কুবিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে শিক্ষার্থীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:৫৬ অপরাহ্ন, ৪ঠা আগস্ট ২০২৪
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদি হাসানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৩ আগস্ট) একটি বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতির এই দুজনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস, পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রমে বয়কট ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: কুবিতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন
বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষক নেতা হওয়া সত্ত্বেও উপর্যুক্ত দুইজন ব্যক্তি দায়সারা ও অস্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনা এমনকি সাম্প্রতিক নারকীয় হত্যাকান্ডের পরও শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়াবেন না বলে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন।
আরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে, যখন শিক্ষক সমিতির অন্যান্য শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানানোর মনোভাব প্রকাশ করেছেন, তখন এই দুইজন তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এরা তাদের বাগড়ম্বর, গলাবাজি এবং মেরুদণ্ডহীনতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত। দেশের উত্তাল পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যখন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়ে উঠছেন, তখনও এই দুই নেতা তাদের পূর্ববর্তী নোংরা রাজনীতিতে নিজেদের লিপ্ত রেখেছেন। যেসব বিবেকবান শিক্ষক নিপীড়ন বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিতে চান, তাদেরও দমিয়ে রেখেছেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গতকাল আবু তাহের স্যার সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে জানান যে, ‘শিক্ষক সমিতি আন্দোলনে যোগদানের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষক সমিতির কেউ যদি দাঁড়াতে চায় তাহলে সে তো শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে দাঁড়াতে পারবে না।’ এরকম অর্বাচীন বক্তব্য বর্তমান সময়ে কেবল মেরুদণ্ডহীন লোকের পক্ষেই দেয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: কুবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা তৃতীয় দিনের কর্মবিরতি
আন্দোলনে অংশগ্রহণের বিপরীতে তার এমন বক্তব্যে আমরা প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান স্যার শিক্ষার্থীদের পক্ষে একটি কথা না বললেও একটি রাজনৈতিক দলের তোষামোদ করে চলেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পোস্টে আন্দোলনে অংশ নেওয়া তো দূরে থাক, নিপীড়নের পক্ষে মৃদু ন্যায্যতাও তৈরি করছেন, যা আমাদের পীড়া দেয়। সুতরাং, শিক্ষক সমিতির অন্যান্য শিক্ষকরা যদি এই মেরুদণ্ডহীন নেতাদের বর্জন নাও করেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের বয়কট ঘোষণা করছি। এই দুইজন ও তাদের অনুসারী শিক্ষকরা যদি ক্লাসে আসার কোনো প্রকার চেষ্টা করেন তবে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাস বয়কট করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা যেহেতু সবাই মৃত্যুবরণ করেছেন, সেজন্য শিক্ষার্থীরাই এখন নিরাপদ বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে সুদক্ষ প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। আবু তাহের ও মেহেদি হাসানকে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে ও কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক বিবেকবান শিক্ষকদের বাধা প্রদান করার অভিযোগে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।
আরও পড়ুন: কুবিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মোড় ঘুড়ানোর চেষ্টায় ছাত্রলীগ
পাশাপাশি শিক্ষক সমিতির কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। শীঘ্রই প্রশাসন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা করবেন এবং বিবেকবান শিক্ষকরা সমিতির নেতৃত্বের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। আমরা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী, এই মর্মে ঘোষণা করছি যে আমরা আমাদের দাবির প্রতি অটল থাকব এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’
এসডি/