়ারের পানি আসতে দেখা যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে নৌকা ব্যবসায়ীরা স্থানীয় হাট বাজারে রেডিমেট নৌকার পসরা সাজিয়ে বসছেন। 


মৌসুমী কাঠ মিস্ত্রিরা বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। ১৪ হাতি চামবল কাঠের রেডিমেট কোষা নৌকা বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকা, ৮ হাতি নৌকা ৮ হাজার টাকা ও ডিঙ্গি কোষা বিক্রি হচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকায়। 


সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার তিনদোকান, বাঘড়া বাজার, সাতগাঁও, ফুলকুচি, রানা, ষোলঘর, পাটাভোগ, বাড়ৈখালীসহ বেশকিছু স্থানে মৌসুমী নৌকাশিল্প গড়ে উঠেছে। বসতবাড়ি কিংবা সড়কের পাশে বিভিন্ন জাতের কাঠের কোষা নৌকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। কাঠমিস্ত্রির অধীনে শ্রমিকরা কাজ করছেন।


আরও পড়ুন: ৫ যুগ ধরে ডিঙি নৌকা তৈরী করছেন মালেক, বর্ষা আসলেই বিক্রির ধুম


লক্ষ্য করা গেছে, এসব রেডিমেট নৌকা তৈরির কাজে উড়িআম, মেহগনি, চামবল, কড়ইসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঠের ব্যবহার হচ্ছে। দেউলভোগ এলাকার রোকন, হৃদয় মন্ডল, সজিবসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান, দৈনিক ৮০০ টাকা রোজে দিনব্যাপী কাজ করছেন। 


ফুলকুচি গ্রামের বাঁধন বাছার বলেন, বছরের জ্যৈষ্ঠ মাস থেকেই নৌকার বানানো শুরু করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০টির মত কোষা নৌকা বিক্রি হয়েছে। শ্রমিক মজুরী, কাঠসহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে তেমন লাভ হচ্ছেনা। গত সিজনে প্রায় ছোট-বড় সব মিলিয়ে ৩ শতাধিক কোষা নৌকা বিক্রি হয়েছে। সব খরচ বাদে প্রায় ২ লাখ টাকা হয়েছে তার। 


তিনদোকানের মেঘু সরকার বলেন, চলতি সপ্তাহে ৪ জন শ্রমিক নিয়ে নৌকা তৈরী শুরু করি। দৈনিক ২টি করে নৌকা তৈরি হচ্ছে। রেডিমেট নৌকা তৈরির পাশাপাশি ক্রেতাদের পছন্দের কাঠ ও 

সাইজের নৌকা তৈরির অর্ডার নিচ্ছি। চামবল কাঠের ১৪ হাতি ১ টি কোষা নৌকার অর্ডার নিয়েছি ১২ হাজার টাকায়। এতে প্রায় ২ হাজার টাকা লাভ হবে। গত মৌসুমে প্রায় শতাধিক নৌকা বিক্রি করেন তিনি। 


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৈরিকৃত এসব নৌকার বেশীর ভাগই বিক্রি করা হচ্ছে শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের দেউলভোগ নৌকার হাটে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী লৌহজং উপজেলার গোয়ালীমান্দ্রা সাপ্তাহিক হাটেও রেডিমেট নৌকা বিকিকিনির বড় বাজার রয়েছে।


জেবি/ আরএইচ/