যা যা আছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:১০ অপরাহ্ন, ২৭শে ডিসেম্বর ২০২৩


যা যা আছে  আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে
ফাইল ছবি

আগামি ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। 


বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই ইশতেহার পাঠ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের ইশতেহারের থিম বিষয় হলো, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ আর ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’। আর এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী স্লোগান হলো, সাথে আছি, থাকবো কাল, শেখ হাসিনাই ধরবে হাল।


আরও পড়ুন: আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ: শেখ হাসিনা


এর আগে এ ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিশেষ পদক্ষেপ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের সুশাসনের ওপর জোর দিয়ে আসন্ন নির্বাচনের ইশতেহার প্রস্তুত করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের রূপরেখা সংবলিত ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের স্লোগান ছিল— দিনবদলের সনদ।


আওয়ামী লীগের ইশতেহারে যে ১১ বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে—


১. দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

২. কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

৩. আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

৪. লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থা, যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।

৫. দৃশ্যমান অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানো।

৬. ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

৭. নিম্নআয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা।

৮. সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করা।

৯. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

১০. সাম্প্রদায়িকতা এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধ করা।

১১. সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার ঘটানো।

ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন বিষয়কে তুলনা করে একটি চিত্র তুলে ধরা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শেষ বছর ২০০৬ সালে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ কোথায় ছিল আর আজ বাংলাদেশ কোথায় অবস্থান করছে তার সংক্ষিপ্ত একটি তুলনামূলক চিত্র আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই:


* অর্থনীতি

২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. প্রবৃদ্ধি ৫.৪০ শতাংশ ৭.২৫ শতাংশ।

২. মাথাপিছু আয় (নমিনাল) ৫৪৩ মার্কিন ডলার ২ হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলার ৫ গুণ বৃদ্ধি।

৩. মাথাপিছু আয় (পিপিপি) ১ হাজার ৭২৪ মার্কিন ডলার ৮ হাজার ৭৭৯ মার্কিন ডলার ৫ গুণ বৃদ্ধি।

৪. বাজেটের আকার ৬১ হাজার কোটি টাকা ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ১২ গুণ বৃদ্ধি।

৫. জিডিপি’র আকার ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৭২ কোটি টাকা ৫০.৩১ লক্ষ কোটি টাকা ১২ গুণ বৃদ্ধি।

৬. বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২১ হাজার ৫ শত কোটি টাকা ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা ১৩ গুণ বৃদ্ধি।

৭. রপ্তানি আয় ১০.০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৫২.৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৫ গুণ বৃদ্ধি।

৮. বার্ষিক রেমিটেন্স আয় ৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ২৪.০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৬ গুণ বৃদ্ধি।

৯. আমদানি ব্যয় ১৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রায় ৬ গুণ বৃদ্ধি।

১০. বিনিয়োগ (জিডিপি’র হারে) ২২.৭৮ শতাংশ ৩২.০৫ শতাংশ প্রায় দেড় গুণ বৃদ্ধি।

১১. বার্ষিক রাজস্ব আয় ৩৭ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা ৫ লক্ষ কোটি টাকা।


মানুষের জীবনমান উন্নয়ন

২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. দারিদ্র্যের হার ৪১.৫১ শতাংশ ১৮.৭ শতাংশ অর্ধেক কমেছে।

২. অতি দারিদ্র্যের হার ২৫.১ শতাংশ ৫.৬ শতাংশ প্রায় ৫ গুণ কমে এসেছে।

৩. মানুষের গড় আয়ু ৫৯ বছর ৭২.৮ বছর। ৪ নিরাপদ খাবার পানি ৫৫ শতাংশ ৯৮.৮ শতাংশ ২ গুণ বৃদ্ধি।

৫. সেনিটারি ল্যাট্রিন ৪৩.২৮ শতাংশ ৯৭.৩২ শতাংশ ২ গুণের বেশি বৃদ্ধি।

৬. শিশু মৃত্যুর হার (প্রতি হাজারে) ৮৪ জন ২১ জন ৪ গুণ কমেছে।

৭. মাতৃমৃত্যু হার (প্রতি লাখে) ৩৭০ জন ১৬১ জন প্রায় আড়াই গুণ কমেছে।


বিদ্যুৎ

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৩ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট ২৮ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট ৮ গুণ বৃদ্ধি।

২. বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর হার মোট জন সংখ্যার ২৮ শতাংশ মোট জনসংখ্যার ১০০ শতাংশ প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি।


স্বাস্থ্য

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. সরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৩৩ হাজার ৫৭৯ ৭১ হাজার ২ গুণ বৃদ্ধি।

২. সরকারি ডাক্তারের সংখ্যা ৯ হাজার ৩৩৮ জন ৩০ হাজার ১৭৩ জন ৩ গুণ বৃদ্ধি।

৩. সরকারি নার্সের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬০২ জন ৪৪ হাজার ৩৫৭ জন প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি।

৪. মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের সংখ্যা ১ হাজার ৯৯৮ জন ৪৪ হাজার ৩৫৭ জন ৩ গুণ বৃদ্ধি।

৫. নার্সিং কলেজ অ্যান্ড ইন্সটিটিউটের সংখ্যা ৩১টি ৯৯টি ৩ গুণ বৃদ্ধি।


কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ১৯৯৮-২০০১ মেয়াদে মোট ১০ হাজার ৭২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি এসে সকল ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। বর্তমানে ১৪ হাজার ৯৮৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র হতে বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ঔষধ প্রদান করা হয়।


শিক্ষা

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. স্বাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ ৭৬.৮ শতাংশ ২ গুণ বৃদ্ধি।

২. প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ ৫৪ শতাংশ ৯৮.২৫ শতাংশ ২ গুণ বৃদ্ধি।

৩. কারিগরী শিক্ষায় ভর্তির হার ০.৮ শতাংশ ১৭.৮৮ শতাংশ ২২ গুণ বৃদ্ধি।

৪. মাধ্যমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষকের সংখ্যা ৫৯ হাজার ৫৫ জন ১ লক্ষ ১ হাজার ৮২৮ জন ২ গুণ বৃদ্ধি।

৫. প্রাথমিক বিদ্যালয় সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬৭২টি ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮৯১টি প্রায় ২ গুণ বৃদ্ধি।

৬. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা ৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৮৯ জন ৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ২০৩ জন প্রায় ২ গুণ বৃদ্ধি (২০০৯ হতে ২০২২ পর্যন্ত মোট ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩১১ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।)

৭. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষক সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৪১ জন ৪ লক্ষ ৩ হাজার ১৯১ জন ৩ গুণ বৃদ্ধি।

৮. কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) ৯টি ১৬৬টি ১৮ গুণ বৃদ্ধি।


কৃষি

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. দানাদার শস্যের উৎপাদন ১ কোটি ৮০ লক্ষ মেট্রিক টন ৪ কোটি ৯২ লক্ষ ১৬ হাজার মেট্রিক টন ৪ গুণ বৃদ্ধি।

২. সেচের আওতাভুক্ত কৃষি জমি ২৮ লক্ষ হেক্টর ৭৯ লক্ষ হেক্টর ৩ গুণ বৃদ্ধি। 

৩. মোট মৎস্য উৎপাদন ২১.৩০ লক্ষ মে. টন ৫৩.১৪ লক্ষ মে.টন ২.৫ গুণ বৃদ্ধি।

৪. গবাদি পশুর সংখ্যা ৪ কোটি ২৩ লক্ষ ১ হাজার ৭ কোটি ৯৮ লক্ষ ৭৮ হাজার প্রায় ২ গুণ বৃদ্ধি।

৫. পোল্ট্রি সংখ্যা ১৮ কোটি ৬ লক্ষ ২২ হাজার ৫২ কোটি ৭৯ লক্ষ ১৯ হাজার ৪ গুণ বৃদ্ধি।

৬. চা উৎপাদন ৩.৯ কোটি কেজি ৮.১০ কোটি কেজি ২ গুণ বৃদ্ধি।

৭. লবণ উৎপাদন ৮.৫৪ লক্ষ মে.টন ২৩.৪৮ লক্ষ মে.টন ৩ গুণ বৃদ্ধি।

৮. কৃষিখাতে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ১৭০ কোটি টাকা ২৬ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। ৯ সারে ভর্তুকির পরিমাণ (২০২২-২৩) - ২৫ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা।


ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণ

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন ০ ৮ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭১৪ পরিবার।


ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. মোট জনগোষ্ঠীর ইন্টারনেট ব্যবহার ০.২৩ শতাংশ জনগোষ্ঠী ৭৮.৫৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী ৩৪২ গুণ বৃদ্ধি।

২. সক্রিয় মোবাইল ফোন সিম সংখ্যা ১ কোটি ৯০ লক্ষ ১৮ কোটি ৮৬ লক্ষ ৪০ হাজার ১০ গুণ বৃদ্ধি।

৩. ডিজিটাল সেবা সংখ্যা (সরকারি সংস্থা ) ৮টি ৩ হাজার ২০০+টি ৪০০ গুণ বৃদ্ধি।

৪. ওয়ান স্টপ সেন্টারের সংখ্যা ২টি ৮ হাজার ৯২৮ সাড়ে ৪ হাজার গুণ বৃদ্ধি।

৫. সরকারি ওয়েবসাইটের সংখ্যা ৯৮টি ৫২ হাজার ২০০+টি ৫৩৩ গুণ বৃদ্ধি।

৬. আইসিটি রপ্তানির পরিমাণ ২১ মিলিয়ন ডলার ১.৯ বিলিয়ন ডলার ৯ গুণ বৃদ্ধি।

৭. আইটি ফ্রি- ল্যান্সার সংখ্যা ২০০ জন ৬ লক্ষ ৮০ হাজার জন সারা বিশ্বে ২য় স্থানে।


সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা (বাজেটের ৪.০১%) ১ লক্ষ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা (মোট বাজেটের ১৬.৫৮%) ৫০ গুণ বৃদ্ধি।

২. সামাজিক সুরক্ষা সেবার আওতাভুক্ত মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ২১ লক্ষ জন ১০ কোটি ৬১ লক্ষ ১৪ হাজার জন ৫০ গুণ বৃদ্ধি।

৩ উপবৃত্তি কার্যক্রমের সুবিধাভোগী (শিক্ষা ক্ষেত্রে উপবৃত্তি, বৃত্তি, উচ্চশিক্ষা সহায়তা কার্যক্রমে উপকারভোগীর সংখ্যা) ০ ৩ কোটি ৯৪ লক্ষ ১০ হাজার ৭৫৬ শিক্ষার্থী। ৪ বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহিতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২১ লক্ষ ১৭ হাজার জন ১ কোটি ১৩ লক্ষ ১০ হাজার জন ৫ গুণের বেশি বৃদ্ধি।

৫. বিদেশ ফেরৎ প্রবাসী কর্মীদের প্রদত্ত অনুদান (বার্ষিক) ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ২১১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ১৫৭ গুণ বৃদ্ধি।

৬. খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানমূলক কার্যক্রমের উপকারভোগী (ভিজিএফ, ভিজিডি, ভিডব্লিউবি, টিআর, জিআর, কাবিখা, কাবিটা, ইজিপিপি, ও এমএস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি কার্যক্রমের সুবিধাভোগী) ৪ লক্ষ ৩০ হাজার জন ৪ কোটি ৬১ লক্ষ ১৫ হাজার জন ১০০ গুণ বৃদ্ধি।

৭. হিজড়া জনগোষ্ঠীর উপকারভোগী ১ হাজার ১২ জন ৬ হাজার ৮৮৪ জন ৬ গুণ বৃদ্ধি।


যোগাযোগ অবকাঠামো

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. জেলা, আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়ক ১২ হাজার ১৮ কিলোমিটার ৩২ হাজার ৬৭৮ কিলোমিটার প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি।

২. গ্রাম্য সড়ক ৩ হাজার ১৩৩ কিলোমিটার ২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৪৪৬ কিলোমিটার ৭৬ গুণ বৃদ্ধি।

৩. মোট রেলপথ ২ হাজার ৩৫৬ কিলোমিটার ৩ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার দেড় গুণ বৃদ্ধি।

৪ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সক্ষমতা ১১টি বিমান ২১টি বিমান।


এছাড়া ২০০৬ সালে প্রায় সকল বিমান ছিল অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ, বর্তমানে সেগুলো অত্যাধুনিক বিমান দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।


শূন্য থেকে শুরু

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত জেলা ০ ৩২টি।

২. ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত উপজেলা ০ ৩৯৪টি।

৩. ডিজিটাল সেন্টারের সংখ্যা ০৮ হাজার ৯৭২টি।

৪. ইউনিয়ন পর্যায়ে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ ০ ২ হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন।

৫. দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোন ব্র্যান্ডের সংখ্যা ০ ১৫টি ব্র্যান্ড।

৬. হাইটেক পার্ক, সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক এবং শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ০ ১০৯টি।

৭. ফ্যামিলি কার্ড ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রাপ্ত উপকারভোগী (টিসিবি কর্তৃক প্রদত্ত) ০ প্রায় ৫ কোটি মানুষ।

৮. মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ০ ৮৪ লক্ষ জন।

৯. কৃষকদের প্রদানকৃত কৃষি কার্ডের সংখ্যা ০ ২ কোটি ৬২ লক্ষ কৃষক।

১০. খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ০ ৫১ লক্ষ জন ।

১১. ‘বর্গা চাষীদের জন্য কৃষিঋণ’ কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ০ ২৮ লক্ষ বর্গা চাষী।

১২. সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সুবিধাভোগী ০ ৮ কোটি ৫০ লক্ষ জন।


বিবিধ

ক্রম খাত ২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ


১. কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৬ কোটি ৭৮ লক্ষ জন ১২ কোটি ৩৩ লক্ষ জন ২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

২. ওয়ার্কিং ফোর্সে মহিলাদের অংশগ্রহণ ২১.২% ৪৩.৪৪% ২ গুণের বেশি বৃদ্ধি।

৩. বেকারত্বের হার ৬.৭৭% ৩.৪১% অর্ধেক হয়েছে।

৪. দেশে মোট কর্মসংস্থান ৪ কোটি ৩০ হাজার জন ৭ কোটি ৭ লক্ষ ৩০ হাজার জন ২ গুণ বৃদ্ধি।

৫. শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি মাসিক ১ হাজার ৪৬২ টাকা মাসিক ১২ হাজার ৫০০ টাকা ১২ গুণ বৃদ্ধি।

৬. ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কার্যক্রমের উপকারভোগী ৩ লক্ষ ৭০ হাজার নারী ১৮ লক্ষ ২০ হাজার নারী ৫ গুণ বৃদ্ধি।

৭. জয়িতা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও অনলাইন ব্যবসা প্রশিক্ষণ প্রদান।


দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮-এর নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষিত দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনাগুলির ধারাবাহিকতা দ্বাদশ নির্বাচনি ইশতেহারেও রক্ষিত হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বাদশ নির্বাচনি ইশতেহার পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এখানে এই স্বল্প সময়ে তা সবিস্তারে তুলে ধরা সম্ভব নয়। আমি সংক্ষিপ্তাকারে কয়েকটি বিষয় আমার লিখিত বক্তব্যে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি।-


৩.১ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণ


চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা একান্ত প্রয়োজন। এজন্য আমরা ‘স্মার্ট নাগরিক’, ‘স্মার্ট সরকার’, ‘স্মার্ট অর্থনীতি’ ও ‘স্মার্ট সমাজ’– এই চারটি স্তম্ভের সমন্বয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেই। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ করছি। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো, ইনশাআল্লাহ।


৩.২ সুশাসন


ক) গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে আসছে। মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতে আমরা সদা তৎপর। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদই পারে কেবল জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে।


আমরা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা আরও সুদৃঢ় করবো।


খ) আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সপক্ষে সবসময়ই সোচ্চার। সামাজিক বৈষম্য নিরসন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাঙ্খিত শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য। যেখানে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা এবং সুবিচার নিশ্চিত হবে।


বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংরক্ষণ ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা এবং কার্যকারিতা সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।


গ) গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ


আওয়ামী লীগ সরকার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। ১৯৯৬ মেয়াদে আমরাই প্রথম বেসরকারি খাতে টেলিভিশন ও রেডিও উন্মুক্ত করি।


বিগত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। দেশে পত্রিকার সংখ্যা ৩ হাজার ২৪১টি। ৩৩টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল, ২৩টি এফএম বেতার এবং ১৮টি কমিউনিটি বেতার কেন্দ্র বর্তমানে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সাংবাদিকগণ যাতে নির্যাতন, ভয়ভীতি-হুমকি, মিথ্যা মামলার সম্মুখীন না হন তার ব্যবস্থা করা হবে। ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ অনুযায়ী ব্যক্তির গোপনীয়তা ও তথ্য সংরক্ষণ করা হবে এবং অপব্যবহার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। সাংবাদিকদের জন্য দশম ওয়েজবোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া চলমান। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় সাংবাদিকদের আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তাকে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।


ঘ) জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন নাগরিককেন্দ্রিক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক, কল্যাণমুখী, সমন্বিত দক্ষ স্মার্ট প্রশাসন গড়ার মাধ্যমে জনগণকে উন্নত ও মানসম্মত সেবা প্রদান ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারবদ্ধ। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের মাধ্যমে দক্ষ, উদ্যোগী, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর, দুর্নীতিমুক্ত দেশপ্রেমিক ও জনকল্যাণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।


ঙ) জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলা আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর, উন্নত, মানবিক ও জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে কাজ করেছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে স্মার্ট ও আধুনিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।


চ) দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ থেকে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার জন্য পাঠ্যক্রমে দুর্নীতির কুফল ও দুর্নীতি রোধে করণীয় বিষয়ে অধ্যায় সংযোজন করা হবে।


ছ) সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা


আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস দমন, সকল নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের প্রাধান্য, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাসমুক্ত সমাজগঠন সুনিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশ সকল ধর্ম, বর্ণ এবং পেশার মানুষের আবাসভূমি। অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ আমাদের কাম্য।


জ) স্থানীয় সরকার


কেন্দ্রীয় বাজেটের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্তরে স্থানীয় সরকার কর্তৃক বাজেট প্রণয়ন এবং সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে দায়িত্ব বিভাজন অধিকতর স্পষ্ট করা হবে।


ঝ) ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা ভূমির স্বল্পতা, ব্যবস্থাপনাগত দীর্ঘসূত্রতা ও জটিলতার কারণে ভূমি ব্যবস্থাপনায় পূর্ণ সুশাসন নিশ্চিত করার চাহিদা দীর্ঘ দিনের। প্রশাসনিক সংস্কার ও ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের সরকার ভূমি সংক্রান্ত সমস্যাদির কার্যকর সমাধানের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। Land Development Tax Management System এর মাধ্যমে ৩টি পার্বত্য জেলা ব্যতীত ৬১টি জেলায় ১ জুলাই ২০১৯ থেকে শতভাগ ই-নামজারি নিশ্চিত করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সীমিত পর্যায়ে ঢাকা শহরে বিভিন্ন স্পটে ই-নামজারি ও ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।


৩.৩ অর্থনীতি


ক) সামষ্টিক অর্থনীতি: উচ্চ আয়, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন


গত দেড় দশকে বাংলাদেশ একটি গতিশীল ও দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মর্যাদা লাভ করেছে। জাতীয় আয়ের মানদণ্ডে বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৩তম অর্থনীতির দেশ। এসময়ে দেশের কৃষি, শিল্প ও সেবাখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

নির্বাচিত হলে আওয়ামী লীগ সরকার লক্ষ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় নীতি-কৌশল গ্রহণ করবে। বাজারমূল্য ও আয়ের মধ্যে সঙ্গতি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

মুদ্রা সরবরাহ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা

মুদ্রা সরবরাহ ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায়-উপকরণ হবে নীতি সুদ হার ব্যবহার। কর্মপোযোগী প্রশিক্ষিত যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ঋণ সরবরাহ সম্প্রসারণ করা হবে। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে, যা বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে অনিশ্চয়তা লাঘব করবে। খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং এক্ষেত্রে ব্যাংক যাতে বিধি নির্ধারিত সঞ্চিতি রাখে তা নিশ্চিত করা হবে।


বিনিয়োগ ও উন্নয়ন

• আওয়ামী লীগ অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারিখাতের গুরুত্ব অব্যাহত রাখবে এবং যুক্তিসংগত ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি খাতের যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ ব্যবহার করবে।


আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও অপরাধ দমন

• পুঁজি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। • রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে ঘুষ-দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনুপার্জিত আয় রোধ, ঋণ-কর-বিল খেলাপি ও দুর্নীতিবাজদের বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে শাস্তি প্রদান এবং তাদের অবৈধ অর্থ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।


খ) দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস

আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে দারিদ্র্যের হার ১১ শতাংশে, চরম দারিদ্র্যের অবসান এবং ২০৪১ সাল নাগাদ দারিদ্র্যের হার ৩ শতাংশে নামিয়ে আনব।

গ) ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ

আমরা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে পূর্বের ধারাবাহিকতায় উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক শহরের সকল সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অব্যাহত থাকবে। গ্রামের যুবসমাজের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমাতে গ্রামেই আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


ঘ) তরুণ যুবসমাজ: ‘তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’

নির্বাচিত হলে দেশের রূপান্তর ও উন্নয়নে আমরা তরুণ ও যুবসমাজকে সম্পৃক্ত রাখব। কর্মক্ষম, যোগ্য তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ, জেলা ও উপজেলায় ৩১ লাখ যুবকের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।


ঙ) কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি

আমাদের সরকার কৃষির জন্য সহায়তা ও ভর্তুকি তথা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি উপকরণে বিনিয়োগ সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে। ব্যবহারযোগ্য কৃষি যন্ত্রপাতি সহজলভ্য ও সহজপ্রাপ্য করা হবে। কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত থাকবে। বাণিজ্যিক কৃষি, জৈবপ্রযুক্তি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, রোবোটিকস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো-টেকনোলজিসহ গ্রামীণ অকৃষিজ খাতের উন্নয়ন ও বিশ্বায়ন মোকাবিলায় উপযুক্ত কর্মকৌশল গ্রহণ করা হবে। কৃষির আধুনিকায়ন, প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং কৃষি গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ অব্যাহত থাকবে।


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ

২০২৮ সালের মধ্যে গবাদিপশুর উৎপাদনশীলতা ১.৫ গুণ বৃদ্ধি করা হবে। বাণিজ্যিক দুগ্ধ, পোল্ট্রি ও মৎস্য খামার প্রতিষ্ঠা, আত্মকর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে সহজ শর্তে ঋণ, প্রয়োজনীয় ভর্তুকি, প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও নীতিগত সহায়তা প্রদান করা হবে।


চ) শিল্প উন্নয়ন

দেশের শ্রমশক্তিতে প্রতি বছর নতুন যুক্ত হওয়া ২০ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এটি অর্জনে আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। নতুন নতুন শিল্প স্থাপন করে আমরা শিল্পখাতের বিকাশ ঘটাবো। নির্বাচিত হলে উদ্যোক্তা শ্রেণিকে আকৃষ্ট করতে আমরা যথোপযুক্ত নীতি প্রণয়ন ও কর্মসূচি গ্রহণ করবো।

কর্মসংস্থান সম্প্রসারণের জন্য ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প, তাঁত ও রেশমশিল্পকে সংরক্ষণ এবং প্রতিযোগিতা সক্ষম করা হবে। বেনারসি ও জামদানিশিল্পকে উৎসাহিত করা হবে।

চামড়া ও পাটপণ্যে বৈচিত্র্য আনা হবে এবং এই শিল্পগুলিকে লাভজনক করার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। পাটশিল্পে বেসরকারি খাতের উদ্যোগ উৎসাহিত করা হবে।

কামার, কুমার ও মৃৎশিল্পীদের উন্নয়নের জন্য বিশেষ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজন অনুসারে এখাতে প্রণোদনা দেওয়া হবে।


ছ) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুৎ খাতে আমরা গত ১৫ বছরে যুগান্তকারী ও বৈপ্লবিক উন্নয়ন ঘটিয়েছি। নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত, এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার ও ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

পরিবেশবান্ধব জ্বালানি থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। নবায়নযোগ্য ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য গ্রিড যুগোপযোগী করার কাযক্রম শুরু হয়েছে। জ্বালানি খাত

দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্যাস ও এলপিজির সরবরাহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হবে।


জ) যোগাযোগ

রূপকল্প-২০৪১ অর্জনে আওয়ামী লীগ সরকার নিরাপদ, মানসম্পন্ন ও উন্নয়নবান্ধব উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিগত ১৫ বছরে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। নৌপথ, সড়কপথ, রেলপথ ও বিমানের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত উন্নত করা হবে।

ঝ) অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রজেক্ট আওয়ামী লীগ সরকার ৩ মেয়াদে বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। আশা করা যায়, জাতির অহংকার ও গর্বের প্রতীক পদ্মা সেতুসহ এই সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল বয়ে আনছে।


ঞ) সুনীল অর্থনীতি

সমুদ্র সম্পদ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। সমুদ্র সম্পদ তেল, গ্যাস, খনিজ, মৎস্য ও জলজ সম্পদ আহরণ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সমুদ্র বন্দর ও গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হয়েছে; যা ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে সুযোগ সৃষ্টি করেছে।


ট) এমডিজি অর্জন এবং এসডিজি বাস্তবায়ন কৌশল (২০১৬-৩০)

আমরা এমডিজি অত্যন্ত সফলতার সাথে বাস্তবায়ন করেছি। টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন অর্থাৎ এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাসস্থান, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সুপেয় পানি, স্যানিটেশন সুবিধা, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণসহ প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে নতুন কৌশল উদ্ভাবন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাচ্ছি।


ঠ) ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০

জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে: ১. ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ; ২. ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন এবং ৩. ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন।

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর কাঙ্খিত লক্ষ্য হচ্ছে ৬টি। এগুলো হলো: ১. বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ২. পানি ব্যবহারে অধিকতর দক্ষতা ও নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা; ৩. সমন্বিত ও টেকসই নদী অঞ্চল এবং মোহনা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; ৪. জলবায়ু ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ এবং সেগুলোর যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা; ৫. অন্তঃ ও আন্তঃদেশীয় পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর প্রতিষ্ঠান ও সুশাসন গড়ে তোলা এবং ৬. ভূমি ও পানিসম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করা।


৩.৪ সামাজিক নিরাপত্তা ও সেবা

ক) সর্বজনীন পেনশন: সময়োপযোগী উদ্যোগ

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন প্রণীত হয় এবং ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট মাসে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হয়। এটি সমাজের সকলের জন্য। এতে রয়েছে ৪টি স্কিম:

১. প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ‘প্রবাস’

২. ব্যক্তি মালিকানাধীন/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য ‘প্রগতি’

৩. স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য ‘সুরক্ষা’

৪. স্বকর্মে নিয়োজিত অতি দরিদ্রদের জন্য ‘সমতা’

নিজেদের ভবিষ্যৎ জীবন সুরক্ষার লক্ষ্যে এই সুযোগ সকল নাগরিকদের গ্রহণ করতে আহ্বান জানাচ্ছি।


খ) শিক্ষা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিজ্ঞানে সমৃদ্ধ দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। নির্বাচিত হলে আওয়ামী লীগ সরকার নিষ্ঠার সঙ্গে সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে শিক্ষানীতির লক্ষ্য অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করবে। শিক্ষার উন্নয়ন ও বিকাশ হলে সামগ্রিক জাতীয় উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য নিরসনে গতিবেগ সঞ্চারিত হয়। এই বিশ্বাস থেকে আওয়ামী লীগ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়াবে এবং তার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষকের অনুপাত ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ভাষা, উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষাকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করা হবে। বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য উপযুক্ত ল্যাবরেটরি গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। মেধাবী বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে যথাযথ শিক্ষা পাঠক্রম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন হাতে নেওয়া হয়েছে। নারী শিক্ষা প্রসারের সঙ্গে সংগতি রেখে উপবৃত্তি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। দরিদ্র ও দুর্বলতর জনগোষ্ঠীর সন্তানদের উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ আরও প্রসারিত করা হবে।


গ) স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ

রূপকল্প-২০২১ এর ধারাবাহিকতায় রূপকল্প-২০৪১ এর কর্মসূচিতে মৌলিক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেবা উন্নত ও সম্প্রসারিত হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ অব্যাহত থাকবে। ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে একটি ইউনিক হেলথ আইডি প্রদান এবং হাসপাতালে অটোমেশন ব্যবস্থাপনা চালু করা হবে। সকলের জন্য সমান সুযোগ রেখে সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করা হবে। ঢাকায় আন্তর্জাতিকমানের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন করেছি। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণায় বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য ইনস্যুরেন্স চালু, হেলথি এজিং স্কিমের আওতায় প্রবীণদের অসংক্রামক রোগব্যাধি নিরাময় এবং পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি করা হবে। দেশে এপিআই একটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট শিল্প উৎসাহিত করা হবে। এন্টি বায়োটিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সকল স্তরে মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান অধিকতর কার্যকর করা হবে।


ঘ) সংস্কৃতি

সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে পরিপূর্ণ সহযোগিতা করতে আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারবদ্ধ। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে- সংস্কৃতির ভেতর দিয়েই সভ্যতা, মানবতা, বিশ্বজনীনতা ও জাতীয়তা সমৃদ্ধ ও বিকশিত হয়। বাঙালি সংস্কৃতির আবহমান ঐতিহ্য ধারণ ও বিশ্ব সংস্কৃতির সঙ্গে মেলবন্ধন রচনার লক্ষ্যে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, সংগীত, শিল্পকলা, নাটক, চলচ্চিত্র এবং সৃজনশীল সুকুমারশিল্পের উৎকর্ষ সাধনে আমরা পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রাখবো। সকল ধর্মের শিক্ষা ও মূল্যবোধের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এবং সামাজিক সচেতনতা, বিজ্ঞানমনস্কতা, সংস্কৃতির চর্চা ও উদার মানবিক চেতনা সৃষ্টির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হবে। লোকসংস্কৃতি ও লোকঐতিহ্য এবং নৃগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারার বৈশিষ্ট্যসমূহ সুরক্ষা করা হবে।


ঙ) ক্রীড়া

প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ চলছে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্রীড়া ক্লাব গড়ে তুলে বিনা মূল্যে ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে খেলার মাঠের উন্নয়ন, ক্রীড়া অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তাসহ ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট সকলের প্রশিক্ষণ সুবিধাদি সম্প্রসারণে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রচলিত গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাকে দেশব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলা, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, শুটিং, আর্চারি, কাবাডিসহ সম্ভাবনাময় খেলাধুলাকে বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


চ) শ্রমিক কল্যাণ ও শ্রম নীতি

আইএলও কনভেনশন এবং আইনে প্রদত্ত শ্রমিক অধিকার ও কল্যাণমূলক শর্তাবলি পালন অব্যাহত থাকবে। নারীর শ্রমে অংশগ্রহণের বাধা দূর করা এবং নারী শ্রমিক সংগঠন সুসংহত করা হবে। পরিবেশবান্ধব গ্রিন শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। পোশাক শিল্প কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করেছি। গার্মেন্টস শ্রমিকরা ১৯৯৬ সালে ৮০০ টাকা মজুরী পেত; আওয়ামী লীগ সরকার তা বাড়িয়ে ১৬০০ টাকা করে। পরবর্তীতে ২০০৯-২০২৩ মেয়াদে আমরা এ মজুরী ১২ হাজার ৫০০ টাকায় বৃদ্ধি করি। ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও পরিচালনার অধিকার, কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, বিধিসম্মত শ্রমঘণ্টা নির্ধারণ, নিয়োগের নিরাপত্তা, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, চিত্তবিনোদন এবং শ্রম আইনে নির্ধারিত শ্রমিক কল্যাণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রদান অব্যাহত রাখা হবে।


বৈদেশিক কর্মসংস্থান

আমরা দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক চাহিদা অনুযায়ী ট্রেডভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা বৃদ্ধি করবো। বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের আইনসংগত সহায়তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা অব্যাহত রাখবো। বিদেশে নারী শ্রমিকদের প্রতি ন্যায্য আচরণ সংরক্ষণে আইনসংগত ব্যবস্থা নিব। ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের আয় গ্রহণ সহজ করার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।


ছ) নারীর ক্ষমতায়ন

• নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা, অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নারী উন্নয়নে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। গ্রামীণ নারীদের সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং শ্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা হবে। গ্রামীণ নারীদের অন-লাইনে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।

• আওয়ামী লীগ সরকার নারী ও শিশু পাচার রোধে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে, যা অধিকতর সক্রিয় ও কার্যকর করা হবে।

• শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যে নারীদের আরও বেশি অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত থাকবে।

• নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী গড়ে তোলার কাজে ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন’ এর কার্যকর ভূমিকা সম্প্রসারিত হবে।


জ) শিশু কল্যাণ

আমরা শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যতের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে যথাযথ শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পুষ্টি, শিক্ষা ও বিনোদনের উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি করার কার্যক্রম অব্যাহত রাখব।

পথশিশুদের পুনর্বাসন ও নিরাপদ আবাসন, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল শিশুদের জন্য শিশুসদন প্রতিষ্ঠা এবং প্রাথমিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাদানের কর্মসূচি কার্যকর ও প্রসারিত করা হবে।

শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য পর্যায়ক্রমে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

কন্যা শিশুদের প্রতি বৈষম্য, নির্যাতন বন্ধ ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইন পাশ করা হয়েছে।

অটিস্টিক শিশুদের জন্য গৃহীত বিশ্বে সমাদৃত কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো হবে।


ঝ) মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ

মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। নির্বাচিত হলে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অসঙ্গতি দূর এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন করার কাজ অব্যাহত রাখব।

আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের স্বীকৃতি এবং তাঁদের জন্য যেসব কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সেগুলো অব্যাহত রাখা হবে।


ঞ) বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন ও জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সম্প্রসারণ করা হবে। “বঙ্গবন্ধু প্রতিবন্ধী সুরক্ষা বীমা” চালু করা হয়েছে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা যাতে তাদের জন্য উপযোগী পরিবেশে শিক্ষা লাভ করতে পারে, সে ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সরকারি পরিষেবার দপ্তরগুলো প্রতিবন্ধীবান্ধব হিসেবে রূপান্তরের কাজ অব্যাহত থাকবে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন বা অনলাইনে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

ব্যবসা ও শিল্প কারখানায় প্রতিবন্ধীদের চাকুরি প্রদান করা হলে ঐসব প্রতিষ্ঠানে কর ছাড় এবং বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়ন করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোতে তাদের অংশগ্রহণের জন্য এবং ভোটদানে উৎসাহিত করা হবে।


প্রবীণ কল্যাণ

আমরা প্রবীণদের ক্রিয়াশীল রাখতে, সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতিতে তাদের অবদান যোগ করতে এবং তাঁদের সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

প্রবীণ নাগরিকদের ডিজিটাল প্রযুক্তির সকল সুযোগ-সুবিধা ও প্রযুক্তিগত সমতা অর্জনে এবং প্রবীণদের কল্যাণে উন্নত ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ঢাকার আগারগাঁও-এ প্রবীণ হাসপাতাল রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইতোমধ্যে জেরিয়াট্রিক সেবা চালু হয়েছে। দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে জেরিয়াট্রিক সেবা প্রচলনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


ট) ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু

সংবিধানের আলোকে সকলের অধিকার সুরক্ষায় উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদে অর্পিত সম্পত্তি আইন সংশোধন করা হয়েছে এবং অর্পিত সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট সমস্যা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইন প্রয়োগে বাধা দূর করা হবে।

সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন এবং সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আবশ্যক পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখবে।


ঠ) অনগ্রসর জনগোষ্ঠী

দলিত ও অবহেলিত জনগোষ্ঠী

দলিত ও হরিজনদের ফ্লাট নির্মাণ করে আবাসন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বস্তিবাসীর জন্য ফ্লাট নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে দুই কাঠা জমি ও বাড়ী নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

আমাদের অঙ্গীকার, কুষ্ঠরোগী, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে। যাতে তারা আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে সমাজের মূল স্রোতোধারায় আসতে পারে।


হিজড়া জনগোষ্ঠী

হিজড়াদের সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত এবং তাদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, সামাজিক ন্যায়বিচার, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, বাসস্থান ও জীবনমান উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য নগদ সাহায্য ও বিনামূল্যে জমি ও বাসস্থান প্রদান কর্মসূচি সারা দেশে সম্প্রসারিত করা হবে।


ড) জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা

গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স ২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি দেশের মধ্যে ৭ম অবস্থানে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা ও খাপ খাইয়ে চলা বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ভৌত-প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জ।

আমাদের অঙ্গীকার, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা, দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা এবং পানিসম্পদ রক্ষায় ইতোমধ্যে আমাদের সরকার যে সকল নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তার বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য নিম্নলিখিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে: (ক) উৎপাদনশীল/সামাজিক বনায়ন ২০ শতাংশে উন্নীত; (খ) ঢাকা ও অন্যান্য বড় নগরে বায়ুর মান উন্নয়ন; (গ) শিল্পবর্জ্য শূন্য নির্গমন/নিক্ষেপণ প্রবর্ধন; (ঘ) আইনসংগতভাবে বিভিন্ন নগরে জলাভূমি সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষা; (ঙ) সমুদ্র উপকূলে ৫০০ মিটার বিস্তৃত স্থায়ী সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা।  


ঢ) এনজিও ও সরকার

সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরকারের বিধি অনুযায়ী নিবন্ধিত হবে। সরকার তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও মূল্যয়ন করবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিজস্ব বিধি মোতাবেক পরিচালিত হবে। দারিদ্র বিমোচন, আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান বিষয়ে নিজস্ব বিধি ও রীতি অনুযায়ী কাজ করার অধিকার অব্যাহত রাখা হবে। অর্থায়নকারী অন্যান্য এনজিও’র সকল কার্যক্রম ও আয়-ব্যয়ের হিসাব স্বচ্ছ এবং স্থানীয় জনগণ ও সরকারি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।


৩.৫ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব

ক) পররাষ্ট্র

যুদ্ধ না, শান্তিতে আমরা বিশ্বাসী। জাতির পিতার নির্দেশিত ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই নীতিকে ধারণ করে আওয়ামী লীগের সফল পররাষ্ট্রনীতির কল্যাণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক শক্তিশালী ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।

নির্বাচিত হলে সকল দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগিতা চলমান থাকবে। আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ, ট্রানজিট, জ্বালানি অংশীদারত্ব এবং ন্যায়সঙ্গত পানিবণ্টনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডে জঙ্গি, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর উপস্থিতি রোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সমগ্র অঞ্চল থেকে এর মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়া টাস্কফোর্স গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আওয়ামী লীগ সরকার।


খ) প্রতিরক্ষা: নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা

দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিরক্ষা সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্তৃক প্রণীত ‘প্রতিরক্ষা নীতিমালা, ১৯৭৪’-এর আলোকে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।

আমাদের অঙ্গীকার, ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আলোকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধি এবং ব্যবস্থাপনার উন্নতি অব্যাহত থাকবে। সশস্ত্র বাহিনীর অফিসার ও সৈনিকদের পেশাগত দক্ষতা এবং তাঁদের চাকরির সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।

দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর সকল শ্রেণির সদস্যদের জন্য কল্যাণমুখী নতুন প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

সংক্ষিপ্ত ইশতেহার পাঠ শেষে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরেই ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠিত হবে। আসুন, আরও একবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন। আপনারা আমাদের ভোট দিন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধি দিব।


জেবি/এজে