সিএএ-এর আওতায় ভারতের নাগরিকত্ব পেলেন ৩৬ বাংলাদেশি

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকরের পর প্রথম ধাপে মোট ৩৬ জন বাংলাদেশি ভারতীয় নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন। তাদের মধ্যে ওড়িশা রাজ্যে ৩৫ জন এবং আসাম রাজ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পেয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া এসব মানুষের জন্য বিষয়টি বড় স্বস্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দু।
বিজ্ঞাপন
ওড়িশা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুন নাগরিকদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্বের সনদ তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও স্থায়ী আশ্রয় নিশ্চিত করার একটি মানবিক উদ্যোগ।
২০১৯ সালে প্রণীত সিএএ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা এসব অভিবাসীকে গত বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) নাগরিকত্বের সনদ দেওয়া হয়। এর ফলে ওড়িশায় সিএএ-এর আওতায় নাগরিকত্ব পাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫১ জনে। রাজ্য প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সেখানে আরও প্রায় এক হাজার একশ আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের বিভিন্ন ধাপে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ওড়িশার জনশুমারি দপ্তর জানিয়েছে, সদ্য নাগরিকত্ব পাওয়া ৩৫ জনই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। নাগরিকত্বপ্রাপ্তদের একজন পরিতোষ সরকার বলেন, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর বাংলাদেশে প্রতিশোধমূলক সহিংসতায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক হামলা, জোরপূর্বক ধর্মান্তর ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সে সময় তার পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে ওড়িশার নবরংপুর জেলার ওমরকোটে আশ্রয় নেয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এবার তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন।
এদিকে, আসামে প্রথমবারের মতো নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় একজন বাংলাদেশি নারী ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভ করেছেন। শ্রীভূমি জেলার বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী ওই নারী ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন।
বিজ্ঞাপন
শিলচরের সাবেক ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সদস্য ও আইনজীবী ধর্মানন্দ দেব জানান, চিকিৎসার প্রয়োজনে শিলচরে আসার সময় ওই নারীর পরিচয় হয় স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বিয়ে হয় এবং তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।
তিনি আরও জানান, নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর ৫(১)(সি) ও ৬বি ধারার আওতায় নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ভারতীয় নাগরিককে বিয়ে করেন এবং টানা সাত বছর ভারতে বসবাস করেন, তাহলে নিবন্ধনের মাধ্যমে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়া বিধি অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে প্রবেশ করা অমুসলিমরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। সেই বিধানের আওতায়ই ওড়িশায় নতুন করে এই ৩৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব লাভ করেছেন।








