ভেড়ামারায় তহসিলদার শরিফুলের বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যে, অভিযোগ করেও মিলছে না সুরাহা
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, ১১ই মে ২০২৪
কুষ্টিয়া ভেড়ামারার মোকারিমপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের তহসিলদার শরিফুল ইসলামের ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ভুক্তভোগীরা। ইচ্ছে মতো সময় নিয়ে ও অতিরিক্ত টাকা ছাড়া তিনি কোন কাজই করেন না বলে অভিযোগ করেছেন সেবা গ্রহীতারা ।
এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগপত্র দিয়েও তার বিরুদ্ধে কোনরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ভূমি মালিকগণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভূমি কর্মকর্তা "জনবাণী" কে বলেন, দৌলতপুর উপজেলার মৃত জিয়াউল হকের ছেলে তিনি। দৌলতপুর ছাড়াও ভেড়ামারার বিলশুকা ও কুষ্টিয়ার মজমপুরে তার বাড়ি রয়েছে। তিনি ম্যানেজ করে চলেন তাই অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না।"
গত বৃহস্পতিবার ৯ মে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেবা নিতে আসা অধিকাংশ ব্যক্তি এর আগেও একাধিকবার এসেছেন। তহসিলদার শরিফুল ইসলাম সেদিনও তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন। সাংবাদিক দেখে কয়েকজনের কাজ করে দিলেও উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি ছবি তুলে রাখেন।সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেন,"আমি লিখতে পারি, লিখাতেও পারি।"
আরও পড়ুন: ভেড়ামারায় পুড়ল ৫০ বিঘা পানের বরজ
স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা গেছে,"শরিফুলের টার্গেট অসহায় ও দরিদ্র কৃষক। তার নিকট কেউ কাজের জন্যে গেলে নানা অজুহাতে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে বাড়িতে লোক দিয়ে কাজ করাবে বলে অতিরিক্ত টাকা নেয়। যা নেয় তার অর্ধেকেরও কম রশীদ করে। ৩০০ টাকার কমে একটি পর্চাও মেলে না। সে এখানে ৬ বছর ধরে আছে। কিছু বললেই বলে উপরে লোক আছে, কিচ্ছু হবেনা।"
খেমিরদিয়ার থেকে আসা মালেকা খাতুন বলেন,"গত তিনদিন থেকে ঘুরছি এখনো কাজ হয়নি।"
ভুক্তভোগী সামিরুন বেগম বলেন, " ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কাজের জন্য টাকা দিয়েছি এখনো কাজ হয়নি।"
বাহাদুরপুরের কৃষক জমিন মণ্ডল বলেন,"আমি তহসিলদারকে(শরিফুল) জমি খারিজের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছি।আর সে দাখিলা কেটেছে ৭ হাজার ৩০০ টাকার।বাদবাকি পকেটে ভরেছে।"
আরও পড়ুন: ভেড়ামারায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ঈদ সামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান
ফার্নিচার ব্যবসায়ী আসাদুল বলেন, "আমার ভূমি অফিসের পাশে বাড়ি হওয়ায় ৩০০ টাকা নেওয়ার শর্তে ৫ হাজার টাকার কাজ সে ১৬০০ টাকায় করে দিয়েছে।"
বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি থাকার কথা স্বীকার করলেও শরিফুল ইসলাম বলেন,"আমি কোন অনিয়ম-দুর্নীতি করি না। একটি ছেলে দিয়ে বাড়িতে কাজ করায়।তাকেও নিজে বেতন দেয়।"
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেবি/এসবি