হৃদয়ের ব্যাটে বাংলাদেশ পেল বড় সংগ্রহ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২৩ অপরাহ্ন, ১৫ই মার্চ ২০২৪
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সৌম্য সরকার যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, সবাই একপ্রকার ধরেই নিয়েছিল বাংলাদেশ এই ম্যাচে ৩০০ রানের মার্ক স্পর্শ করবে। ব্যাপারটা মোটেও অসম্ভব ছিল না, যতক্ষণ পর্যন্ত ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা দেখা না দিলেন। লঙ্কান শিবিরে এই অলরাউন্ডার এখন সবচেয়ে বড় তারকা। বাংলাদেশের সর্বনাশটাও এই ক্রিকেটারই করেছেন। এরপরেও অবশ্য তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটে ভর করে বড় এক সংগ্রহ পেয়েছে টাইগাররা।
চার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার একাই ধসিয়ে দিয়েছেন তিনি। মাঝের ওভারের সেই বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ খুব একটা টাইগারদের সামনে ছিল না। শেষ অব্দি যদিও লড়ে গেছেন তরুণ ব্যাটার হৃদয়। শুরুতে সৌম্য সরকারের পর ইনিংসের শেষ দিকে হাফসেঞ্চুরি করেছেন তিনি। অল্পের জন্য মিস করে গিয়েছেন ব্যক্তিগত শতক। এদিন দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৬ রানের ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটার।
চট্টগ্রামের রানসহায়ক উইকেটে তার দারুণ এক ইনিংসের গুণে বাংলাদেশের স্কোর ৮ উইকেটের বিনিময়ে ২৮৬ রান করেন। এরসাথে ক্যাপ্টেন শান্ত করেছেন ৪০ রান। একেবারে শেষ পর্যায়ে হৃদয়ের বড় শট আর তাসকিনের ক্যামিওতে টাইগাদের ইনিংসটা হয়েছে আরও কিছুটা বড়। সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে ৬৮ রান এসেছে। শেষদিকে তাসকিন ১০ বলে ১৮ রান করে দলের স্কোর নিয়ে গেছেন ২৮৬ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: টস হেরে ব্যাটিংয়ে টাইগাররা
ইনিংসের প্রথম ওভারেই দলকে বিপদে ফেলে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস। দিলশান মাদুশাঙ্কার বলে দুনিথ ভেল্লালাগের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ডাক মারেন লিটন। আর তাতে কোনো রান করার আগেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর অবশ্য দলকে পথ দেখিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত এবং অন্য ওপেনার সৌম্য সরকার। দুজনের ব্যাট থেকে এসেছিল ৭২ বলে ৭৫ রানের দারুণ এক জুটি। ফিফটির পথেই ছিলেন গত ম্যাচে শতক হাকানো শান্ত। কিন্তু মাদুশাঙ্কার দিনের দ্বিতীয় শিকার হলেন এই ব্যাটার। ৪০ রান করে সাজঘরে ফিরলেন অধিনায়ক।
বিপরীতে থাকা সৌম্য সরকার কিছুটা ধীরগতির ইনিংসই খেলেছেন। দেখেশুনে থিতু হয়ে, তবেই ব্যাট চালিয়েছেন তিনি। ৫২ বলে স্পর্শ করেছেন নিজের ফিফটি। অর্ধশতকের পথে মেরেছেন ৯টি চার। এদিন বড় করতে পারতেন ইনিংসটাকে, তবে সেটা হয়নি অলরাউন্ডার হাসারাঙ্গার কারণে।
এদিন হাসারাঙ্গা ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছিলেন সৌম্য সরকারকে দিয়েই। এদিন ফিফটির পরেও ঠিকই সামনে যাচ্ছিলেন তিনি। বড় স্কোরের পথেই ছিলেন এই ব্যাটার। তবে ফিরে যান হাসারাঙ্গাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। ভাল সেই শটে ছয় পেয়েই যেতেন। কিন্তু মিডউইকেট থেকে বাঁয়ে ছুটে এসে দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে নেন নিয়েছেন দিলশান মাদুশঙ্কা। ৬৬ বলে ৬৮ রান করে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন সৌম্য।
আরও পড়ুন: যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামতে পারে শান্ত বাহিনী
ঠিক এক বল বিরতি দিয়েই আউট হয়েছেন অভিঙ্গ মাহমুদউল্লাহ। নিচু হয়ে গুগলি মিস করে পুরোপুরি স্ট্যাম্পিং হয়েছেন। হাসারাঙ্গার ৩ বলে ২ উইকেট তুলে নেওয়ায় ম্যাচে ফেরে লংকানরা। প্রথম ম্যাচে ফিফটি করা মুশফিক এদিনও ভালো শুরু পেয়েছেন। কিন্তু ২৮ বলে ২৫ রান করে ফিরে যেতে হয়েছে তাকেও হাসারাঙ্গার বলে এলবিডব্লিউ ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিয়ে তার উইকেটটি নিশ্চিত করেছে লঙ্কান বোলার হাসারাঙ্গা। শেষ ভরসা হয়ে থাকা মিরাজকেও বোল্ড করেছেন এই ক্রিকেটারই।
পরবর্তীতে তানজিম সাকিব ভালো সময় দিয়েছেন ক্রিজে। হৃদয় অর্ধশতক পান ৭৪তম বলে। ফলে দলীয় স্কোর দুইশ পেরোয়। তানজিম হাসান সাকিব আউট হওয়ার পরেও খুব বড় স্কোরের সম্ভাবনা দেখেনি বাংলাদেশ দল। কিন্তু শেষ তিন ওভারে বদলে যায় সম্পূর্ণ চিত্রটা। শেষের ১৮ বলে বাংলাদেশ করেছে ৪৪ রান। তবে কিছুটা আক্ষেপ থেকে যাবে হৃদয়ের কল্যাণে। নার্ভাস ৯৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। শতকের খুব কাছে থেকেও ইনিংস শেষ করতে হলো এই ব্যাটারকে।
এমএল/