জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান জন্ম নেয়, যা বলছে ইসলাম
ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮:৪৮ অপরাহ্ন, ৬ই মে ২০২৪
ইসলাম মানব জীবনকে সুন্দর ও সুখময় করে তোলে। আর ইসলাম অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে পারলে পরকালের জন্য রয়েছে অগণিত পুরষ্কার। এ জীবন বিধান মহান আল্লাহ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর অবতীর্ণ করেছেন। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ‘র অবকাশ নেই। এমনকি ইসলামে কুসংস্কারেরও কোনো জায়গা নেই।
আমাদের সমাজে প্রচলিত নানা কুসংস্কার রয়েছে যেগুলো বেশিরভাগই মানুষের সৃষ্টি করা। কোথাও যাত্রা শুরুর আগে কেউ ডাকলে পেছনে তাকানো, হাত থেকে থালা-বাসন পড়ে গেলে বা কেউ হাঁচি দিতে দেখলে অমঙ্গল হয়! আসলে ইসলাম এ ধরনের কুসংস্কারকে সমর্থন করে না।
কুসংস্কারের মধ্যে কমন একটি বিষয় জোড়া কলা খেলে জোড়া সন্তান হয়। শুধু জোড়া কলা কেন! কোনো খাবারেরই জোড়া সন্তান জন্মানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার কোনো ক্ষমতা নেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে ইসলাম যা বলে-
আরও পড়ুন: গোসল ফরজ অবস্থায় কারো মৃত্যু হলে করণীয়
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেছেন,
لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاء يَهَبُ لِمَنْ يَشَاء إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاء الذُّكُورَ - أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا وَيَجْعَلُ مَن يَشَاء عَقِيمًا إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ
অর্থ: নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’য়ালারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন। অথবা তাদের দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যাত্ব করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল। (সুরা শুরা- ৪৯,৫০)
সুতরাং মহান আল্লাহর পবিত্র কালামে এই দুটি আয়াত থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, আসমান-জমিনের সকল কিছুর ক্ষমতা এক মাত্র মহান আল্লাহর হাতে। তিনি চাইলে কয়েক সেকেন্ডেই সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারেন।
অনেকে জোড়া কলা না খেলেও মহান আল্লাহ তাদেরকে জোড়া সন্তান দান করেছেন। তাই এ ধরনের কথাগুলোর ইসলামে কোনো প্রকার ভিত্তি নেই। জোড়া কলা খাওয়ায় জোড়া সন্তান জন্ম হবে- আমাদের সমাজের এমন একটি কুসংষ্কারের রীতি রয়েছে। অমঙ্গল হবে মনে করে অনেকেই এই কুসংস্কারের কারণে শুধু গর্ভকালীন সময়ই নয়, যেকোনো সময়েই জোড়া কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির জন্য নামাজ নাকি দোয়া কোনটি উত্তম?
আবার দেখা যায়, অনেক অবিবাহিত মানুষ তারাও এই কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। তারা ভাবেন, জোড়া কলা খাওয়ার কারণে বিয়ের পরে তাদের ঘরে জন্ম নেবে জন্ম নেবে। কিন্তু এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল হিসেবে অ্যাখায়িত করেছে ইসলাম।
আদিমকালে এমন বেশ কিছু প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিত ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় আজও সেই প্রাচীনকালের ভুল ধারণাগুলোকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে কিছু মানুষ। বিশেষ করে দেখা যায় পরিবারের বয়স্ক মানুষের কাছে এসব কুসংস্কারের কথা শোনা যায়। তাদের কাছেই প্রাচীন এই প্রথায় মূল্যবান।
নবী করিম (স.) বলেন,
ইসলামে অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়। (বুখারি শরিফ)
জেবি/আজুবা