ফিরে গেলেন ভারতীয় তরুণী, দেখা পেল না স্বামীর
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন, ৩রা ডিসেম্বর ২০২৩
পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়ায় এসে স্বামীর দেখা না পেয়ে ফিরে গেলেন ভারতীয় তরুণী রিয়া বালা (৩২)।
তার স্বামী বিটু রায় (২৪)। বাড়ি তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের শিবচন্ডি গ্রামে। বাবা কৃষক অখিল চন্দ্র রায়র। তাদের পরিচয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপরেই তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
একপর্যায়ে ভারতে গিয়ে ওই তরুণীকে বিয়েও করেন বিটু। ঘটনাক্রমে প্রতারণাল আশ্রয় নিয়ে বেশ কিছুদিন সংসার করে স্ত্রীকে রেখে বাংলাদেশে ফিরে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।
কুলকিনারা না পেয়ে স্বামীর খোঁজে গত বুধবার বাংলাদেশে আসেন ওই তরুণী রিয়া বালা। এরপর খবর পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান বিটু রায়। অবশেষে স্বামীর দেখা না পেয়ে নিরাশ হয়ে (২ ডিসেম্বর) শনিবার দেশে ফিরতে হয়েছে রিয়া বালাকে।
শনিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে শূন্যরেখায় রিয়া বালাকে তাঁর স্বজনদের হাতে তুলে দেয় তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন। রিয়া বালা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনা এলাকার বাসিন্দা।
তাঁর বাবা শ্যামল কান্তি বালা ভারতীয় রেলওয়েতে চাকরি করেন বলে জানা গেছে। রিয়া স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। আর বিটু রায় উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৯ নভেম্বর বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে তেঁতুলিয়ায় বিটু রায়ের বাড়িতে আসেন রিয়া বালা। সঙ্গে বিয়ের প্রমাণ হিসেবে নিয়ে আসেন পঞ্চায়েত প্রধানের প্রত্যয়নপত্র ও কিছু ছবি। তাঁর আসার খবরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান বিটু। এর মধ্যে স্বামীর পরিবারের লোকজন রিয়া বালাকে মেনেও নিচ্ছিলেন না।
শুক্রবার স্বামীর বাড়িতে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বিকে ফোন করে সহযোগিতা চান ওই তরুণী। স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যদের সহযোগিতা ইউএনও তাঁকে উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া থানার নারী ও শিশু সেলে রাখার ব্যবস্থা করেন।
এ সময় বিটু রায়ের বাবা অখিল চন্দ্রও রায়কেও ডেকে আনা হয়। তিনি ছেলে ফিরে এলে তাঁকে নিয়ে ভারতে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।
শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি ওই তরুণীকে বাংলাবান্ধা শূন্যরেখায় নিয়ে তাঁর স্বজনদের হাতে তুলে দেন।
ভারতীয় তরুণী স্থানীয় প্রশাসনকে জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার শিকারপুর এলাকায় বিটু রায়ের পিসির (ফুফু) বাড়িতে রিয়াকে বিয়ে করেন বিটু। বিয়ের পর তাঁরা সেখানে প্রায় এক মাস বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। দেশে ফিরে রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করেন বিটু। বাধ্য হয়ে তিনি স্বামীর খোঁজে বাংলাদেশে আসেন।
বিটু রায়ের বাবা অখিল চন্দ্র রায় বলেন, বিটু ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করত। গত দুর্গাপূজার আগে ভারতে গিয়ে কিছুদিন ছিল। তবে বাড়িতে এসে বিয়ের ব্যাপারে কিছুই বলেনি। এমনকি আমার বোন সেখানে আছে, সেও এই বিয়ের বিষয়ে কোনো কিছু বলেনি।
তেঁতুলিয়ার উপজেলা নিবার্হী অফিসার ফজলে রাব্বি বলেন, ‘নিরাপত্তা চেয়ে একটি তরুণী গতকাল শুক্রবার আমাকে ফোন করেন। পরে আমরা তাঁকে উদ্ধার করে জানতে পারি, তিনি ভারত থেকে এসেছেন। এমনকি তিনি বিয়ের কাগজপত্রও সঙ্গে এনেছিলেন। তবে ছেলেটিকে পাওয়া না যাওয়ায় মেয়েটির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাঁকে পুলিশের নারী ও শিশু সেলে রাখা হয়।এরপর আমরা ওই তরুণীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তার পরিবারকে পেলে তার (তরুণীর) ইচ্ছায় তাঁকে তাঁরস্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আরএক্স/