টাঙ্গাইলে বর্ষার শুরুতেই নৌকা তৈরির ধুম


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৪৮ অপরাহ্ন, ৪ঠা জুলাই ২০২৩


টাঙ্গাইলে বর্ষার শুরুতেই নৌকা তৈরির ধুম
ছবিটি টাঙ্গাইল থেকে তোলা

টাঙ্গাইলের নদ-নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। নৌকা তৈরিতে মৌসুমি কাঠমিস্ত্রিরা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। দিনরাত হাতুড়ি-বাটালের ঠুকঠুকানিতে মুখর টাঙ্গাইলের নৌকা তৈরির হাট-বাজারগুলো।


জানা গেছে, মধুপুর ছাড়া জেলার বাকি ১১ উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতে নৌকার প্রয়োজন হয়। এসব উপজেলার ৩২টি হাটে বর্ষা মৌসুমে নৌকা বিক্রি করা হয়। 


বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে নৌকা তৈরির কাঠ মিস্ত্রি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দিনরাত কাঠ চিরানো, তক্তা ও গুঁড়া বানানো, কাঠ মসৃণ করা, তারকাঁটা (ছোট লোহা) ও পাতাম (লোহার পাত) দিয়ে তক্তা জোড়া লাগানো ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিস্ত্রিরা। কাজগুলো তারা বাড়ি বা নৌকার হাটগুলোর কাছাকাছি স্থানে করে থাকেন।


সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠ মিস্ত্রিরা বাড়ির আঙিনায় বা পাড়ার খালি জায়গায়, হাটের পাশে নৌকা তৈরি করছেন।


বলরাম সূত্রধর, বিশ্বজিৎ সূত্রধর, স্বপন সূত্রধর, পলাশ সূত্রধর, হরিমোহন সূত্রধরসহ কয়েকজন নৌকার মিস্ত্রি জানান, এখন প্রায় প্রত্যেক এলাকার বড় রাস্তা পাকা করা হয়েছে। ফলে দূরের যাত্রার জন্য কেউ বড় নৌকা তৈরি করে না। বর্ষায় এ পাড়া থেকে ওপাড়া যাতায়াতের জন্য ছোট ছোট নৌকার প্রয়োজন হয়। তাই বড় নৌকা তৈরি হয় না- ছোট নৌকার কদর বেশি।


আরও পড়ুন: শ্রীনগরে নৌকা তৈরিতে কাঠমিস্ত্রিদের ব্যস্ততা


তারা জানান, বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরির কাজ করেই তাদের সংসার চলে। ছোট সময় থেকে বাপ-দাদার কাছে হাতেখড়ি নিয়েছেন তারা। এ কাজ তাদের নেশা ও পেশা। একটি নৌকা তৈরিতে তিনজনের ২-৩দিন সময় লাগে।


দীর্ঘ ৫৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছেন বাসাইল উপজেলার প্রফুল্ল সূত্রধর (৬৫)। তিনি বলেন, ছোটবেলায় হাতুড়ি ও বাটালের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। অভাবের কারণে পড়াশোনা করা হয়নি। বাপ-দাদারা বলেছেন, কাঠ মিস্ত্রির কাজ করেই পেট চালাতে হবে। তাই বাপ-দাদার সাথে মিস্ত্রির কাজ শিখেছেন। এখন বর্ষার সময় হলে নৌকা তৈরি করেন এবং শুকনো মৌসুমে ঘর, খাট, চেয়ার, টেবিল ড্রেসিং টেবিল, আলনা. আলমারি ইত্যাদি তৈরি করে হাটে বিক্রি করে সংসার চালান।


তিনি বলেন, একটি নৌকা তৈরি করতে ২-৩ দিন সময় ও ৮-১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। হাটে সেই নৌকা ১০-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়।


জেবি/ আরএইচ/