সৌদি আরব সবসময় আমাদের হৃদয়ের কাছাকাছি : প্রধানমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:১১ অপরাহ্ন, ৬ই ডিসেম্বর ২০২৩


সৌদি আরব সবসময় আমাদের হৃদয়ের কাছাকাছি : প্রধানমন্ত্রী
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল-এর মধ্যে কনসেশন চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরব বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম ও একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। এ প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে একটি শক্তিশালী ও টেকসই অংশীদারত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’কে আশার বাতিঘর।


বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) ও রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই) এর মধ্যে কনসেশন চুক্তি সই অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।


আরও পড়ুন: বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় শেখ হাসিনা


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল প্রকল্পটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আশার বাতিঘর। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই আধুনিক টার্মিনালটি আমাদের বন্দরের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে এবং নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য সহজ করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির পথও সুগম করবে।


সরকারপ্রধান বলেন, এটি বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করবে।


তিনি বলেন, আমরা এমন একটি ভবিষ্যতের অপেক্ষায় আছি যেখানে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির একটি চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।


আরও পড়ুন: এক পর্যায়ে জামায়াতই বিএনপিতে মূল নেতৃত্ব দেবে : কাদের


রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল এর সঙ্গে কনসেশন চুক্তি সইয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে শক্তিশালী এবং টেকসই অংশীদারিত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। এই কনসেশন চুক্তি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের দুই দেশের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি এবং অটল অঙ্গীকারের উদাহরণ। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র আরও জোরদার করবে। এই চুক্তি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।


সৌদি আরব বাংলাদেশের বন্ধু এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সৌদি আরবকে সবসময় আমাদের হৃদয়ের কাছাকাছি পেয়েছি। বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি আস্থা ও সহযোগিতার জন্য সৌদি সরকার, সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।


শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, আরএসজিটিআই যে সুনামের সঙ্গে জেদ্দা পোর্ট টার্মিনালসহ অন্যান্য টার্মিনাল পরিচালনা করছে, সেই দক্ষতা ও প্রযুক্তিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি পরিচালনা করবে বলে আমি আশা করি । এতে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমুন্নীত হবে।


আরও পড়ুন: এক মাসের মধ্যেই কমবে আলুর দাম : বাণিজ্যমন্ত্রী


এর পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) এবং রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই) কনসেশন চুক্তি সই হয়।


চুক্তিতে সই করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আরএসজিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্স অ. ফলেই।


এ সময় সফররত সৌদি আরবের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানসহ সৌদি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বে (জি২জি) ভিত্তিতে পরিচালনা করবে রেড সী গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই)।


রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই) সৌদি সরকার মনোনীত একটি স্বনামধন্য গ্লোবাল টার্মিনাল অপারেটর। জেদ্দা পোর্ট টার্মিনালসহ বিশ্বের বিভিন্ন টার্মিনাল পরিচালনা করছে আরএসজিটিআই।


সংশ্লিষ্টরা জানান, আরএসজিটিআই আগামী ২২ বছরের জন্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে। দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাসের মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি লাভবান হবে।


জেবি/এজে