ইউক্রেনে হামলা বন্ধে পুতিনের ৩ শর্ত
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
ইউক্রেনে রাশিয়ার
সর্বাত্মক হামলা গড়িয়েছে ষষ্ঠ দিনে। রুশ সামরিক বাহিনীর ব্যাপক হামলায় এই কয়েকদিনেই
পূর্ব ইউরোপের ছবির মতো সুন্দর এই দেশটির অনেক এলাকাই পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। আবার
হামলা শুরুর পর ইউক্রেন ও রুশ প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকেও মেলেনি সমাধান
সূত্র।
এই পরিস্থিতিতে
ইউক্রেনে হামলা বন্ধের জন্য তিনটি শর্ত সামনে এনেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির
পুতিন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ফোনালাপের
পর রুশ প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য
জানানো হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে সোমবার টেলিফোন আলাপের পর
দেওয়া এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিয়ে রাশিয়ার ‘বৈধ’
উদ্বেগ বিবেচনায় নিলেই ইউক্রেন সংকটের সমাধান সম্ভব।
অন্যদিকে, ফরাসি
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে- প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ফোন করে
ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে অনুরোধ করেছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। একইসঙ্গে
ইউক্রেনে সবরকম হামলা, বিশেষ করে বেসামরিক লোকজন, সড়ক এবং অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধের
দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ফ্রান্সের বিবৃতিতে
দাবি করা হয়, ম্যাক্রোঁর অনুরোধ রাখতে সদিচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। কিন্তু
ওই টেলিফোন আলাপের পর ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয় তাতে স্পষ্ট যে,
যেসব যুক্তি ও দাবিতে ইউক্রেনের হামলার নির্দেশ প্রেসিডেন্ট পুতিন দিয়েছিলেন তা থেকে
তার একচুলও নড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
পশ্চিমাদের
কাছ থেকে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞায় প্রেসিডেন্ট পুতিন যে কোনো চাপ বোধ করছেন তারও কোনো
লক্ষণ অন্তত রুশ বিবৃতিতে পাওয়া যায়নি। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়, ভ্লাদিমির পুতিন
ফরাসি প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, বোঝাপড়া একমাত্র সম্ভব যদি নিরাপত্তা নিয়ে রাশিয়ার
বৈধ উদ্বেগ বিবেচনায় নেওয়া হয়।
ক্রেমলিনের
বিবৃতি অনুযায়ী ইউক্রেনে হামলা বন্ধের জন্য তিনটি শর্ত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
ফোনালাপে ফরাসি প্রেসিডেন্টকে পুতিন বলেছেন, ‘ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্ত্ব
মেনে নিতে হবে, ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ ও নাৎসীমুক্তকরণের সমাধান হতে হবে এবং ইউক্রেন
যেন একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্র থাকে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
এদিকে যুদ্ধবিরতির
লক্ষ্যে বেলারুশ সীমান্তে সোমবার এক আলোচনায় অংশ নেয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল।
পরে আলোচনা শেষে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের আগে দুই দেশের প্রতিনিধিরা শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে
পরামর্শের জন্য নিজ নিজ দেশে ফিরে যান।
অবশ্য এই বৈঠক
থেকে বড় কোনো অর্জনের আশা কোনো পক্ষেরই তেমন ছিল না। ইউক্রেন দাবি করেছে এখনই যুদ্ধ
বন্ধ করে তার ভূখণ্ড থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যদিকে ক্রেমলিন বলেছে,
এমন সমাধান হতে হবে যাতে দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষা হয়।
জি আই/ওআ