অভ্যন্তরীণ নৌপথ উন্নয়নে বিআইডব্লিউটিএ'র ভূমিকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০১ অপরাহ্ন, ১৬ই জুলাই ২০২৪

দেশের যেসব নৌ রুট বর্তমানে বন্ধ হয়ে যাওয়ার হুমকিতে সেই রুটগুলো সচল করতে ও অভ্যন্তরীণ নৌপথ উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
১৯৬২-৬৭ সালের দিকে এক জরিপে বাংলাদেশে নৌপথ ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই নদীপথের সংখ্যা কমে আসলেও দেশের বর্তমান নৌপথ সচল রাখতে হিমশিম খেতে হয় সংশ্লিষ্টদের। নৌ-পরিবহন খাতে বড় অবদান রাখছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কতৃপক্ষ। একই সাথে নদী তীর রক্ষায় অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে বিআইডব্লিউটিএ। অবৈধ নৌযান আটক ও জরিমানা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থাটি।
অভ্যন্তরীণ নৌপথের নাব্যতা উন্নয়নে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কিলোমিটার নৌপথ নতুন ভাবে সৃষ্টি হয়েছে। ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথে উন্নীতকরণের প্রকল্প চলমান রেখেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় যা বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অব্যাহত রাখতে ৬ হাজার কিলোমিটার নৌ পথের নাব্যতা রক্ষায় ড্রেজিং করতে ৩৮টি ড্রেজার ও ২৩৮টি আনুষঙ্গিক জলযান সংগ্রহ করছে বিআইডব্লিউটিএ যা বাস্তবায়ণ করছে সংস্থাটির ডেজিং বিভাগ। কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সংস্থাটির অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। নৌপথে বিআইডব্লিউটিএ'র বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে।
নদীমাতৃক, কৃষি প্রধান ও প্রাকৃতিক মৎস্যনির্ভর মাতৃভূমিকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে আত্মনির্ভশীল করতে অমূল্য জলসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার অনস্বীকার্য। সে জন্য নদ-নদী সচল রাখা, নৌ-পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও উন্মুক্ত জলসম্পদ রক্ষা করা আবশ্যক। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনসহ নানা ঝুঁকি মোকাবেলায় শত ব্যস্ততা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নদী খননে মনোযোগী ছিলেন।
আরও পড়ুন: নৌযান চলাচলে বিআইডব্লিউটিএ'র নির্দেশনা
২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার চারপাশের নদীর দূষণরোধ ও নাব্যতা রক্ষার লক্ষ্যে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্তবিষয়ক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নদী ডেজিং করতে হবে এবং নাব্যতা বজায় রাখতে হবে। নদী ভাঙন রোধকল্পে আমাদের ডেজিং করতে হবে। দেশ বাঁচাতে হলে নদী বাঁচাতে হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কাজ করছে একটি মহল। যার ফলশ্রুতিতে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সামাজিক ভাবে তাঁদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: নৌপ্রতিমন্ত্রীর সাথে বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ
জানা যায়, যে সকল কর্মকর্তা সততা ও নিষ্ঠার সাথে বিআইডব্লিউটিএ’র ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখতে নিরলস ভাবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন উল্টো তাদেরকেই বিভিন্নভাবে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে।
বিআইডব্লিউটিএ-তে সরকারের নানামুখী উন্নয়ন বাস্তবায়নে সংস্থা প্রধানের নেতৃত্বে সকল পর্যায়ের কর্মতর্তা-কর্মচারীগণ নিরলস কাজ করছে যাচ্ছে। তাদের কর্মকাণ্ডের ফলে বিআইডব্লিউটিএ'র অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে।
নৌপথে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি ৫৫ ধরনের মালবাহী নৌযান-রুট পারমিটের আওতায় এসেছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নৌপথে ৪১ কোটি মেট্রিক টন পণ্য এবং ৩১৫ কোটি যাত্রী যাতায়াত করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত নৌ-ট্রান্সশিপমেন্ট চালু করে। কোলকাতা-আশুগঞ্জ-ত্রিপুরা নৌপথ ও সড়কপথে পণ্য পরিবহন এবং পর্যটন ব্যবস্থা প্রবর্তন হয়েছে।
অন্যদিকে সরকারের সেবামূলক কাজে নদী খনন, নদী শাসনসহ প্রবাহমান নদীর ধারা সচল রাখতে সংস্থাটির সকল বিভাগ একযোগে কাজ চলমান রেখেছে যার ফলে আগের থেকে নৌপথে নৌযান চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একই সাথে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বিআইডব্লিউটিএ।
চলমান এ ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল অগ্রণি ভূমিকা পালন করছে বলে জানা যায়।
জেবি/এসবি