বাংলাদেশ কি হারাতে পারবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে, পরিসংখ্যান কি বলে?
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ০২:২২ অপরাহ্ন, ২৪শে অক্টোবর ২০২৩

দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল খান, অনেক নাটকিয়তার পর তাকে ছাড়াই ভারতে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে পারি জমিয়েছে বাংলাদেশ দল। শুরু থেকেই ওপেনাররা ব্যার্থ। লিটন কুমার দাস, কখনো ধারাবাহিক নন, এক ম্যাচে রান পেলে, পরবর্তী ৫-৭ ম্যাচে তাকে জেনো হারিকেন জালিয়ে খুজতে হয়। আর তানজিদ হাসান তামিম নামটি দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল খানের সাথে মিলে গেলেও এখনো নিজের জাত চেনাতে ব্যার্থ এই ইয়াং স্টার। যদিও তার প্রতিভা রয়েছে, কিন্তু, এটা তো বিশ্বকাপ প্রতিভার চেয়েও এখানে অভিঙ্গতা বেশি মূল্যবান। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ^কাপ জয়ী তারকার ব্যাটিং পরিসংখ্যান অবশ্য বেশ ভালো খুব দ্রত রান তুলতে পারে এবং ১০০ এর উপরে তার ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট।
ওডিআই ক্রিকেটে মুখোমুখি লড়াইয়ে বাংলাদেশের থেকে যোজন যোজন এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ওয়াানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মোট ২৪টি ম্যাচ খেলেছে । এরমধ্যে প্রোটিয়াারা জিতেছে ১৮টি ম্যাচ। আর বাংলাদেশ জয় লাভ করেছে ৬টি ম্যাচে।
তবে, ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড ভক্তদের আশা জাগাতেই পারে। গত বছরের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল লাল-সবুজের দল।
আর ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুই দলের মধ্যকার মুখোমুখি লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা চারবার একে অপরের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে। চারবারের সেই সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দলই সমান দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। ২০০৭ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর ইতিহাস রয়েছে টাইগারদের। এবারের বিশ্বকাপেও এর পুনরাবৃত্তির ঘটাতে চাইবে সাকিব বাহিনী। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কন্ঠে জেনো সেই আত্নবিশ্বাসেরই হাতছানি।
ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালকের ম্যাচে যদি সবাই মিলে ভালো বোলিং-ব্যাটিং করতে পারি তাহলে আমাদের জেতার সম্ভাবনা আছে। ওয়ানডেতে যদি আমরা আমাদের সেরাটা দিতে পারি তাহলে আমরা জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারি।”
আফগানিস্তানকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের উরন্ত সূচনা হয়েছিল। কিন্তু এরপরই হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে টাইগাররা। একে একে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, গত দুই আসরের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড ও স্বাগতিক ভারতের কাছে খুব বাজেভাবে হেরেছে সাকিব বাহিনী।
বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। স্বাবেক বিশ্বচ্যম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছে প্রোটিয়ারা, তবে পচা শামুকেও নাকি পা কাটে... নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে অঘটনের শিকার হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
এতো এতো ব্যর্থতার পরও কেন মুশফিকুর রহিমের মতো একজন পরিক্ষিত ব্যাটারকে নিচে খেলানো হচ্ছে? মিঃ ডিপেন্ডেবল খ্যাত এই তারকাকে মিডল অর্ডারের এত ব্যর্থতার পরও ৪ নাম্বারের পরিবর্তে ৬ নাম্বারে কেন খেলানো হচ্ছে প্রতিটি ম্যাচে? মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নিসঃন্দেহে বেষ্ট ফিনিশার বাংলাদেশের , সাইলেন্ট কিলার খ্যাত এই তারকাকে তো নামানো হচ্ছে ৮ নাম্বারে, এসব দেখে বাংলাদেশী ভক্ত সমর্থকদের পাশাপাশি অবাক পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। তেমনি পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা অবাক হয়েছেন, ব্যাটিং ব্যর্থতার পরেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটারকে এত নিচে খেলানো নিয়ে।
এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের স্বাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘সাকিব ১০ ওভার বোলিং করে থাকে এবং টপঅর্ডারে একজন বিশেষজ্ঞ ব্যাটারের চাহিদা পূরণ করে থাকে। বাংলাদেশের কেউ একটি জিনিস আমাকে একটু বোঝান, যখন আপনি মিডল অর্ডার নিয়ে ধুঁকছেন; আপনার সবচেয়ে অভিজ্ঞ একজন ব্যাটার মাহমুদউল্লাহকে কেন ৭-৮ নম্বরে খেলানো হয়। তার টেকনিক ভালো, অভিজ্ঞতা আছে তাকে আপনারা ফিনিশার হিসেবে রেখে দিয়েছেন। যেখানে মিডল অর্ডার ব্যর্থ হচ্ছে।”
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ বলেন, ‘মুশফিক ৬ নম্বরে এসেছে। সে ভালো ফর্মে আছে। সাকিব নেই তার যেই সুযোগটা ছিল সেটা ততক্ষণে শেষ হয়ে গেছে। আপনি কিছুটা হলেও তো পরিবর্তন করতে পারতেন। কারণ সাকিব নেই। জুটি প্রয়োজন ছিল। মুশফিক ভালো ফর্মে। এই দুজনকে ওপরে খেলালে তারা খেলাটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত।’
বিশ্বকাপের মঞ্চেও ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ করা যায়নি। যার প্রভাব পড়ছে ম্যাচের ফলাফলেও। সেমিফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা বাংলাদেশ হারের হ্যাটট্রিক করে এখন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে। পাগলাটে টিম সিলেকশন আর ব্যাটিং অর্ডারে রদবদলে টিম ম্যানেজমেন্টকে দুষছেন সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সমর্থকরাও।
ভারতের বিপক্ষে হারের পর আরও একবার কাঠগড়ায় হাথুরুসিংহে। ভারতের সাবেকরা যেমন প্রশ্ন তুলেছেন, পুনের ব্যাটিং সহায়ক উইকেট দেখেও কেন একজন বাড়তি স্পিনার খেলানো হলো। পুনেতে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের উদ্বোধনী দুই ব্যাটার ভালো শুরু পেলেও টপঅর্ডার আর মিডল অর্ডারে ধস থামানো যায়নি।সাতে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৩৬ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে মান বাঁচে বাংলাদেশের। আড়াইশো ছাড়ায় দলীয় সংগ্রহ। এদিন মুশফিক করেন ৩৮ রান। বা-ঊরুতে চোটের কারণে খেলতে পারেননি সাকিব আল হাসান। তার জায়গায় দলে নেওয়া হয় স্পিনার নাসুম আহমেদকে।
জেবি/এসবি