প্রাণের মেলার দ্বার উন্মোচন হবে কাল


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৪৫ অপরাহ্ন, ৩১শে জানুয়ারী ২০২৪


প্রাণের মেলার দ্বার উন্মোচন হবে কাল
ফাইল ছবি

‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতি স্মরণে আগামীকাল থেকে ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর দ্বার উন্মোচন হচ্ছে।


বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভাষার মাসের প্রথমদিন বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবমিলিয়ে বরাবরের মতো এবারো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকছে মেলার আয়োজন।


আরও পড়ুন: বইমেলাকে কেন্দ্র করে হামলার হুমকি নেই: ডিএমপি


মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এর আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম।


বাংলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা কবি পিয়াস মজিদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, একাডেমির সচিব মো. হাসান কবীর, জনসংযোগ-তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক সমীর কুমার সরকার, বইমেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের সিএমও মীর নহবত আলী।


কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন।




এবারের মেলায় ৬৩৫ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০ প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫ প্রতিষ্ঠান।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘কালেক্টেড ওয়ার্কস অব শেখ মুজিবুর রহমান : ভলিউম-২’ বইসহ কয়েকটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে ২০২৩ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিতরণ করবেন।


সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের বইমেলা হবে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টিসহ ৩৭টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। গত বছর ৬০১ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বইমেলায় অংশ নিয়েছিল। সে হিসেবে এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। এবারের বইমেলার বিন্যাস আগের মতোই থাকছে। তবে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষত মেট্রোরেল স্টেশন থাকায় ‘বাহির পথ’ খানিকটা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে টিএসসি, দোয়েল চত্বর, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশ ও এমআরটি বেসিং প্ল্যান্টসহ সবমিলে আটটি প্রবেশ ও প্রস্থান পথ রাখা হয়েছে।


এবারের খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা ঘেঁষে এমনভাবে বিন্যাস করা হয়েছে যাতে বইমেলায় আসা পাঠক ও ক্রেতাদের মনোযোগ বিঘ্নিত না হয়। এবারও মন্দির গেটের ডান দিকে বড় পরিসরে শিশুচত্বর রাখা হয়েছে। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর ১৭০টি স্টল বরাদ্দ নিয়ে স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছে গাছতলায়। মেলায় থাকছে নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা।


এবারের বইমেলার নিরাপত্তা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকায় তিন শতাধিক ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। প্রবেশ ও প্রস্থানপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলাপ্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধুলা নিবারণের জন্য পানি ছিটানো এবং প্রতিদিন মশা নিধনের সার্বিক ব্যবস্থা থাকবে।


যথারীতি বইমেলা প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। শুধু ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। প্রতিদিন বিকাল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার হবে। সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বই বিক্রি করবে ২৫ শতাংশ কমিশনে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২১ ফেব্রুয়ারি


আরও পড়ুন: ইজতেমা ঘিরে কোনো ধরনের জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই: র‍্যাব


শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা সকাল ৮টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিশেষ দিবসটি উদযাপনে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। এছাড়া অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালে প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ ও শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে। সেই সঙ্গে শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে।


জেবি/এজে