ফেসবুকে লাইভে এসে ভোট বর্জন করলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি জাফর
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:০৭ অপরাহ্ন, ৭ই জানুয়ারী ২০২৪
কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া আসনের ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘন্টা আগে বিকাল ৩ টায় নিজ ফেসবুকে লাইভে এসে এই ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়া দেন তিনি। প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে সন্ত্রাসী কায়দায় ভোট ডাকাতিতে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যা অভিযোগে এই ভোট বর্জন বলে মন্তব্য করেছেন ওই আসনের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির হাতি ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। এখনও আসনটি বিপদজনক দাবি করে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলেছেন ইবরাহিম।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল
রবিবার বিকাল ৩ টার একটু আগে প্রথমে ফেসবুকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে স্ট্যাটার্স দেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম। এর পর পরই লাইভে এসে জাফর আলম বলেন, একটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি, এজেন্টদের মারধরের প্রতিবাদে ভোট বর্জন করলাম।
এর কিছুক্ষণ পর বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে ফেসবুকে লাইভে এসে ওই আসনের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির হাতি ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, প্রথম দুই থেকে ৩ ঘন্টা ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে জনস্রোত ছিল, দীর্ঘ লাইন ছিল ভোট কেন্দ্রে এই অবস্থা দেখে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের জাফর আলম ও তার অনুসারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
আক্রমণাত্বক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তারা তাৎক্ষনিকভাবে কৌশল পাল্টে জাল ভোট দেয়ার কৌশল অবলম্বন করে। তারা আমাদের কর্মীদের ওপর আক্রমণ শুরু করে। তারা গত ৩ দিন ৩ রাত যাবৎ কালো টাকা বিতরণ করে। তারা প্রিসাইডিং অফিসারদের হুমকি দেয়া শুরু করে। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করে। তারা কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাতে কেন্দ্রে থেকে ১০০-২০০ মিটার দূরে অবস্থান করে বাধা সৃষ্টি করে এবং পোলিং এজেন্টদেরকে হুমকি দেয় মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।
এরকম অবস্থায় হাতঘড়ি মার্কার সমর্থকগণ, এজেন্টগণ এবং যারা নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ সাংঘাতিকভাবে বিব্রতকর এবং বিপদজনক একটি অবস্থানে মুখোমুখি হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে আমরা নির্বাচনী রিটার্নিং, সহকারী রিটার্নিং অফিসার মহোদয়দের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেছি, তাদেরকে জানিয়েছি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে জানিয়েছি।
এরকম একটি সন্ত্রাসী বাহিনী যাদের ভিত্তি গত ১৫ বছর ধরে গড়ে উঠেছে তাদের মোকাবিলা করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী হিমশিম খাচ্ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর ওপরও হামলা করা হয়েছে এবং একান্ত নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় প্রিসাইডিং অফিসারদেরকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এই অবস্থায় একটি সময় আসে তিনি (জাফর আলম) নির্বাচনকে বিপদজনক পথে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আজ সাড়ে ৩টায় প্রশাসনের সকলকে অনুরোধ করছি যাতে যে সময়টুকু আছে তাতে ভোটারদের নিরাপদে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করুন।
কক্সবাজার জেলার রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান জানান, কক্সবাজার ১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কোন লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ওই আসন সহ জেলার সকল আসনে নিরাপত্তা জোরদার রয়েছেন। এ পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম বলেছেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্য কোন ভাবেই পক্ষপাত না। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন: লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত কক্সবাজার ১ আসনের বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৫২ জন। যেখানে চকরিয়া উপজেলায় ৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৫২ জন এবং পেকুয়া উপজেলায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ভোটার রয়েছে। এই ২ উপজেলায় ১৫৮ টি কেন্দ্র।
এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম (হাতুড়ী), জাতীয় পার্টির হোসনে আরা (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন (মোমবাতি), স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের ছেলে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী তুহিন (ঈগল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুদ্দিন আরমান (কলারছড়ি)।
আরএক্স/