সেন্টমার্টিনগামি ট্রলার ও স্পিডবোট ডুবি:
নিখোঁজ ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার, নিহত একজনের ভাইকে মারধরের অভিযোগ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, ২৬শে জুলাই ২০২৪
কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ট্রলার ও স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৩ জনের মরদেহ টেকনাফের বঙ্গোপসাগরের উপকুলে ভেসে এসেছে।
ইতোমধ্যে শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় ২ জনের এবং বিকাল ৪ টার দিকে আরও একজনের মরদেহ ভেসে আসে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি।
নিহতরা হলেন, মৃত আজম আলীর ছেলে মো. ইসমাঈল (২৮), মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ফাহাদ (৩০) ও ছলিম উল্লার ছেলে নুর মোহাম্মদ সৈকত (২৭)। তারা সবাই সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: কুতুবদিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করলেন এমপি
স্থানীয়দের বরাতে ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের শাহপরীর দ্বীপের অদূরে বুধবার (২৪ জুলাই) ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। পরে কিছু লোক ট্রলার ও স্পিডবোট নিয়ে তাদের উদ্ধার করতে যায়। এতে ঢেউয়ের ধাক্কায় একটি স্পিডবোট ডুবে যায়। এরপর থেকে এসব ঘটনায় ৩ জন নিঁখোজ ছিল। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দুইজনের এবং বিকালে আরও একজনের মরদেহ ভেসে আসলে উদ্ধার করা হয়। মরদেহগুলো উদ্ধার করে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, নিহত মোহাম্মদ ফাহাদের ভাই মোহাম্মদ ফায়সালকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে।
মোহাম্মদ ফায়সাল জানিয়েছেন, সকালে টেকনাফের উপকুলে তার ভাই ফাহাদের মরদেহ ভেসে আসার খবর পেয়ে তিনি সেন্টমার্টিন ঘাটে এসে টেকনাফে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় কোস্টগার্ডের ৫ জন সদস্য এসে তাকে ব্যাপক মারধর করে রক্তাক্ত করেছে। মরদেহ উদ্ধার তৎপরতার জের ধরে কোস্টগার্ডের সদস্যের সাথে দ্বীপবাসির বিরোধের জের ধরে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সাগরে নিখোঁজ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
ফয়সাল জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা শেষে ভাইয়ের দাফন নিয়ে ব্যস্থ আছেন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য টেকনাফ বা কক্সবাজার যাবেন।
এর আগে বুধবার দুপুর আড়াই টার দিকে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের গোলারচর মোহনায় এফবি সাদ্দাম নামের একটি ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এসময় ট্রলারে ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে উদ্ধার করা হয়। সাধারণ জেলেরা ও বাসিন্দারা সেন্টমার্টিন ঘাট থেকে যাওয়া কয়েকটি ফিশিং ট্রলার, সার্ভিস বোট ও স্পীড বোট যোগে গিয়ে এই উদ্ধার তৎপরতা চালায়। এসময় ডুবে যায় একটি স্পীড বোট।
সেন্টমার্টিন থেকে কয়েকজন বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছিলেন, ট্রলার ডুবির পর কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হলে তারা উদ্ধার তৎপরতায় সাগরে নামেননি। দ্বীপবাসি সার্ভিস বোট ও ফিশিং ট্রলারে উদ্ধারে যাওয়ার আগেই বাঁধা দেন। কিন্তু ১১ জনকে উদ্ধার করে ঘাটে ফিরলে কোস্টগার্ড সদস্য তাদের সাথে ছবি তোলার চেষ্টা করে। এতে দ্বীপবাসির সাথে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত লোকজন কোস্টগার্ডের চৌকি হামলা করে ভাংচুর করে। এসময় ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে কোস্টগার্ড। এতে গুলিবিদ্ধ হন দ্বীপের কোনাপাড়ার করিম উল্লাহর ছেলে হামিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন দ্বীপের কোন দোকানপাট খোলা হয়নি।
আরও পড়ুন: সাগরে নিখোঁজ ৩: থমথমে সেন্টমার্টিন, বন্ধ দোকানপাট
এব্যাপারে কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশনের ইনচার্জের সাথে গত ৩ দিন ধরে বার বার চেষ্টা করা হলেও তিনি সরকারি ফোন নম্বরটি রিসিভ করেননি।
এমএল/