ইবিতে র‍্যাগিং ও ভাঙচুর, তিনজন স্থায়ীসহ ছয়জন বহিষ্কার


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:১৪ অপরাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৩


ইবিতে র‍্যাগিং ও ভাঙচুর, তিনজন স্থায়ীসহ ছয়জন বহিষ্কার
বহিষ্কারকৃত ৬ শিক্ষার্থী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের(ইবি) চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুর ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় তিনজন শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও বাকি তিনজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। 


মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এবং ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সেলিনা নাসরীন। 


সভা শেষে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বহিষ্কারের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমানকে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে মিজানুর ইমন ও শুভর অধিকতর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বলে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকী তিনজন আকিব, পুলক ও সাকিবের সংশ্লিষ্টতা কম থাকায় তাদের এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়। 


এছাড়াও গত ১০ জুলাই মেডিক্যাল ভাংচুরের ঘটনায় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সাথে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থী সালমান আজিজ, আতিক আরমান কাব্যের সঙ্গে থাকলেও সরাসরি সংশ্লিষ্ট না থাকায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে। তবে সর্বক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন।


এসময় র‍্যাগিংয়ে ভুক্তভোগী তাহমিন ওসমান বহিষ্কারারের বিষয়ে বলেন, আমি মনে করি প্রশাসন সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। যে দুইজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে শুভ আর ইমন ভাই। তারা এগ্রেসিভ ভাবে র‍্যাগ দিয়েছিলো। বাকিরাও জড়িত ছিলো কিন্তু তারা এক্সট্রিম পর্যায়ের না। 


এছাড়াও তিনি বলেন, আমি চাইনি আমি যে মেন্টালি প্রেশার ফেস করেছি সেটা অন্য কেউ আর না করুক। এইজন্য আমি একাই দাঁড়ায়ছিলাম। আমি জানতাম আমার পাশে কেউ থাকবে না। তারপরও আমি জিদ নিয়ে দাড়িয়েছি। আমার পরিবার বলেছিলো তোমার যা হওয়ার হবে তুমি চিন্তা করো না তোমার পাশে আমরা আছি। তুমি সাহস দেখাও। তুমি যেহেতু সত্যের পথে আছো এগিয়ে যাও। তোমার ডিপার্টমেন্টে যেনো এরকম কোনো ঘটনা আর না ঘটে তার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তুমি জোরদার দাবি জানাও। এই জন্য আমি এই সাহসিকতা দেখিয়েছিলাম।


এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া পরিবেশ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা সহাবস্থানে একে অপরের সহযোগিতা করবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা শিক্ষাবান্ধব এবং র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।


প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই চিকিৎসা কেন্দ্রের জরুরী বিভাগে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য, সালমান আজিজ ও আতিক আরমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ১৫ জুলাই ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এবং ছাত্র উপদেষ্টা সেলিনা নাসরীনকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।


এছাড়াও গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর র‍্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দেয় ঐ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমান। ঘটনা তদন্তে ১০ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন প্রফেসর সাইফুল ইসলাম। 



আরএক্স/