জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা রক্ষায় বিএনসিসি


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:২২ অপরাহ্ন, ২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা রক্ষায় বিএনসিসি
ছবি: প্রতিনিধি

সজীবুর রহমান: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে খাকি ইউনিফর্ম ও লাল ব্যারেডধারী এক দল শৃঙ্খলাবদ্ধ ক্যাডেট  জাবি বিএনসিসি প্লাটুনস। ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধা সামরিক স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে জাবি বিএনসিসি ক্যাডেটরা।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  ২০২৩-২৪ সেশনের  ভর্তি পরীক্ষা গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে চলবে ২৯ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। বিগত বছরগুলোর মতো ভর্তিচ্ছুদের পদাচারণে মুখর ছিল জাবি ক্যাম্পাস। ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধা সামরিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাবি বিএনসিসি প্লাটুনস।


একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সুস্থ-সংস্কৃতি, ভাষা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সৃজনশীলতা বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কোনো বিকল্প নেই। এসব সংগঠন যেকোনো শিক্ষার্থীকে সহনশীল হতে শেখায়। শেখায় নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি করে দলগতভাবে শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে কাজ করার অভ্যাস। পাশাপাশি সৃষ্টি করে একতা ও ভ্রাতৃত্ব। ভর্তি পরীক্ষায় সচারাচর একটা উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। তাই দায়িত্ববোধের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বড় আয়োজনে অংশ হতে পেরে প্রতিটি ক্যাডেটকে গ্রাউন্ডে উৎসাহের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।


জ্ঞান, শৃঙ্খলা, স্বেচ্ছাসেবী এ তিন মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে বিএনসিসির ক্যাডেটবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে সক্রিয়ভাবে দায়িত্বপালন করে। জাবি ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনকে সুষ্ঠু ও সফল করার জন্য বিএনসিসির ক্যাডেটবৃন্দ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের সহয়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তারা। পরিক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের রুম নম্বর খুঁজে বের করে দেওয়াসহ যাবতীয় তথ্য প্রদানে সহায়তা করছে জাবি বিএনসিসি প্লাটুনস। তপ্ত রোদের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বিএনসিসির ক্যাডেটবৃন্দ ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলার সঙ্গে প্রবেশ করানো আবার বের হতে সাহায্য করা, তাদের পরীক্ষার হলরুম দেখিয়ে দেওয়া, খাবার পানির ব্যবস্থা করা ইত্যাদি সেবামূলক কাজ করেছে জাবি বিএনসিসি। ভর্তিচ্ছুদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভর্তি পরীক্ষা হলে প্রবেশ করানো, আহত ও অসুস্থ ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষার কক্ষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া, ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতার জন্য তথ্যসেবা কেন্দ্র পরিচালনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু ও সফল ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সহায়তা করে তারা। এছাড়া দেরি করে আসা শিক্ষার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন জাবি বিএনসিসি ক্যাডেটরা।


আরও পড়ুন: নোবিপ্রবির গবেষণা কার্যক্রম পরিদর্শনে আমেরিকান দূতাবাসের প্রতিনিধি


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি কন্টিনজেন্টের ক্যাডেট ইনচার্জ সার্জেন্ট শফিউজ্জামান শাহীন তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন প্রক্টরের নির্দেশক্রমে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আগত পরীক্ষার্থীদের সাহায্য সহযোগিতায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে জাবি বিএনসিসি প্লাটুনের ক্যাডেটরা। ভর্তি পরীক্ষার দিন আগত পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার আসন বিন্যাস সম্পর্কে ধারণা দেওয়া,পরীক্ষার্থীদের সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করানোসহ সকল ধরনের সহযোগিতা ও সহায়তা করছে তারা। পরীক্ষার্থীরা যেন কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সাথে নিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা, পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো পরীক্ষার্থী অসুস্থ বা দুর্ঘটনার শিকার হলে জরুরি চিকিৎসার জন্য মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে ক্যাডেটদের মধ্যে সততা, দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং নেতৃত্ববোধের গুণাবলি বিকাশ লাভ করে এই ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে। পুরুষ প্লাটুনের পাশাপাশি মহিলা প্লাটুনের ক্যাডেটরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে যা খুবই প্রশংসনীয়।


আরও পড়ুন: জাবিতে 'ডি' ইউনিট ভর্তি ছাত্রীদের পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৭৯ শতাংশ


এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর আন্ডার অফিসার (পিইউও) মো. রাকিবুল হাসান বলেন, আমার ক্যাডেটরা অনেক সুশৃঙ্খল।  তারা শৃঙ্খলার সাথে দায়িত্ব পালন করে। ক্যাডেটরা প্রতিনিয়ত মানুষের সেবার কাজ করছেন। আমাদের স্বেচ্ছায় এই যে শ্রম দেয়াটা এইটা আমরা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবো। শত প্রতিকুল বাধা আসা সত্বেও তারা সহজেই সব কিছু নিয়মমাফিক নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের বিএনসিসি সদস্যরা সুশৃঙ্খল, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ। তারা বরাবরই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে সহযোগিতা করে আসছে। ভবিষ্যতেও বিএনসিসি ক্যাডেটরা বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের কল্যাণে এগিয়ে যাবে।


উল্লেখ্য, জাবি প্লাটুন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) রমনা রেজিমেন্টের চার (ফোর) বিএনসিসি ব্যাটালিয়ন আলফা কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত। জ্ঞান ও শৃঙ্খলা’ এ সংগঠনের মূলমন্ত্র। জাহাঙ্গীরনগর  বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে।


জেবি/এসবি