যেমন ছিল রাসূল সা.-এর রাতের ইবাদত
ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৪২ অপরাহ্ন, ১লা আগস্ট ২০২৪
হযরত ইমাম আহমদ রহ. সাঈদ ইবনে হিশাম রা. থেকে বর্ণনা করেন, সাঈদ ইবনে হিশাম রা. একবার ইবাদত ও আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে জীবন কাটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা পষোণ করলেন। এই ইচ্ছা থেকে নিজের পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিলেন। বিক্রয় লব্ধ অর্থ দিয়ে তিনি যুদ্ধ সরঞ্জাম কিনে আজীবন আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে রোম সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জিহাদে বের হওয়ার মনস্থ করলেন।
আরও পড়ুন: অন্যায়ভাবে হত্যা করা নিয়ে কী বলছে ইসলাম?
তিনি নিজ গোত্রের মানুষের কাছে মনের কথা ব্যক্ত করলেন। শুনে তখন তারা বললেন একদা আল্লাহর রাসূল সা.-এর জীবদ্দশায় আমাদের ছয়জন ব্যক্তি এমন ইচ্ছা পোষণ করলে তখন রাসূল পাক সা. তাদের বারণ করে বলেছিলেন, আমার মধ্যেই কি তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ নেই? আর তখন এই কথা শুনে সাঈদ ইবনে হিশাম রহ. নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন।
একদা তিনি ইবনে আব্বাস রা.-এর কাছে যেয়ে বিতর নামাজ সম্পর্কে জানতে চাইলেন। ইবনে আব্বাস রা. তাঁকে আম্মাজান আয়েশা রা.-এর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন।
তিনি আয়েশা রা.-এর কাছে গিয়ে বললেন, হে উম্মুল মুমিনীন! রাসূল সা. এর চরিত্র কেমন ছিল? উত্তরে আয়েশা রা. বললেন, তুমি কি কোরআন পড়ো না? এই কোরআনই ছিল রাসূল সা.-এর চরিত্র।
আরও পড়ুন: ঈমান রক্ষা করতে যে দোয়া পড়বেন
এরপর তিনি রাসূল সা.-এর তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে আয়েশা রা. বলেন, সূরা মুযযাম্মিলের শুরুতে আল্লাহ তায়ালা তাহাজ্জুদ নামাজ ফরজ করেছিলেন। ফলে রাসূল সা. ও সাহাবিরা পুরো এক বছর রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন। এই কারণে তাদের পা ফুলে যেত। দীর্ঘ ১২ মাস এভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পর আল্লাহ তায়ালা সূরার শেষের অংশ নাজিল করে তাহাজ্জুদ নামাজ নফল করে দেন।
তারপর রাসূল কারিম সা.-এর বিতর নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে হযরত আয়েশা রা. বলেন, আমরা (রাসূল সা.-এর স্ত্রীরা) রাতেবেলা রাসূল পাক সা.-এর জন্য মিসওয়াক এবং অজুর পানি প্রস্তুত করে রাখতাম। সময়মতো তিনি ঘুম থেকে উঠে মিসওয়াক এবং অজুসেরে একসঙ্গে ১১ রাকাত নামাজ পড়তেন। তারপর আল্লাহ তালার জিকির করে দোয়া করতেন।
আরও পড়ুন: সুন্নতে খতনার সঠিক বয়স কত?
এরপর রাসূল পাক সা. যখন বৃদ্ধ হয়ে গেলেন, তিনার শরীর মুবারক ভারি হয়ে গেল, আর তখন তিনি নয় রাকাত নামাজ পড়তেন। রাসূল পাক সা.-এর অভ্যাস ছিল যে তিনি কোনো নামাজ একবার শুরু করলে তা নিয়মিত পড়তেন। (শুরু করে কিছুদিন পর তা আবার ছেড়ে দিতেন না।)
কোনো সময় ব্যস্ততা, ঘুম বা রোগ ব্যাধির কারণে নামাজ পড়তে না পারলে তখন তিনি দিনের বেলায় ১২ রাকাত পড়ে নিতেন। তিনি আরও বলেন, রাসূল পাক সা. এক রাতে পুরো কোরআন খতম করেছেন বা রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে ধারাবাহিক ভাবে একমাস রোজা রেখেছেন বলে আমার জানা নেই। (মুসলিম, তাফসিরে ইবনে কাসির, ১১/৩১১)
এসডি/