বৈঠকের ফল শূন্য, আবার হামলা শুরু


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বৈঠকের ফল শূন্য, আবার হামলা শুরু

বেলারুশে ইউক্রেইন-রাশিয়া প্রথমদফা বৈঠকে যুদ্ধ সংকট সমাধানে আলোচনা এগিয়ে নিতে কিছু পথ চিহ্নিত হয়েছে। উভয় দেশের প্রতিনিধিরা সেগুলো নিয়ে পরামর্শের জন্য যার যার রাজধানীতে ফিরে গেছেন। তবে আলোচনা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনে ফের হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এমন দাবি করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, রুশ সেনারা বিমানবন্দর থেকে নিকোলায়েভ হাইওয়ে এবং কোল্ড স্টোরেজ প্ল্যান্টের কাছে একটি বলয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘণ্টাখানের আগে ইউক্রেনের স্টেট সার্ভিস ফর স্পেশাল কমিউনিকেশনস অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রোটেকশন তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে বিবিসি-ইউক্রেনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, খেরসন বিমানবন্দরের কাছে শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

এদিকে রাশিয়ার চার দাবি মেনে না নিলে ইউক্রেন ইস্যুতে আপস করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে সোমবার এক টেলিফোন আলাপের পর এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন এমনটা জানিয়েছে। খবর বিবিসি’র।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ম্যাখোঁ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ফোন করে ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেন।

ইউক্রেনে সব ধরনের হামলা, বিশেষ করে বেসামরিক লোকজন, সড়ক এবং অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ম্যাখোঁ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ম্যাখোঁর অনুরোধ রাখতে তার সদিচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। কিন্তু ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে স্পষ্ট যে, যেসব যুক্তি এবং দাবিতে ইউক্রেনের হামলার নির্দেশ পুতিন দিয়েছিলেন তা থেকে একচুল সরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

পশ্চিমাদের কাছ থেকে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞায় পুতিন কোনো চাপ বোধ করছেন না, তেমন কোনো লক্ষণ ওই বিবৃতিতে পাওয়া যায়নি।

ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়, পুতিন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে বলেছেন- ‘বোঝাপড়া একমাত্র সম্ভব যদি নিরাপত্তা নিয়ে রাশিয়ার বৈধ উদ্বেগ বিবেচনায় নেওয়া হয়।’

রুশ বিবৃতি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, “ক্রাইমিয়ার ওপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে হবে, ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ ও নাৎসীমুক্তকরণের সমাধান হতে হবে এবং ইউক্রেন যেন একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্র থাকে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।”

ফরাসি প্রেসিডেন্ট অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংঘাত যাতে আয়ত্তের বাইরে না চলে যায় তার জন্য প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ পুতিনকে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছেন।

জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেন অব ইউক্রেন এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, কিয়েভের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। আক্রমণের ক্ষমতা কমে যাওয়া সত্ত্বেও শত্রুরা সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।

ফেসবুক পোস্টে আরও দাবি করা হয়, হামলা চালানোর সময় বেলারুশের উচ্চ প্রশিক্ষিত সামরিক ইউনিটগুলোকে সঙ্গে রাখার এবং রুশ সামরিক বিমান চলাচলের জন্য বেলারুশিয়ান আকাশসীমা ব্যবহার করারও পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।

অবশ্য সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছিল যে, ইউক্রেনে তারা এখনও বেলারুশের সেনা উপস্থিতির কোনো ইঙ্গিত পায়নি। অন্যদিকে রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনেও হামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির সরকার।

প্রসঙ্গত, সোমবার বেলারুশের গোমেল অঞ্চলে চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফা আলোচনার আগে উভয় পক্ষই তাদের রাজধানী শহরে ফিরে গেছে। প্রতিটি দেশই নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসবেন এমনটাই সিদ্ধান্ত। তবে এরই মধ্যে রুশ বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলের মাইকোলাইভ ও নিউ কাখোভকার মধ্যবর্তী শহর খেরসনে হামলা শুরু করেছে।

এসএ/