বাসর রাতেই স্বামী জানলেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা!


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০০ অপরাহ্ন, ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪


বাসর রাতেই স্বামী জানলেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা!
প্রতীকী ছবি

পরিনত বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া অনেক তরুন-তরুণীর স্বপ্ন থাকে। সামাজিকভাবে বিয়ে হলে বর ও কনের ব্যাক্তিগত তথ্য অনেক সময় স্পষ্ট থাকে না। বিয়ের পরে জানতে পারেন একে অপরকে। তবে বর কিংবা কনের বিষয় যদি আপত্তিকর কোন তথ্য বিয়ের পর জানাজানি হয় তখনই বিপত্তি ঘটে। তেমনি চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার রিফিউজি কলোনীর মমিন মিয়া নামে যুবকের বিয়ের পর বাসর রাতেই জানলেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। পরে স্থানীয়ভাবে পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে স্ত্রীকে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এই ঘটনার পর কনের বাবাসহ পুরো পরিবার এখন বাড়ি ছাড়া।


গত ২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১ নং বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর সকদিরামপুর গ্রামে কৈ বাড়ীতে মমিন ও স্মৃতির বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে বিষয়টি সামাজিক ভাবে জানাজানি হয় বিয়ের দুদিন পর। 


শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বর ও কনের বাড়ীতে গিয়ে এর সত্যতা নিশ্চিত করা হয়। এছারা ও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. সেলিম।


তিনি বলেন, মেয়ের বাবা শফিক মিজি একজন দিনমজুর। তার ৪ মেয়েএই মেয়ে তৃতীয়। বড় দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। আরও একজন ছোট মেয়ে আছে। স্মৃতির পুরাণ বাজারে বিয়ে হয়েছে জানতে পেরেছি। এরপর মেয়র বাবা আমাকে গত কয়েকদিন আগে বাজারে যাওয়ার পথে জানিয়েছেন তার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তখন তিনি তার বাড়ীর লিটন নামে যুবকের নাম বলেন। এসব বিষয়ে আমি চেয়ারম্যানকে অবগত করতে এবং আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেই।


অন্তঃসত্ত্বা স্মৃতির বাড়ীর লোকজনের অভিযোগ, ওই পরিবারের লোকজন বহুদিন অসামাজিক কার্যকলাপে লীপ্ত। তাদেরকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বললে উল্টো অপবাদ দেয়। তাদের এহেন কান্ডে বাড়ীর অন্য পরিবারগুলোর সম্মান হানি হয়। বাড়ীর নারী-পুরুষ সকলেই ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত যুবকদের এবং স্মৃতি পরিবারের আইনানুগ শাস্তি কামনা করেন। তারা বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।


আরও পড়ুন: চাঁদপুরে গলা কেটে বিউটিশিয়ানকে হত্যা


অন্তঃসত্ত্বা স্মৃতি ঘটনার পর গনমাধ্যমকে বলেন, গত এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ওই বাড়ীর লিটন, ইলিয়াছ মাষ্টার, শিমুল ও এলাকার রনি নামে যুবকরা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। যে কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। 


এদিকে বর মমিনের মা ছালেহা বেগম জানান, তার ছেলে ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে কাজ করেন। ছেলের বিয়ের পূর্বে এমন কোন তথ্যই তাদের জানাছিল না। বিয়ের রাতে ছেলের বউয়ের এমন পরিস্থিতি দেখে তারা বিস্মিত হয়ে পড়েন। পরের দিন তাকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বা নিশ্চিত হন। পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আবাও পরীক্ষা করেন এবং সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে রিপোর্ট পান ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে মেয়ের পরিবার এসে তাকে ওইদিনই নিয়ে যায়।


এদিকে স্মৃতিকে বাড়িতে আনার পর লোকজনের মধ্যে সামালোচনা শুরু হয় এবং বাহিরের লোকজন এসে ঘটনার বিষয়ে জানতে চায়। এক পর্যায়ে বাড়ীর লোকজন তাদেরকে বাড়ী ছেড়ে যেতে বলে। যে কারণে স্মৃতি ও তার পরিবারের সদস্যরা গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে চলে যায়।


আরও পড়ুন: চাঁদপুরের পাঁচ আসনে নৌকার প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ বিজয়


স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী জানান, এই ধরণের ঘটনার বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। আমি লোকমুখে শুনেছি। মেয়ের বাবা দিনমজুর ও বিভিন্ন মাধ্যমে ধর্ষণের বিষয়ে যাদের নাম বলেছে তারা অনেকটা বখাটে ধরণের। কিন্তু ধর্ষণে জাড়িত আছে কিনা বলতে পারব না।


জেবি/এসবি