আমি হাওয়া ভবনের মতো কোনো ‘খাওয়া ভবন’ করিনি: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ অপরাহ্ন, ১৭ই মে ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি হাওয়া ভবনের মতো কোনো ‘খাওয়া ভবন’ করিনি, যা ব্যবসার জন্য অসুবিধা তৈরি করবে। তিনি বলেন, তার সরকার ব্যবসায়ীদের সব সময় সহযোগিতা করবে। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসুক।
ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা সব সময় দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভাবি। আজকের বাংলাদেশ একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে আরও টেনে নিয়ে যেতে হবে এবং এ দায়িত্ব আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) নিতে হবে।
শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২২তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৬ তারিখে বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটলে মানুষের আর্থিক অবস্থা ভালো হবে। এ লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে এবং বাকি প্রতিবন্ধকতাগুলোও সমাধান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। গ্রাম অঞ্চল পর্যন্ত প্রযুক্তিগত যোগাযোগ তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। বাজার তৈরি করতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, নতুন কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে নিজে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সবসময় তাদের পাশে আছে।
প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্ভাবনী ধারণা কাজে লাগিয়ে রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার ও পণ্য খুঁজে বের করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এ জন্য সরকার সবসময় তাদের পাশে থাকবে। তিনি, আওয়ামী লীগ কখনো কোনো ব্যবসায়ীকে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখে বিচার করে না।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রপতি
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের সময় দেশে মাথাপিছু আয় বাড়েনি। কারণ গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক ধারা ছাড়া কোনো দেশ এগোতে পারে না। রাজনীতিবিদদের জনগণের কাছে ওয়াদা থাকে। আর ক্ষমতা যারা দখল করে তাদের জনগণের কাছে কোনো ওয়াদা থাকে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭৪-এ দুর্ভিক্ষের চিত্র তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকে দেশে-বিদেশে হেয় করা হয়েছে। দেশে ফেরার পর দেখেছি দিনের পর দিন দুর্ভিক্ষ। মানসিক ভারসাম্যহীন যে বাসন্তির ছবি দেখিয়ে এতো বড় ক্ষতি করা হলো, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই বাসন্তির কোনো খবর নেয়নি ক্ষমতা দখলকারীরা। বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়েও বাসন্তিদের কোনো পরিববর্তন আসেনি।
তিনি বলেন, স্বৈরশাসকেরা শুধু ক্ষমতা ভোগ করাই বুঝতো। কে কোন ব্র্যান্ডের জিনিস পড়বে, সেসব নিয়েই তারা ব্যস্ত থাকতো। আসলে স্বৈরশাসকেরা যখন ক্ষমতায় আসে তখন দুর্নীতিই তাদের নীতি হয়ে যায়। জিয়াউর রহমানের সময়ই খেলাপি ঋণের কালচার শুরু হয়। যা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ধীরে ধীরে কমাতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: বিদেশি ঋণের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা-মা-ভাই হারিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করতেই দেশে ফিরেছিলাম। দেশের মানুষের মধ্যেই নিজের হারানো পরিবারকে খুঁজে পেয়েছিলাম। অর্থনীতি বলতে আমি বুঝি শুধু জনগণের কল্যাণ করতে হবে। আমার প্রতিটি কাজের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এমএল/