বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ফেলার প্রতিবাদে জাবি ছাত্রলীগ নেতার আমরণ অনশন


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪


বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ফেলার প্রতিবাদে জাবি ছাত্রলীগ নেতার আমরণ অনশন
জাবি ছাত্রলীগ নেতার আমরণ অনশন। ছবি: জনবাণী

সজীবুর রহমান, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তিসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম।


বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদিতে আমরণ অনশন শুরু করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।


আরও পড়ুন: জাবিতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ে ৩১০কোটি টাকার টেন্ডার


অনশনরত ছাত্রলীগ নেতার উত্থাপিত তিন দফা দাবি হলো, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ৮ দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।  


অনশনের বিষয়ে জানতে চাইলে এনাম বলেন, ঘটনার ৮ দিন হয়ে গেলেও এটার সাথে জড়িতদের উপর কোন ব্যবস্থা নেয় নি প্রশাসন। আমাদের চাপাচাপির পর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এখানে যে দল গ্রাফিতি এঁকেছে তারা অহংকারবোধ থেকে আবার বিবৃতিও দিয়েছে, তাদের পেইজ থেকে প্রচারও করেছে। তাহলে তদন্ত কমিটি কিসের জন্য! এখানে নাটক করা হচ্ছে, অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। 


ছাত্রলীগের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করে তিনি বলেন,  যেখানে বঙ্গবন্ধু ১৮ কোটি বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা। সেখানে তার প্রতিকৃতি মুছে দেয়া হলো, ছাত্রলীগ কি এত দূর্বল নাকি? এটা তো তাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব। এটা একটা প্রহসন। এখানে নাটক করা হচ্ছে।  আমরা বারবার সভাপতি-সম্পাদককে আল্টিমেটাম দিলেও, তারা কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। 


জানা যায়, কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি প্রতিকৃতি আঁকা ছিল। তবে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত নারী ধর্ষণের ঘটনার পর সে স্থানে ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতাকর্মীরা। এ অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন ৪৭ ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অমর্ত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী। 


গ্রাফিতি অঙ্কনের বিষয়টি স্বীকার করে ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জোগাতে এবং নিপীড়কদের হুঁশিয়ার করতে নতুন গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে। প্রায় তিন বছর পার হওয়ায় আগের ছবি অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া পাশের দেয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশাল, স্পষ্ট এবং নান্দনিক চিত্রকর্ম দৃশ্যমান ছিল। চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তিতে এ গ্রাফিতি আকাঁ হয়েছে।’


আরও পড়ুন: জাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাস‌নিক ভবন অব‌রোধ


এ ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আন্তজার্তিক সম্পর্ক  বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফীকে সভাপতি করে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে রয়েছেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শামীম আহমেদ ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দীন। এছাড়া কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-২) এ বি এম আজিজুর রহমান। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। 


এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, সে যে দাবিগুলো জানিয়েছে আমরাও প্রশাসনের কাছে একই দাবি জানিয়েছি। আমরাও অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার দাবি করেছি। প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তারা ব্যবস্থা নিবেন। আমরা প্রশাসনের ব্যবস্থা দেখে পরবর্তী কর্মসূচিতে যাব।  


আরএক্স/