দেশের ৮৭ উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, ২৯শে মে ২০২৪


দেশের ৮৭ উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে
ফাইল ছবি

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশের ৮৭টি উপজেলায় তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এজন্য নির্বাচনী এলাকায় ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি।


বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত করা হয়েছে বিভিন্ন বাহিনীর আড়াই লাখ ফোর্স।  


আরও পড়ুন: ৩০০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন


ইসি নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ধাপে মোট এক হাজার ১৫২ জন প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।


নির্বাচনে ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে রায়পুরা ও মামলা জটিলতায় যশোর সদরের নির্বাচনের ধাপ পরিবর্তন হয়েছে।


এছাড়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ২২ উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো: বাগেরহাট জেলার শরনখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা; খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া; বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া; পটুয়াখালী জেলার সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকী; পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া; ভোলার লালমোহন, তজুমদ্দিন; ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঠালিয়া; বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি; চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ, কচুয়া ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা। এসব উপজেলায় এখনো নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি।


৮৭ উপজেলায় মোট দুই কোটি আট লাখ ৭৫ হাজার ১৮৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ভোটগ্রহণ করা হবে সাত হাজার ৪৫০টি কেন্দ্রের ৫৪ হাজার ৮৯টি ভোটকক্ষে। আগের রাতে কারচুপি ঠেকাতে সকালে সাত হাজার ৩৬ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। কেবল দুর্গম এলাকায় ৪১৪ কেন্দ্রে ব্যালট গেছে মঙ্গলবার। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ১৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।


ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ২১ জনের ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা ভেদে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি নিয়োজিত রয়েছে। ৩০টি উপজেলায় নিয়োজিত করা হয়েছে অতিরিক্ত ফোর্স।


ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আড়াই লাখের মতো সদস্য ভোটের দায়িত্বে মাঠে রয়েছেন। এদের মধ্যে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি ২৯৯ প্লাটুন, ভোটকেন্দ্রে পুলিশ সদস্য ২৯ হাজার ৯৮৫ জন, স্ট্রাইকিং টিমে পুলিশ সদস্য সাত হাজার ৭৯৪ জন ও মোবাইল টিম হিসেবে পুলিশের তিন হাজার ৩৬৪ জন, র‌্যাবের ২৩০টি টিম ও আনসার সদস্য রয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ৬৬৯ জন।


আরও পড়ুন: ফুলবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে জনগণের ভরসা ডা. কামরুজ্জামান


এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য প্রতি তিন ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতি উপজেলায় নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচারকাজের জন্য রয়েছেন একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।


আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভোটের নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণের দু'দিন পর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।


অন্যদিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ -এ গঠন করা হয়েছে বিশেষ টিম। থাকছে মাঠ পর্যায় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মনিটরিং ও সমন্বয় সেল। যেই সেল যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। ইতোমধ্যে যান চলাচলও সীমিত করা হয়েছে ভোটের এলাকায়।


নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে আগের ধাপগুলোর চেয়ে অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। সহিংসতা করে কেউ পার পাবে না।


আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১৯ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত


তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি কেমন তা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে কিনা সেটা বলা কঠিন। কোন জায়গায় কত ইফেক্ট পড়েছে সেটা বলা যাচ্ছে না।


এ নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমরা আশাকরি না যে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে। আমরা মনে করি সহিংসতা করে কেউ পার পাবে না। কেননা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশি নিয়োগ করা আছে।


গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। ৫ জুন ৫৫ উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে। কিছু উপজেলায় পরবর্তীতে ভোটগ্রহণ করা হবে।


জেবি/এজে