প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের পণ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেত শিল্প


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৩১ অপরাহ্ন, ২৫শে জুন ২০২৪


প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের পণ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেত শিল্প
ছবি: প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের পণ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। ফলে এ পেশার সাথে জড়িত শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক অনটনের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। এ পেশায় টিকতে না পারে ভিন্ন পেশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। 


উপজেলার বরমী, কাওরাইদ, রাজাবাড়ি, পার্শ্ববর্তী কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া সহ আরো কয়েকটি এলাকায় বংশ পরস্পরায় বাঁশ ও বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। পুঁজি স্বল্পতা, বাঁশ ও বেতের উৎপাদন হ্রাস, আর্থিক অস্বচ্ছলতা, উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিতে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প এক সময় ব্যাপক প্রচলন ছিল বাশের তৈরি কুলা, ঝুড়ি, চাটাই, হাঁস মুরগির খাচা, ঘাড়ো, বেতের চেয়ার, ধামা, চালুনি, ঢুলি, কলাই, বুরং, হাতপাখা।


আরও পড়ুন: গাজীপুরের ৬ পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর উপহার


কালের বিবর্তনের প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে বরমী ইউনিয়নের খুঁজে খানি গ্রামের জামাল ও আনোয়ার জানান, এক সময় তাদের কাছে ১০/১২জন করে বাঁশ ও বেত শিল্পের কারিগর ছিল। তখনকার দিনে একজন কারিগরের বেতন ছিল প্রতিদিন ২০০/২৫০ টাকা। এখনকার দিনে সে কারিগরদের বেতন দিতে হয় ৫০০/৬০০ টাকা। তাও সিজনের সময় পাওয়া যায় না। তারা আরো জানান, কাঁচামালেরদাম বেড়ে যাওয়ায় বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আগে একটি বাঁশের দাম ছিল ৫০/৬০ টাকা, সেখানে এখন প্রতিটি বাঁশ কিনতে ৩১০-৩৬০ টাকায়। 


আর নির্বিচারে বন জঙ্গল উজাড় হওয়ার ফলে বেত গাছ এখন খুব একটা চোখে পড়ে না। তাই এ শিল্পের সাথে জড়িত পরিবারগুলো আর্থিক অনটনের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলার কালিয়াকৈর এর ফুলবাড়িয়া এলাকার এলাকায় শৈলেন দেবনাথ কয়েকবছর হল পৈত্রিক পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন দিন মজুরী করছেন।ৎ


আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে ভূমি সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন


তিনি বলেন, বেত শিল্পে টাকা বিনিয়োগ করতে খুব একটা লাভ হতো না। এখন কৃষি খেতে কাজ করি, দিন বাদে ৪/৫ শত টাকা রোজগার হয়। ক্ষুদ্র শিল্প ও কুঠির শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গরা আছেন সহজ শর্তে তাদের জন্য ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা হলে এই পেশার কারিগরদেরকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।


শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, প্লাস্টিক ও মেলামাইন স্টিলের পণ্যের দাপটে , বাঁশ ও বেত শিল্পের তৈরি জিনিসপত্র বিলুপ্তের পথে। এই পেশায় কারিগররা ফিরতে চাচ্ছেন না, তারা যেন অন্য পেশায় না যেতে পারে আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা। বাঁঁশ ও বেত শিল্পের বিকল্পে যেসব পণ্য বাজারে এসেছে এসব পণ্য বর্জন করতে হবে। বাঁঁশ ও বেত তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতে হবে। বেশি বেশি বাঁঁশ ও বেত চাষ করে এ শিল্পের প্রতি কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। তাহলেই এই শিল্পকে রক্ষা করা যাবে।


এমএল/