বাঙালী হলেও প্রিয় খাবারের তালিকায় প্রাধান্য মুঘল খাবারের


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, ২৪শে অক্টোবর ২০২৩


বাঙালী হলেও প্রিয় খাবারের তালিকায় প্রাধান্য মুঘল খাবারের
ছবি-সংগৃহীত

মুঘলদের খাবার, খাবার গুলোর নাম শুনলেই যেন জি¦ভে জ¦ল চলে আসে। আমরা বাঙালী হলেও আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকা করলে দেখা যাবে তাতে মুঘল খাবারের প্রাধান্য বেশী। 

১৫২৬ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশে চলে মুঘলদের রাজত্ব। এরপর পেরিয়ে গেছে ২০০ বছর, তবুও উপমহাদেশে রসনার তৃপ্তিতে আজও আমাদের প্রিয় খাবারের তালিকায়, মোগলাই বা মোঘল খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। পোলাও, কোরমা, বিরিয়ানি ছাড়াও আরও একটা জনপ্রিয় খাবারের নাম নিহারি বা নেহারি।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, কথিত আছে মুঘল আমলে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ শুরুর আগে নেহারি খাওয়ানো হতো, যেনো দুপুর অবধি শ্রমিকদের পেটে খুধা না লাগে এবং শরীরে শক্তির ঘাটতি না-হয়। মজাদার এই নেহারির মুল উপাদান, গরু, ছাগল, উট, দুম্বা, ও ভেড়ার পায়া। হরেক রকম মসলার সাথে সারা রাত ধরে অল্প আচে রান্না করা হয় এই সুস্বাদু ও শক্তিবর্ধক খাবার, নেহারি।

যেকারণে হাড্ডির মজ্জা  আর পায়ার মাংসের সাথে মিশ্রণ হয়ে লোভনীড এই খাবার প্রস্তুত করা হয়। সম্রাট বাবরের অন্যতম প্রিয় খাবার ছিলো এই নিহারি।

চীনা, কন্টিনেন্টাল ও ইউরোপীয় খাবারের মাঝে-ও আমাদের এই উপমহাদেশের মানুষের কাছে মোগল খাবারের গুরুত্ব অনেক বেশি।

মসলাদার তৈল যুক্ত মোগলাই খাবারের নাম শুনলে জিভে জল আসে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না। রাজধানীর পুরান ঢাকার অলিগলিতে মুঘল সাম্রাজ্যের খাবারের ধারাবাহিকতা এখনো বিদ্যমান। ১৩৯৮ সালে তৈমুর লংয়ের হাত ধরে মুঘলদের এদেশে আগমন ঘটে।  

মোঘল খাবারের উৎস পারস্য বা ইরান থেকে। মূলত মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর দিল্লি সলতানাৎ প্রতিষ্ঠার পরও ভুলতে পারেননি তাঁর পিতৃপুরুষের ভূমিকে। মোগলাই খাবারের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, মুঘলরা বেশ ভালোই খাদ্যরসিক ছিলেন। 

ভারতকে তাঁরা নতুন রেসিপি আর নতুন খাবার শুধু দেননি, প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত পুরনো ভারতীয় খাবারকেও নিজেদের রেসিপিতে আরও সুস্বাদু করে তুলেছিলেন। মুঘল খাবারের বিশেষত্ব হলো এর ঘ্রাণ। তাদের খাবারে ভারতীয় এবং মুঘল সংস্কৃতি মিশে খাবার তৈরির উপকরণের তালিকাও হয় দীর্ঘ ।  ‘নিহারি’ বা ‘নেহারি’ ফারসি শব্দ, এর অর্থ 'সকাল'। মুঘল আমলে লখনৈ রসুইঘর থেকে নেহারির প্রচলন শুরু হয়।


এছাড়াও ফিরনি, ফালুদা, হালুয়া, জিলাপি, গোলাপজাম, কুলফি, শাহি টুকরাসহ লোভনীয় সব মিষ্টি খাবার একের পর এক এসেছে মুঘলদের থেকে। 

আমরা বাঙালী হলেও আমাদের প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে এসব খাবার থাকবেই।