কুড়িগ্রামে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকের সাফল্য


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:২৫ অপরাহ্ন, ২১শে জুন ২০২৩


কুড়িগ্রামে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কৃষকের সাফল্য
ছবি: জনবাণী

কুড়িগ্রামে এই প্রথম বিষমুক্ত মালচিং পদ্ধতিতে বছরে এক খরচে তিনবার তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়ে খুশি চাষিরা। প্রথম বছরে লাভের একাংশ খরচ হলেও পরবর্তীতে কম খরচে অধিক মুনাফা পাওয়ায় তরমুজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে অন্যান্য চাষিদের মধ্যেও। 


কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ করা গেলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাতেও রপ্তাণি করা যাবে তরমুজ।


জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলায় এই প্রথম গ্রীষ্মকালীন পরিবেশবান্ধব বেবী তরমুজ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে সাফল্য পেয়েছে কৃষকরা।


পল্লী কর্মসহাক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ’র) আর্থিক সহায়তায় আরডিআরএস বাংলাদেশ সমন্বিত কৃষি ইউনিট (কৃষিখাত) কর্মসূচির আওতায় জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নে ৩ জন কৃষককে এক বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সহায়তা করেছে। এক বিঘা জমিতে খরচ পরেছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। আড়াই লাখ টাকায় তরমুজ বিক্রি করে তাদের লাভ হয়েছে প্রায় ১লাখ ৭৫ হাজার টাকা। 


রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের তালুককালোয়া কৈয়া গ্রামের কৃষক পবনচন্দ্র সরকার (৪৫) জানান, দুই মাস পরপর লাগানো যায় এই জাতের তরমুজ। শীতের সময়টা বাদ দিয়ে বছরে ৩ বার এর ফলন হয়। মাচা করেই এই জাতের তরমুজ চাষ করতে হয়। এক একটার ওজন হয় ৩ থেকে ৬ কেজি। রং লাল টসটসে এবং সুস্বাধু হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা ও চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।


আরও পড়ুন: মাগুরায় শিলা বৃষ্টিতে পাট চাষীদের সর্বনাশ


ছিনাই ইউনিয়নের পাঠানপাড়া গ্রামের কৃষক রওশন আলী জানান, আমার ১২  শতক জমিতে ২৮ হাজার ৫শত টাকা খরচ হয়েছে। এরমধ্যে মালচিংয়ে আড়াই হাজার টাকা,বাঁশ, কটসুতা ও নেটে ১২ হাজার টাকা, সেচ ও কীটনাশকে ৩ হাজার টাকা, জৈব সার ও রাসায়নিক সারে ৩ হাজার টাকা, কীটনাশকে ৩ হাজার টাকা ও ১০টা লেবার খরচে ৫হাজার টাকাসহ মোট ২৮ হাজার ৬শত টাকা খরচ হয়েছে। আমের সিজন হওয়ায় দাম কিছুটা পড়তি হলেও খরচবাদে আমি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবো। 


আরডিআরএস বাংলাদেশ’র রাজারহাট উপজেলার কৃষিবিদ সোহেল মাহমুদ জানান, পরিবেশবান্ধব, বিষমুক্ত ও সাশ্রয়ী খরচে মালচিং পদ্ধতিতে তিনজন কৃষককে এই সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তারা এই প্রথম তরমুজ চাষ করেছেন। ফলন পেয়ে তারা ভীষণ খুশি। চাষাবাদ পদ্ধতি রপ্ত করায় ভবিষ্যতে এই এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও এতে সম্পৃক্ত হতে পারবেন। এতে জেলার ফলের চাহিদা মিটবে।


এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, এই প্রথম জেলাতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। আমি মাঠ পরিদর্শন করেছি। ফলনও খুব ভালো হয়েছে। চাষিরা এটিকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে পারলে জেলায় ফলের চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলাতেও বিক্রি করে আয় বৃদ্ধি করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।


জেবি/ আরএইচ/