সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা

পাবনা প্রতিনিধি: চলনবিলের বির্স্তীণ মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষা ফুল। দিগন্ত মাঠ জুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। তাই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে এসেছে মৌচাষিরা। বাণিজ্যিক ভাবে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। 

পাবনার চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, সলঙ্গা ও উল্লাপাড়াসহ ৮টি উপজেলা নিয়ে চলনবিল। বিস্তীর্ণ এই এলাকায় এবার সরিষা আবাদ হয়েছে চোখে পড়ার মতো। তাই প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও মধু সংগ্রহ করতে সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে মৌবাক্স স্থাপন করেছেন,দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ভ্রাম্যমাণ মৌ-চাষিরা। 

এসব বাক্সে পালিত মৌমাছি সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌ-বাক্সে জমা করছে। সেই মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা। মৌ-চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরিষা ফুলের ভালো পরাগায়ন হচ্ছে যার ফলে চলনবিলে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে মৌচাষিরাও বেশ লাভবান হচ্ছে। চলনবিল অঞ্চলে এবছর ১ লক্ষ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। দেড় থেকে দুই হাজার মেট্রিক টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যে প্রায় ১ হাজার মৌ-চাষি বাক্স নিয়ে চলনবিলের বিভিন্ন মাঠে অবস্থান করছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে অস্থায়ী মৌখামার গড়ে তোলেন তারা। পুরো চলনবিল জুড়ে এখন ৫০ হাজারের বেশি মৌমাছির বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি বছর সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে লাভবান হয়ে থাকেন ভ্রাম্যমাণ মৌচাষিরা। তাই এবছরেও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন চলনবিল অঞ্চলে। 

সাতক্ষীরা শ্যামনগর থেকে আসা পাপিয়া মৌমাছি খামারের খামারি তারক কুমার মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এবছর তিনি ১৭০ টি মৌবাক্স স্থাপন করেছেন। যা থেকে ৩৫-৪০ মন মধু উৎপাদন হবে। 

সাতক্ষীরা থেকে আসা মৌ খামারি বেল্লাল ও আবু হাসান জানান, তাদের সংগৃহীত এসব খাঁটি মধু ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

উত্তরবঙ্গ মৌচাষি সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাবে মৌচাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও বিজ্ঞানসম্মত মৌ-বাক্সের অভাব রয়েছে। 

তিনি জানান, এবছর মৌচাষিরা চলনবিল থেকে কোটি কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করবে। চলনবিলের খাঁটি মধু সংগ্রহের জন্য প্রাণ,স্কয়ার,এপিসহ বিভিন্ন ছোট বড় কোম্পানির প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে মধু ক্রয় করতে শুরু করেছে। এবছর প্রায় ২ হাজার মেট্রিকটন মধু সংগ্রহ হবে বলে জানান তিনি। যার বাজার মুল্য হবে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা।