ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে যাওয়া কে এই মোহাম্মদ মোখবার?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫:৪৩ অপরাহ্ন, ২০শে মে ২০২৪
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ইরান সহ সমগ্র বিশ্বে। রাইসির মৃত্যুর পর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। তার বর্তমান বয়স ৬৮ বছর। দেশটির সংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী তিনিই হতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। নিয়মনুযায়ী তাঁর কাউন্সিলে থাকবেন পার্লামেন্টের স্পিকার এবং বিচার বিভাগের প্রধানসহ তিনজন সদস্য। এই কাউন্সিল প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ৫০ দিনের মধ্যে একটি নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করবে।
মোখবার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর। রাইসির মতো মোখবারও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত। ২০২১ সালে রাইসি প্রেসিডেন্ট হলে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হন মোখবার।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে সারফেস টু সারফেস মিসাইল এবং আরও ড্রোন সরবরাহ করতে একটি চুক্তির প্রয়োজনে গত অক্টোবরে মস্কোতে গিয়েছিল ইরানি কর্মকর্তাদের একটি দল। সে সময় মোখবারও ওই দলের সঙ্গে ছিলেন। দলটিতে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের দুই সিনিয়র কর্মকর্তা এবং সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তাও ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট রাইসি নিহতের ঘটনায় পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা ইরানে
এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বিনিয়োগ তহবিল যেটি সিতাদ নামে পরিচিত, তার প্রধান ছিলেন মোখবার। ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে মোহাম্মদ মোখবার সিতাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা ইরানের অন্যতম শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক কনগ্লোমারেট (একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অধীন থাকা বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী)। মূলত দাতব্যকাজের জন্য এ প্রতিষ্ঠান বিশেষভাবে পরিচিত। সর্বোচ্চ নেতার সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হয়।
মোহাম্মদ মোখবারের নজরদারিতে সিতাদ করোনার নিজস্ব টিকা ‘কোভিরান বারেকাত’ তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়েছিল। যদিও এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই টিকা নেওয়ার পর অনেকেই জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগেছেন। ২০১৩ সালে সেতাদ এবং ৩৭টি কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
সেতাদের পুরো নাম সেতাদ ইজরায়ে ফরমানে হযরতে এমাম বা ইমামের আদেশ কার্যকর করার প্রধান কার্যালয়। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা খামেনির পূর্বসূরি আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির জারি করা একটি আদেশের অধীনে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত এলাকা থেকে ইরানের প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর লাশ উদ্ধার
এর আগে ২০১০ সালে ‘পারমাণবিক বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম’ এর সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের নিষেধাজ্ঞা দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই তালিকায় নাম ছিল মোখবারের নাম। তবে দুই বছর পরে সেই তালিকা থেকে তাঁর নামে সরিয়ে দেওয়া হয়।
রবিবার (১৯ মে) আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে দুটি বাঁধ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এরপর হেলিকপ্টারে চড়ে ইরানের উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ছিলেন। তাবরিজ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি।
জেবি/আজুবা