ভিক্ষুকের উৎপাতে অতিষ্ঠ জাবি শিক্ষার্থীরা
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:০০ অপরাহ্ন, ৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বেড়ে গেছে ভিক্ষুকের সংখ্যা। ভিক্ষুকের উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘ্নিত হচ্ছে চরমভাবে। সবাইকে পড়তে হচ্ছে বিব্রতকর অবস্থায়।
সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ভিক্ষুকের আনাগোনা। তাদের সংখ্যাও চোখে চোখে পড়ার মতো। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, কেন্দ্রীয় মসজিদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ,গণিত ও জীববিজ্ঞান অনুষদ, ক্যাফেটোরিয়া, টিএসসি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, নতুন কলা ভবন, রেজিস্টার ভবন, বটতলা ও বিভিন্ন হলের সামনে তাদের দেখা যায়।
আরও পড়ুন: জাবিতে অনলাইনে ভর্তি আবেদন শেষ, আসন প্রতি লড়বে ১০৮ জন
এসব ভিক্ষুকদের অধিকাংশই রোজগার করতে পারেনা, অসুস্থতা, স্বামী কিংবা সন্তানের অসুস্থতার কারম দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা দাবি করেন।
এদিকে এসব ভিক্ষুকের উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ভাসমান ভিক্ষুকদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় অর্ধশতাধিক ভিক্ষুকের আনাগোনাও চোখে পড়ে। তাদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা বেশি। বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির বিভাগ গুলোতে তারা টাকার জন্য ভিড় জমায় তারা, এতে সকল শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই।
(নাম, বিভাগ ও ব্যাচ) বলেন, ক্লাস থেকে বের হয়ে একটু যেতেই ‘স্যার, ভাত খামু, দুইডা ট্যাকা দেন’-এমন আকুতি শুনতে হয় প্রায় সব শিক্ষার্থীকে। টাকা দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বা টিএসসি- যেখানে যান সেখানেই আবার দেখা পাওয়া যাবে একাধিক ভিক্ষুকের মুখ। আবার শুনতে হবে- ‘ভাই, ভাত খামু টাকা দেন কিছু কিনে দেন।’ টিএসসি এলাকায় কিছু খেতে গেলেই পাশ থেকে শুনতে হবে ‘ভাই, একটু দেন না।’ হাত বাড়িয়ে থাকে ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা। খাবার মুখে দিতে যাচ্ছেন, তখনই শুনতে হবে এমন আকুতি।
বিষয়টি নিয়ে তীব্র সন্তোষ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জোরালো পদক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি জোরালো পদক্ষেপ নেয় তাহলে এমনটা হওয়ার কথা নয়। ক্যাম্পাসকে সৌন্দর্যমণ্ডিত রাখতে প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা রাখা উচিত। অতিরিক্ত ভিক্ষুক থাকার ফলে ক্যাম্পাস হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
আরও পড়ুন: জাবিতে নবীনদের গণরুমে তোলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, আমরা যথাসম্ভব পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের মধ্যেই কিছু উস্কানি দাতা আছে, যে একজন মানুষ ভিক্ষা করতে আসছে, অসহায় মানুষ তাকে আপনারা বের করে দিচ্ছেন কেন! সমস্যা কি? এমনকি আমরা কেউ কেউ এইটা লালনও করি। উদাহরণটা এইরকম হতে পারে যে, আমাদের একজন গার্ড ভিক্ষুককে ঠেকাইতে গেল কোনো ডিপার্টমেন্টের সামনে যেমন নতুন কলা, পুরাতন কলা, আমরা ঠেকাই সিকিউরিটি অ্যাসপেক্টে যে লোকটা ভিক্ষা করতে এসে যখন দেখবে কেউ নাই তখন সে কোনো কিছু একটা চুরি করে নিয়ে যাবে। ভিক্ষুককে যখন ঠেকানো হয় তখন আমাদের কোন স্যার বা ম্যাম এসে বলে আহঃ আহাআআআঃ একে তো আমি ডাকছি এই নাও নাও এইটা বলে ভিক্ষুককে সাথে করে নিয়ে যায়। তখন আমাদের কিছু করার থাকেন না। নিরাপত্তাশাখা এগুলো ঠেকানোর জন্য সর্বদা প্রস্তুত। আমরা এখন পর্যন্ত এটাকে তদারকিতে রাখছি এবং চেষ্টা করতেছি এটাকে যতখানি কমানো যায় একবারে জিরো করা যাবে এটা তো বলবো না, তবে যতটা কমানো যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ফিরোজ-উল হাসান বলেন, শুধু ভিক্ষুক কেন! চোরও বেড়ে গেছে। তারা সাহায্য চাইতে এসে এই ডিপার্টমেন্ট সেই ডিপার্টমেন্ট যায় পাঁচশত/এক হাজার টাকা উঠায় তার পর কোন রুম ফাকা পেলে ওই রুম থেকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এগুলো আমাদের জন্য সব থ্রেট। ভিক্ষুক নিয়ে আমরা খুবই কন্সার্ন এটা আমাদের জন্যও বিব্রতকর। আমি সিকিউরিটি অফিসের সাথে কথা বলে দেখি ভিক্ষুক কিভাবে কমানো যায় বা এই পক্রিয়াটা বন্ধ করা যায় কিনা। আমি আলাপ তুলবো ভাবতেছি কারন এই বিষয়টি নিয়ে সবাই কন্সার্ণ।
আরএক্স/