চায়না কোম্পানির মাশরুম উৎপাদনে দেশীয় উদ্যোক্তাদের উদ্বেগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৩ পিএম, ২১শে আগস্ট ২০২৫

চায়না কোম্পানির মাশরুম উৎপাদনে দেশীয় মাশরুম উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) ঢাকার সাভারে অবস্থিত বাংলাদেশ মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত পত্রের মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন উদ্যোক্তা।
ভুইয়া মাশরুমের মালিক আজিজুর রহমান তারেক,জমজম মাশরুমের মালিক মরিয়ম আক্তার লতা, কানু'জ প্রোর্টিনের মালিক রাসেল আলফ্রেড কুইয়া, মাশরুম বাড়ীর মালিক, তপু আইম্মেদ এবং এস টু টি ল্যাবরেটরিজের মালিক স্বপ্না রানী দে স্বাক্ষরিত আবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
উদ্যোক্তারা জানান, বাংলাদেশের মাশরুম উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে সনাতন পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করে আসছে, ধীরে ধীরে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। আমাদের শীতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে, তবে গরমের সময় আমাদের ওয়েস্টার মাশরুম উৎপাদন কষ্টসাধ্য। ২০২৩ সালে অটাম মাশরুম কোম্পানি নামে এক চায়না কোম্পানি আবির্ভাব ঘটে যা সাভারের নবীনগর ঘোড়া পীরের মাজার এলাকায় অবস্থিত।
তারা ছোট পরিসরে মাশরুম উৎপাদন শুরু করে, বর্তমানে ওয়েদার কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ব্যাপক উৎপাদন শুরু করেছে, দৈনিক ৭০০ থেকে ১ হাজার কেজির লক্ষ্যমাত্রা এবং তাদের সম্প্রসারণ কাজ চলমান। তাদের এই উৎপাদিত মাশরুম দেশীয় উদ্যোক্তাদের মার্কেটে বিক্রি করছে কম মূল্যে এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিনামূল্যে।
তারা আগামী দুই বছর স্বল্প মূল্যে এবং বিনামূল্যে মাশরুম বিপণনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা আমাদের দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাদের বিনিয়োগ সক্ষমতা অনেক বেশি। ব্যাপক উৎপাদন সক্ষমতা বিদ্যমান, উন্নত প্রযুক্তি, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, সাবস্টেটের ভিন্নতা, যা আমাদের কাছে অনেকটাই অপরিচিত এবং ব্যয়বহুল।
এর ফলে মাশরুম উৎপাদনকারী, বিপণনকারী, প্রক্রিয়াজাতকারী সবার অস্তিত্ব হুমকির মুখে। দেশীয় মাশরুম উদ্যোক্তারা উদ্বিগ্ন। আমরা দেশীয় মাশরুম উদ্যোক্তারা ওয়েস্টার মাশরুম উৎপাদনে যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও সক্ষম, যদিও গরমের সময় কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তাই আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উন্নত প্রযুক্তি সমন্বয় করা গেলে আমাদেরও উৎপাদন সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পারে।
ওয়েষ্টার মাশরুম ব্যতীত আমদানি নির্ভর ভ্যারাইটি সমূহ চায়না কোম্পানি উৎপাদন করে দেশের চাহিদা পূরণ করলে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করলে সবাই উপকৃত হবে।
উদ্যোক্তারা দেশীয় মাশরুম শিল্পকে টিকিয়ে রাখা এবং উদ্যোক্তাদের উদ্বেগের দিকটি বিবেচনায় নিয়ে বিষয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে দেশীয় চাষীদের রক্ষায় চাষিবান্ধব পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় গাইডলাইন প্রদানের দিকে নজর দিতে অনুরোধ করেছে।
এ প্রসঙ্গে মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের উপ-পরিচালক ড. মো. ফেরদৌস আহমেদ জনবাণীকে বলেন, সরকারের যথাযথ অনুমোদন নিয়েই চায়না কোম্পানি মাশরুম উৎপাদন করছে। সে ক্ষেত্রে তাদের উৎপাদনে কোন বাধা নেই। উন্মুক্ত বাজারের ক্ষেত্রে সকলে পণ্য বিক্রয় করতে পারবে তবে দেশিয় উদ্যোক্তা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে দিকে আমরা নজর রাখছি।
এসডি/