ইবিতে র্যাগিং ও ভাঙচুর, অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৩
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুর ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এসময় অভিযুক্তদের কেন স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করা হবে না সেই মর্মে আত্মপক্ষ সমর্থন করে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করার জন্য বলা হয়।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ০৩/১০/২০২৩ তারিখ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাম্প্রতিক সময়ে র্যাগিং এর বিষয়ে এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে ভাংচুরের বিষয়ে পৃথক ২ টি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তা গ্রহন করা হয়। উক্ত রিপোর্টের আলোকে র্যাগিং এ সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় ৫ জনকে এবং মেডিকেল সেন্টারে ভাংচুর করার সংশ্লিটতা পাওয়ায় ১ জনকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। কেন স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করা হবে না সেই মর্মে আত্মপক্ষ সমর্থন করে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এর আগে বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপাচার্যের কার্যালয়ে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত। এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এবং ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সেলিনা নাসরীন।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আজ ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত সবার সম্মতিতে এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে র্যাগিংয়ের অভিযুক্ত পাঁচজন এবং চিকিৎসা কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় একজনকে
সাময়িক বহিষ্কারের।
এছাড়াও তিনি বলেন, জড়িতদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। তাদের জবাবের প্রেক্ষিতে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেয়া হবে।
র্যাগিং এর শিকার শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমান বলেন, ইমন ভাই ও শুভ ভাই এগ্রেসিভ ভাবে আমাকে র্যাগ দিয়েছিলো। আমি চাই তাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক তা না হলে পরবর্তীতে তারা আবার ক্যাম্পাসে ফিরবে। যার ফলে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবো। তাই আমি মনে করি দুইজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করে বাকীদের বিষয়ে প্রশাসন যা ভালো বুঝবে। তবে আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেনো র্যাগিং না হয়।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া পরিবেশ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা সহাবস্থানে একে অপরের সহযোগিতা করবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা শিক্ষাবান্ধব এবং র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই চিকিৎসা কেন্দ্রের জরুরী বিভাগে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য, সালমান আজিজ ও আতিক আরমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ১৫ জুলাই ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এবং ছাত্র উপদেষ্টা সেলিনা নাসরীনকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়াও গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দেয় ঐ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমান। ঘটনা তদন্তে ১০ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন প্রফেসর সাইফুল ইসলাম।
জেবি/এসবি