ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ কমানো হবে: আইনমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪:১৩ অপরাহ্ন, ২১শে জানুয়ারী ২০২৪


ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ কমানো হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক | ছবি: সংগৃহীত

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকারের পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিকের সইয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, কারখানাগুলোতে শ্রমিক সংগঠন করার বিধান আরও সহজ করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।


রবিবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের লেবার অ্যাটাশে লিনা খান ও ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) ম্যাথু বেহের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী এমন তথ্য জানান।


আরও পড়ুন: চীনের কাছে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ: রাষ্ট্রদূত


যেসব কারখানায় তিন হাজারের কম শ্রমিক রয়েছেন, সেখানে ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ শ্রমিকের সইয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তারা। আমরা আস্তে আস্তে কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি বলে জানান তিনি।


আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের এমপ্লয়ার্স এবং ওয়ার্কাস ফেডারেশনগুলো সবসময় বলে আসছে, আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকারের পরিবেশ অনুসারে এটা কমানো হবে। সেটিই আমাদের সিদ্ধান্ত।


যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফার্স্ট সেক্রেটারি ও লেবার অ্যাটাশে এসেছেন। তাদের সঙ্গে কী নিয়ে কথা হয়েছে। জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি হচ্ছে যে শ্রমিক অধিকার নিয়ে তারা নিজেদের বক্তব্য দিয়েছেন। আপনারা হয়তো খেয়াল রাখবেন, গত বছর থেকেই এ আলোচনা হচ্ছে। আইনটিতে কী অগ্রগতি হয়েছে, আরও অগ্রগতি সম্ভব কিনা; বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করি। একটা পদক্ষেপ হিসেবেই আজকের আলোচনা হয়েছে। আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, আপনারা জানেন, রাষ্ট্রপতির কাছে যখন শ্রম আইনটি গিয়েছিল, তখন একটি বিশেষ কারণে সেটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কারণটা আগেও আমি ব্যাখ্যা করেছি, আজকের আলোচনায় সেটিও উঠে এসেছে।


আনিসুল হক বলেন, মার্কিন কর্মকর্তারা তাদের থ্রেশহোল্ড সম্পর্কে এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে তাদের সঙ্গে। বিশেষ করে তারা আমাকে বলেছেন যে এই ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে কাজ করতে চায়। আর যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিকের অধিকার নিয়ে তারা খুবই সচেতন এবং এটা তাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু। তখন আমি তাদের বলেছি, এটা বাংলাদেশ সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা এতই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, এবার শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের হাতে রেখেছেন। সে রকম গুরুত্ব এটিকে দেওয়া হয়। আমি এটাও বলেছি যে, আগামী বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি টিমের সঙ্গে আলোচনায় বসবো।


আইনমন্ত্রী বলেন, আগামী মার্চে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠক বসবে আমাদের অগ্রগতি সম্পর্কে ওয়াকিফহাল হওয়ার জন্য এবং তাদের দুয়েকটা জানার বিষয় আছে, সে বৈঠকের পর আমরা জানাব। আজ এ পর্যন্তই আলোচনা হয়েছে।


মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো আপত্তি তোলেনি। এছাড়া আজকের বৈঠকে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি বলেও জানান তিনি।


আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ধ্বংসের পাঁয়তারা: কাদের


যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়গুলো কী ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থ্রেশহোল্ড নিয়ে তাদের বক্তব্য ছিল। এটা সবসময়ই ছিল। আমি বলেছি, থ্রেশহোল্ড আমরা ১৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সেখানে বলা আছে, যে কারখানায় তিন হাজার বা তার বেশি শ্রমিক আছে। কথা হচ্ছে, সেটার বিষয়ে একটা আলোচনা হতে পারে। তারা এটাও বলেছেন, তিন হাজার বা তিন হাজারের বেশি শ্রমিক আছে, এমন কারখানা অনেক কম। এটা আগেও আমি শুনেছি। সেই বিষয়ে যখন প্রশ্ন এসেছে, স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।


তারা কত শতাংশ চাচ্ছেন, জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, সাধারণত এটা ১০ শতাংশ। আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, আমাদের এমপ্লয়ার্স এবং ওয়ার্কাস ফেডারেশনগুলো সবসময় বলে আসছে, আস্তে আস্তে কমানোটাই তাদের জন্য ভালো হবে। বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকারের পরিবেশ অনুসারে এটা কমানো হবে। সেটিই আমাদের সিদ্ধান্ত। যে কারণে আমরা আস্তে আস্তে কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি।


জেবি/এজে