বাড়িতে বাচ্চা থাকলে ভুলেও আনবেন না যেসব গাছ

গাছ মানুষের বন্ধু। গাছ আমাদের নানাভাবে উপকার করে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, অক্সিজেন, ওষুধ ইত্যাদি আমরা গাছ থেকে পাই। গাছের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। প্রাণী জগতের অস্তিত্ব রক্ষায় উদ্ভিদের বিকল্প নেই। গাছ আছে বলেই পৃথিবী আজও বসবাসের যোগ্য। 

ইট-কাঠ-পাথরের শহরে  আমাদের নাগরিক জীবন যেন ছোট পরিসরেই আটকে গিয়েছে। প্রকৃতির স্পর্শ সেখানে থাকে না বললেই চলে। তাই অনেকেই গাছ দিয়ে সাজাতে চান ছোট্ট ফ্ল্যাটের এক চিলতে বারান্দা। টবের মধ্যে গাছ লাগিয়ে পুরোদমে চলে জীবনকে সজীব করার প্রচেষ্টা । আবার ড্রয়িং রুমে পাতাবাহার ইন্ডোর ও মানিপ্ল্যান্ট লাগিয়ে ঘর সাজাতেও ভালো লাগে। কিন্তু ইচ্ছে হলেই যে কোনও গাছ লাগানো কিন্তু মোটেও বুদ্ধিমানের নয়। বিশেষ করে বাড়িতে যদি বাচ্চা থাকে, তাহলে কিছু গাছ এড়িয়ে চলাই উচিত। না হলে হতে পারে ভয়ানক বিপদ।

আরও পড়ুন: প্রতিদিন অফিসে যেতে দেরি করেন?

কি কি সেই গাছের নাম? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ক্যালাডিয়াম

লাল, গোলাপি অথবা সাদা পাতার ক্যালাডিয়াম দিয়ে ঘর অথবা বারান্দার বাগান সাজিয়ে রাখালে সুন্দর দেখায়। তবে এই গাছটি সুন্দর হলেও তা সম্পর্কে উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা সাবধান করেছেন। দীর্ঘস্থায়ী বিষ আছে এই গাছের পাতায়। আর শিশুরা এই গাছের পাতা মুখে দিলে ভুগতে পারে দীর্ঘস্থায়ী পেট ব্যথায়। শুধু তাই নয়, পোষ্যদের জন্যও সমান ক্ষতিকর এই গাছটি। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে এক ধরনের স্থায়ী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়। যার ফলে মুখ, জিহ্বা ও ঠোঁটে জ্বালাপোড়া, গলা ব্যথা, গিলতে সমস্যা এবং শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। 

অ্যারোহেড গাছ

উজ্জ্বল সবুজ রংয়ের অ্যারোহেড গাছ দেখতে খুব সুন্দর। এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে শিশু ও পোষা প্রাণীর গলা ও মাথাব্যথা এবং শ্বসনতন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া শিশু ও পোষা প্রাণীর পেটেব্যথা ও বমিভাবও দেখা দিতে পারে। এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে সরাসরি আক্রান্ত হতে পারেন বৃদ্ধরাও। 

করবী গাছ

হলুদ বা গোলাপী করবী গাছের বীজ সহ প্রতিটি অংশই বিষাক্ত। এই গাছের কোনও অংশ খেয়ে ফেললে ছোট বড় নির্বিশেষে মাথা ঘোরা, বমি, ডায়রিয়া, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, কোমা এমনকী মৃত্যুও হতে পারে। 

আরও পড়ুন: চুল কেন পড়ে? থামাবেন যেভাবে

ফিলোডেনড্রন বা মানিপ্ল্যান্ট

মানিপ্ল্যান্ট দিয়ে ঘর সাজানোর অভ্যাস অনেকেরই আছে। অথচ আপাতনিরীহ মানিপ্ল্যান্ট গাছের সংস্পর্শে এলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। গবেষকদের দাবি, বিরল এক ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে ত্বকে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এছাড়া গলা ও মাথাব্যথা, শ্বসনতন্ত্রে সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বাড়িতে এই গাছ অতিরিক্ত থাকলে এর প্রভাবে স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা সহ অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। তাই শিশু, বৃদ্ধ ও পোষা প্রাণীদের এই গাছ থেকে দূরে রাখা দরকার।

ডায়ফেনবাসিয়া

অতি পরিচিত ডায়ফেনবাসিয়া গাছও অত্যন্ত বিষাক্ত। এর পাতা ছোটো বড় যে কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। এটি পোষ্যদের জন্যেও খুব ক্ষতিকর। কৃষিবিজ্ঞানীদের মতে, এই গাছের পাতায় থাকে ক্যালসিয়াম অক্সালেট নামের এক উপাদান, যা মানুষের কিংবা পোষ্যদের জন্য ক্ষতিকর। 

জেবি/আজুবা