অন্যায়ভাবে হত্যা করা নিয়ে কী বলছে ইসলাম?


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪:৩৬ অপরাহ্ন, ২রা আগস্ট ২০২৪


অন্যায়ভাবে হত্যা করা নিয়ে কী বলছে ইসলাম?
প্রতিকি ছবি

হজরত দাউদ আ. ছিলেন বনী ইসরাঈলের নবী। তার উপর মহান আল্লাহ তায়ালা আসমানী কিতাব যাবুর নাজিল করেছিলেন। হযরত দাউদ আ. সমুদ্রোপকূল অধিবাসী বনী ইসরাঈল সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন । আর তাদের  মাছ শিকার জীবিকা নির্বাহের মূল উৎস ছিল । কিন্তু তাদের জন্য শনিবারে মাছ শিকার করা নিষিদ্ধ ছিল। 


আরও পড়ুন: যেমন ছিল রাসূল সা.-এর রাতের ইবাদত


কারণ, হযরত দাউদ আ.-এর কণ্ঠ সবাইকেেই আত্মহারা করতো। শনিবার তাদের ধর্মীয়  বিধি-বিধান পালন এবং ইবাদতের দিন ছিল। হযরত দাউদ আ. এই দিনে যাবুর কিতাব পাঠ করতেন। 


তার সুমধুর কণ্ঠে আত্মহারা হয়ে মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য জীবজন্তুও যাবুর কিতাব পাঠ শুনতে ভিড় জমাতো। নদীর মাছও তীরে ভিড়ে যাবুর পাঠ শ্রবণ করত। এসবের এজন্য শনিবারে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।


শনিবারে মাছ শিকার নিষিদ্ধের নির্দেশের পর হযরত দাউদ আ.-এর সম্প্রদায়ের লোকেরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। 

তাদের মধ্যে  একদলে ছিল সৎ ও বিজ্ঞজনেরা। তারা হযরত দাউদ অ. আদেশ পালন করতো এবং শনিবারে মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতো।


অপর একটি দল ছিল অবাধ্য। তারা হযরত দাউদ আ.-এর সেই আদেশ অমান্য করলো। তারা শনিবারে  মাছ শিকার না করলেও জাল দিয়ে আটকে ফেলত এবং পরের দিন রবিবারে সেসব মাছ ধরত। 


আরও পড়ুন: সুন্নতে খতনার সঠিক বয়স কত?

 

তখন সৎলোকেরা তাদের এসব অপকর্মে বাধা দিলেন। কিন্ত তারা তাদের এসব অসৎ কাজ থেকে বিরত হলো না। পর্বতিতে  সৎ লোকেরা অবাধ্যদের সঙ্গে তাদের যাবতীয় যত সম্পর্ক ছিল সব ছিন্ন করে পৃথক হয়ে গেলেন। এমনকি তাদের বাসস্থানও দুই ভাগে বিভক্ত করে নিলেন। একভাগে অবাধ্যরা বসবাস করতো আর অন্যে এক ভাগে সৎ ও বিজ্ঞজনেরা বাস করতেন। 


মহান আল্লাহ তায়ালা অবাধ্যদের এ সীমা লঙ্ঘনে ক্রোধান্বিত হলেন। তাদের ওপর লানত বর্ষণ করলেন। তারা মহান আল্লাহর ক্রোধে বানরে রূপান্তরিত হয়ে গেলো।


হযরত কাতাদাহ রহ. বলেন, তাদের যুবকরা বানরে ও বৃদ্ধরা শুকরে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। রূপান্তরিত বানররা তাদের নিজ নিজ আত্মীয় স্বজনকে চিনতো এবং তাদের কাছে এসে অঝোরে অশ্রু বিসর্জন দিত। 


 হটাৎ একদিন সৎ লোকেরা অবাধ্যদের বস্তিতে অস্বাভাবিক নীরবতা লক্ষ্য করলেন। এরপর সেখানে পৌঁছে দেখলেন যে, সবাই বিকৃত হয়ে বানরে পরিনিত হয়ে গেছে। 


 পবিএ হাদিস শরিফে এসেছে, এক সাহাবি একবার রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের যুগের বানর ও শুকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত ইহুদি সম্প্রদায়? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ্ তায়ালা যখন কোন সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকেন তখন তিনি তাদের অবশিষ্ট বংশধরদের কোনো কিছুই রাখেন না। মূলত বানর ও শূকর পৃথিবীতে তাদের পূর্বেও ছিল। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৬৩)


আরও পড়ুন: অন্যায়ভাবে হত্যা করা নিয়ে কী বলছে ইসলাম?


পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে বলেছেন—

وَ لَقَدۡ عَلِمۡتُمُ الَّذِیۡنَ اعۡتَدَوۡا مِنۡكُمۡ فِی السَّبۡتِ فَقُلۡنَا لَهُمۡ كُوۡنُوۡا قِرَدَۃً خٰسِئِیۡنَ


আর তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সীমালঙ্ঘন করেছিল তাদেরকে তোমরা নিশ্চিতভাবে জেনেছিলে। ফলে আমি তাদেরকে বলেছিলাম, তোমরা ঘৃণিত বানরে পরিণত হও। (সূরা বাকারা, আয়াত : ৬৫)


এসডি/