অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে আফগানদের রুপকথা


Janobani

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশ: ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, ২৩শে জুন ২০২৪


অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে আফগানদের রুপকথা
ছবি: ক্রিকইনফো

ইতিহাসটা গড়াই হয়ে গেলো আফগানিস্তানের। বিশ্বকাপের মঞ্চে তারা হারিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। শুরুতে ব্যাটসম্যানরা ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। পরে বল হাতে দুর্দান্ত বোলিংয়ে অজিদের আটকে রাখেন বোলাররা।


রবিবার (২৩ জুন) অ্যান্টিগায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান করে আফগানরা। ওই রান তাড়া করতে নেমে ১২৭ রানে অলআউট হয়ে যায় অজিরা।


আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে অ্যাম্পায়ার হিসেবে যারা থাকছেন


টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতে দারুণ শুরু পায় আফগানিস্তান। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৮ রান তোলে তারা। এরপর এ টুর্নামেন্টে তৃতীয়বারের মতো পঞ্চাশ রানের বেশি উদ্বোধনী জুটি পায় আফগানিস্তান।


সেটিকেও ছাড়িয়ে একশর বেশি রানের জুটি হয় রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইবরাহিম জাদরানের মধ্যে। এক টুর্নামেন্টে তৃতীয়বার এই মাইলফলক ছোয়ার কীর্তি ছিল না আগে, এবার করলেন তারা। এবারের আসরে আর কোনো দলই পায়নি শতরানের উদ্বোধনী জুটি।


দুই ব্যাটারই অবশ্য ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকে থাকেননি। ইনিংসের ৯৫তম বলে গিয়ে প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। স্টয়নিসকে ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন ওয়ার্নারের হাতে। ৪৯ বলে ৪টি চার ও সমান ছক্কায় ৬০ রান করেন গুরবাজ।


পরের ওভারে এসে অ্যাডাম জাম্পা ফেরান আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। ওই ওভারের শেষ বলে ফেরেন আরেক ওপেনার ইবরাহিম জাদরানও। ৪৮ বলে ৬ চারে ৫১ রান করেন তিনি।


এর মধ্যে এবারের আসরে নিজের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক তুলে নেন প্যাট কামিন্স। ১৮তম ওভারের শেষ বলে রশিদ খানকে আউট করেন তিনি। এরপর ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে আউট হন করিম জানাত ও গুলবাদিন নাঈব। আফগানিস্তানের ইনিংস দেড়শ ছাড়িয়ে না যাওয়ার কৃতিত্ব কামিন্সের।


রান তাড়ায় নামা অস্ট্রেলিয়াকে শুরুতেই ধাক্কা দেয় আফগানিস্তান। ইনিংসের তৃতীয় বলে নাভিন উল হক বোল্ড করেন ট্রাভিস হেড, তখনও অবধি কোনো রানই করতে পারেননি তিনি। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ফের উইকেট পান নাভিন।


আক্রমণাত্মক হতে চাওয়া মিচেল মার্শকে আউট করেন এবার। ৯ বলে ১২ রান করে মিড অফে দাঁড়ানো মোহাম্মদ নবীর হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর উইকেটে আসেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, একপ্রান্তে দলকে আগলে রাখেন তিনি। তবে আরেকদিকে ঠিকই উইকেট তুলে নিতে থাকে আফগানরা।


পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ডেভিড ওয়ার্নারকে সাজঘরের পথ দেখান নবী। ৮ বলে ৩ রান করে নূর আহমেদের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। প্রথম ছয় ওভারে ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।


চতুর্থ উইকেটের জন্য ইনিংসের ১১তম ওভার অবধি অপেক্ষা করতে হয় আফগানিস্তান। মার্কোস স্টয়নিসের সঙ্গে গড়ে উঠতে থাকা ম্যাক্সওয়েলের জুটি এবার ভাঙেন গুলবাদিন নাইব। ১৭ বলে ১১ রান করা স্টয়নিস এবার ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।


আরও পড়ুন: বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে যত বিতর্ক


নাইব নিজের পরের ওভারে ফেরান টিম ডেভিডকে। ৪ বলে ২ রান করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় বাধা হয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরিও।


২০২৩ বিশ্বকাপে প্রায় একা হাতে আফগানিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে এবার তাকে ফেরানো যায় খুব বেশি ভয়ঙ্কর হওয়ার আগেই। ৪১ বলে ৫৯ রান করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়ানো নূর আহমেদের হাতে ক্যাচ দেন ম্যাক্সওয়েল।


এই উইকেট তুলে নেওয়ার পর ম্যাচ অনেকটাই হাতে চলে আসে আফগানিস্তানের। শেষ অবধি তারা হয়ে যায় অলআউট। ইতিহাস গড়ে আফগানিস্তান।


জেবি/এজে