নতুন সরকারকে ঘিরে তারুণ্যের প্রত্যাশা


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:০৬ অপরাহ্ন, ২০শে জানুয়ারী ২০২৪


নতুন সরকারকে ঘিরে তারুণ্যের প্রত্যাশা
ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের নতুন পদযাত্রা। দলটির বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চারবারসহ মোট পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। পূর্বে এই সরকার নিয়েছে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল সহ বড় বড় সব চ্যালেঞ্জ এবং সফলভাবে বাংলাদেশকে উঠিয়ে দিয়েছে উন্নয়নের মহাসড়কে। তবে, বর্তমান নবগঠিত সংসদে শক্তিশালী কোন বিরোধী দল না থাকায় জনগণের মনে তৈরি হয়েছে গণতন্ত্রের মর্যাদা হারানোর শঙ্কা। সচেতন মানুষের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীরাও ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের অবলুপ্তি নিয়ে চিন্তিত। সবকিছু ছাপিয়ে পরিচিত নেতৃত্বের প্রতি জনমানুষের আস্থার সাথে মিশ্রিত হয়েছে নতুন সরকারের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিস্তর প্রত্যাশা।



কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের প্রত্যাশা ও প্রত্যাশামত প্রয়োজনীয় উন্নয়নগুলো তুলে ধরেছেন প্রসেনজিত দাস। 


“শিক্ষার্থীবান্ধব উন্নয়ন চাই”


শিক্ষার্থীবান্ধব কাজের জন্য অবশ্যই বর্তমান সরকার প্রশংসার দাবিদার। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন, সেটি বাস্তবায়নের জন্য সকল শিক্ষার্থীদের আইসিটি বিষয়ক জ্ঞান আবশ্যক। এটা যেন মাধ্যমিক থেকে ইউনিভার্সিটির সকল শিক্ষার্থীদের উপযোগী হয় সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। আর নতুন কারিকুলাম সেটা সম্পূর্ণভাবে কখনোই শিক্ষার্থী বান্ধব না। এবিষয়ে বলতে গেলে হঠাৎ করে সম্পূর্ণ কারিকুলাম পরিবর্তন করে ফেললে এটা শিক্ষক-শিক্ষার্থী কারোর জন্যই মানানসই হয় না। প্রতি বছর অল্প পরিবর্তন করে (২০%-৩০%) পরিকল্পনামাফিক আগাতে হবে। এর ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলরে জন্যই এটি সহজ এবং সাবলীল হবে। আশা করি এই সকল বিষয়ে তিনি সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।


রনি আহমেদ 

গণিত বিভাগ



“বেকারদের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও নিত্যপণ্য বাজারের সিন্ডিকেট দমন করা হোক”


একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সরকারের প্রতি আমার প্রথম প্রত্যাশা হচ্ছে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশে বর্তমানে শিক্ষিত বেকারের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে যা দেশের জন্য হুমকিসরূপ। যদি সরকার এ বিষয়ে সুনজর দেয় তবে এসব শিক্ষার্থীদের বেকারত্ব অনেকাংশে গুছে যাবে। নতুন সরকারের কাছে আরও একটি প্রত্যাশা রয়েছে সেটা হলো দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ। আমাদের দেশে যেসব পণ্য উৎপাদিত হয় সেসব পণ্যের দাম ও অনেক বেশি। চোরা চালান, সিন্ডিকেট দমন এবং ভর্তুকি দিয়ে হলেও দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রেখে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাগব করা জরুরি।


কাজী সানজিদা কাঁকন 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ 


আরও পড়ুন: অসহায় শীতার্তদের শীতবস্ত্র বিতরণ করলো ইবির তারুণ্য



“কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার এবং সড়ক দুর্ঘটনার লাঘব”


বর্তমানে দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক এবং এই হার দিন দিন পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে । তরুণরা শিক্ষিত হচ্ছে ঠিকই কিন্তু চাকরি না পেয়ে অনেকে বর্তমানে হতাশায় জীবন যাপন করছেন। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় এর একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সরকারের কাছে আমার প্রত্যাশা তরুনদের কর্মমুখী শিক্ষায় উদ্ভুদ্ধ করা এবং দেশে কর্মসংস্থান চাহিদা অনুযায়ী বৃদ্ধি করা। এছাড়া বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। 

আর একটা চাওয়া হচ্ছে, বিগতদিন গুলোতে ঘটা মর্মান্তিক কয়েকটি দুর্ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে। এজন্য সড়ক আইনের যথাযথ প্রয়োগ, ড্রাইভিং লাইসেন্সে আধুনিকায়ন, ড্রাইভারদের অক্ষমতা দূরীকরণ, জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, মহাসড়কে যানবাহনের বেপরোয়া চলাফেরা বন্ধ করা। প্রত্যাশা রাখছি, সরকার নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে শীঘ্রই পরিবহন ব্যবস্থায় লাগাম টানবেন।  যেনো দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আর কাউকে অকাতরে জীবন দিতে না-হয়।


মারিয়া মুরছালিন

পরিসংখ্যান বিভাগ।


আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২তম পাখিমেলা অনুষ্ঠিত


“শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও সড়ক পরিবহন আইনের যথাযথ প্রয়োগ”


স্মার্ট জনবল তৈরী করতে হলে অবকাঠামোর সাথে সাথে স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। প্রাথমিক পর্যায় থেকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং ব্যাবহারিক শিক্ষা প্রদানে সরকারের প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ নিতে হবে বলে আমি মনে করি।

সর্বোচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চায়নে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় পর্যাপ্ত পরিমাণের শিক্ষক এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে আরো ব্যবস্থা এবং নজরদারি দরকার।

আগামীর বাংলাদেশ এমন হওয়া দরকার যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ শিক্ষা নেওয়ার জন্য আর বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজনবোধ মনে করবে না। নিজ দেশেই সর্বোচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশের সেবা করার পর্যাপ্ত কর্মক্ষেত্র থাকবে। সড়ক আইনের প্রয়োগে আরো কঠোর অবস্থানে যাওয়া জরুরি  এবং সড়ক আইন বিষয়ে জিরো টলারেন্স এ এখনি আসা দরকার তা নাহলে এত এত যানবাহন নিয়ন্ত্রণে বা একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে না আসলে দূর্ঘটনার সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।


মেহেদী হাসান সাকিব 

আইসিটি বিভাগ


“বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি”


নবনির্বাচিত সরকার বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রগতির পাশাপাশি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে সুনজর দিবেন। এখানের সুষ্ঠু, পরিবেশ, উন্নত খাবার মান নিশ্চিতকরণের জন্য সুনজর দিলে প্রশাসনের উদ্যোগে সুন্দর একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি গড়ে উঠবে সুস্থ একজন দেশের ভবিষ্যৎ কারিগর। বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশও। সকলকিছু উর্ধ্বে আমরা চাই, একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ, সুশাসন ও জবাবদিহি। এর পূর্বশর্ত দুর্নীতিমুক্ত শাসন এবং প্রশাসন। নতুন সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া, শুধু ভৌত অবকাঠামো নয়, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি।


নওরীণ জাহান রুণা

বাংলা বিভাগ


জেবি/এসবি