আটক অপহরণ চক্রের ৩ সদস্যের তথ্য:

‘টাকা নেয়ার আগেই অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পাচার করা হয় মিয়ানমারে’


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:১৩ অপরাহ্ন, ৩রা মার্চ ২০২৪


‘টাকা নেয়ার আগেই অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পাচার করা হয় মিয়ানমারে’
ছবি: প্রতিনিধি

কক্সবাজার সদর থেকে অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রাশিকুল ইসলাম (১৫) কে ফিরে পেতে সংঘবদ্ধ চক্রকে মুক্তিপন হিসেবে দেড় লাখ টাকা দেয়ার পরও ফেরত পেলেন না একজন মা। উল্টো জানাতে পেরেছেন মুক্তিপনের টাকা নেয়ার আগেই এই শিক্ষার্থীকে পাচার করা হয়েছে সংঘবদ্ধ চক্রের মিয়ানমারের সিন্ডিকেট। বর্তমানে এই কিশোর মিয়ানমারেই জিন্মি রয়েছে। এ ঘটনায় র‌্যাব-১৫ এর অভিযানে আটক সংঘবদ্ধ চক্রের ২ রোহিঙ্গা সহ ৩ জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানিয়েছে।


র‌্যাব ১৫ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী এমন বিষয় নিশ্চিত করেছেন।


আরও পড়ুন: ঢাকায় আসছেন মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন


তিনি জানিয়েছেন, শনিবার (২ মার্চ) রাতে উখিয়া উপজেলার থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এই ৩ জনকে আটক করা হয়।


আটকরা হলেন, উখিয়ার ১২ নম্বর ক্যাম্পের আলী হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (৩৪), একই ক্যাম্পের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে আমিন উল্লাহ (১৯) ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের মুহুরী পাড়ার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. তারেক (১৮)।


গত ৫ ফেব্রুয়ারি চকরিয়া ফাঁসিয়াখালি দারুল উলুম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাশিকুল ইসলাম নিখোঁজ হন উল্লেখ করে র‌্যাব ১৫ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, সম্প্রতি নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মা কক্সবাজার সদরের নাছিমা ইয়াসমিন একটি অভিযোগ করেন। যেখানে বলা হয়েছে, চকরিয়া ফাঁসিয়াখালি দারুল উলুম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীতে পড়ূয়া তার বড় ছেলে রাশিকুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে ছুটিতে বাড়ি আসে গত ৫ ফেব্রুয়ারি। 


ওই দিন বিকালে তার ছেলে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ছেলেকে নিকটতম আত্মীয় স্বজন ও সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করেও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে জানায় যে, রাশিকুল ইসলামকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে দুই লক্ষ টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলার হবে। এরপর একাধিক মোবাইল নম্বরে অপহরণকারীদের পর্যায়ক্রমে একাধিকবারে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দেয়া হয়। এরপর পুনরায় আরও দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে চক্রটি। এব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যা থেকে ঢাকার যেসব সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকবে


অভিযোগটি র‌্যাব পাওয়ার পরপরই নানাভাবে কাজ শুরু করে জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, প্রযুক্তি সহ নানা সহযোগিতায় শনিবার রাতে এই ৩ জনকে আটক করা হয়। এসময় অপহরণ কাজে ব্যবহৃত ১টি স্মার্ট ফোন, ১টি বাটন ফোন ও ১টি রবি সীম কার্ড উদ্ধার করা হয়। আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে জানিয়েছে মো. তারেক কৌশলে রাশিকুল ইসলামকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। 


ওখান থেকে পরিকল্পনা মোতাবেক একটি সিএনজি যোগে টেকনাফে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রটির অপর এক সদস্যের নিকট হন্তান্তর করে। ওই ৫ ফেব্রুয়ারি রাতেই এই শিক্ষার্থীকে মিয়ানমারে পাচার করে দেয়া হয়। ওই অপহৃত শিক্ষার্থী এখন মিয়ানমারের জিন্মি।


এব্যাপারে মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করে আটক ৩ জনকে কক্সবাজার সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।


আরএক্স/