অদম্য ইচ্ছায় ৪৬ বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন কুড়িগ্রামের রহিমা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, ৩১শে জুলাই ২০২৩
৪৬ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন কুড়িগ্রামের মোছা. রহিমা বেগম নামে এক নারী।। শুধু তাই নয় সেই পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৬০ পেয়ে পাস করে দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন তিনি। জেলার কাঁঠাল বাড়ি মহিউস সুন্না মহিলা দাখিল মাদরাসা থেকে তিনি দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
রবিবার(৩০ জুলাই) কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মির্জা নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রহিমা বেগম পেশায় একজন ভাতাপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তিনি বর্তমানে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ কর্মরত আছেন। তার বাবার নাম আছর উদ্দিন। তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খলিলগঞ্জ নাজিরা পাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল সরকার মজনুর স্ত্রী। গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) এসএসসি সমমান পরীক্ষায় কুড়িগ্রাম কাঁঠাল বাড়ি মহিউস সুন্না মহিলা দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে ৩.৬০ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রহিমা বেগম চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর পড়তে পারেননি। সংসারে এক মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলে মেয়ে দুজনে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন। মেয়ের ঘরে এক ছেলে আছে। দীর্ঘ বছর পর মেয়ের ছেলেকে নিয়ে স্কুল যাওয়া আসা করতে পড়াশোনায় আবার উজ্জীবিত হন তিনি। পরে তিনি একটি মাদরাসায় ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করেন। কুড়িগ্রাম কাঁঠালবাড়ি মহিউস সুন্নাহ মহিলা দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিলে ৩.৬৭ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুর্যোগ বিষয়ক শেয়ারিং মিটিং
মোছা. রহিমা বেগম বলেন, আমি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের একজন কর্মচারী। আলহামদুলিল্লাহ, এ বছর এসএসসি পাস করলাম। আমার এসএসসি পাস করার পিছনে আমাদের কলেজের প্রিন্সিপাল স্যারের অবদান রয়েছে। স্যার আমাকে সব সময় উৎসাহিত করত পড়াশুনা করার জন্য। এ কারণেই আমি এসএসসিটা পাস করতে পেরেছি। আমি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এই কলেজে কাজ করছি। সব স্যাররা আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমিও আমার কাজ সবসময় মনোযোগ দিয়ে করি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকের সাফল্য
এ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ মির্জা নাসির উদ্দিন বলেন, “রহিমা বেগম আমার কলেজের একজন কর্মচারী। তিনি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মাদরাসায় দাখিল শ্রেণিতে ভর্তি হন। এবছর এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৩.৬০ অর্জন করেছে। বয়স বা কোনো বাঁধাই তাকে আটকাতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রহিমাকে অভিনন্দন এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে চাইলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।”
জেবি/এসবি